যমুনা নদীর পশ্চিম পাড়ের জালালপুর ইউনিয়নে পানি বন্দী মানুষদের মধ্যে ত্রাণের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে। দিন যাচ্ছে বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহতা বেড়েই চলছে। নৌ যোগাযোগই এ অঞ্চলের মানুষের একমাত্র ভরসা। ঘরের মধ্যে মাঁচা করে অথবা উচু খোলা ওয়াবদা বাঁধে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে বানভাসী মানুষ।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, শাহজাদপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী এনায়েতপুর থানাধীন জালালপুর ইউনিয়নের পূর্বাঞ্চল যমুনার নদীর ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ বাঐখোলা, কুঠিপাড়া, ভেকা গ্রামের প্রায় এক হাজার মানুষের বাড়ি ঘর নদীতে চলে গেছ। তারা অন্যের বাড়িতে অথবা খোলা আকাশের নিচে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে।
প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে যমুনায় পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় যমুনা অববাহিকার এ ইউনিয়নের জালালপুর, পাকুরতলা, দ্বাদশপট্টি, পাড়ামোহন পুরসহ গাছপাড়া, নোসনাপাড়া ও টোকপাড়া এলাকা প্লাবিত হয়। এসব গ্রামের অধিকাংশ মানুষ তাঁতের কাজ অথবা দিনমুজুরী করে জীবন যাপন করেন। কিন্ত বন্যার পানিতে বসত-ভিটা ও রাস্তা-ঘাট তলিয়ে যাওয়ায় ঘরবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন এ এলাকার অন্তত সাড়ে ৫ হাজার মানুষ।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাঐখোলা, কুঠিপাড়া ও ঘাটাবাড়ি এলাকায় পানি বন্দী এসব মানুষের বাড়ি বাড়ি গিয়ে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে সরকারী ভাবে বরাদ্দকৃত ২ মেট্রিক টন চাল বিতরণ করতে গিয়ে বিরম্বনায় পড়েন জনপ্রতিনিধিরা।
এসময় ত্রাণের নৌকা দেখে বানভাসী শত শত মানুষ কেউ সাতরিয়ে অথবা ভেলা-নৌকা নিয়ে ত্রাণের আশায় হাজির হয় জালালপুর বাজার সংলগ্ন ঘাটে। সেখানে প্রায় শতাধিক মানুষের মধ্যে ত্রাণের চাল বিতরণ করা হয়। বিতরণের একপর্যায়ে ত্রাণের চাল শেষ হলেও পানি বন্দী মানুষের লাইন শেষ না হওয়ায় অনেকেই খালি হাতে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে।
এবিষয়ে জালালপুর ইউপি চেয়ারম্যান হাজী সুলতান মাহমুদ বলেন, জালালপুরে নদী ভাঙন ও বন্যায় প্রায় সাড়ে ৬ হাজার মানুষ পানি বন্দী অবস্থায় আছে। এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। এদের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে খেয়ে না খেয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এদের জন্য প্রতিদিন প্রায় ৫টন করে চাউল প্রয়োজন। এ পর্যন্ত আমরা ৪ মেট্রিক টন চাল পেয়েছি। এলাকার বানভাসীর তুলনায় বরাদ্দ অপ্রতুল। যেকারনে অনেক পানি বন্দী পরিবারের হাতে আমরা ত্রাণ পৌছাতে পারি নাই। দ্রুত বরাদ্দ বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছি।
এবিষয়ে শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আলিমুন রাজীব বলেন, বন্যা মেকাবেলায় ত্রাণ সহায়তার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। লিখিত ভাবে বিষয়টি জালানে ওই এলাকার জন্য আমরা অবশ্যই অতিরিক্ত ত্রাণ সহায়তা পাঠাব।