মাঠে গড়াচ্ছে বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের মধ্যকার তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ। কাল চট্টগ্রামে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজের প্রথম ম্যাচ। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সকাল ১১ টায় শুরু হবে ম্যাচটি।
এই সিরিজে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মোট তিনটা ওয়ানডে খেলবে টাইগাররা। সবগুলো ম্যাচই হবে চট্টগ্রামে। ম্যাচের আগের দিন আজ মঙ্গলবার সকালে অনুশীলনে নামে বাংলাদেশ দল। পরে বিকেলে অনুশীলনে মাঠে নামে আফগানিস্তান দল।
এদিকে দলের সঙ্গে প্রধান কোচ রাসেল ডমিঙ্গো যোগ দিলেও করোনাভাইরাস পজিটিভ হওয়ায় চট্টগ্রামে যেতে পারেননি ব্যাটিং পরামর্শক জেমি সিডন্স।
রাশিদ-মুজিব স্পিন জুটি নিয়ে সতর্ক থাকলেও এটা বাড়তি কোন চাপ নয়, বলেছেন টাইগার অধিনায়ক তামিম ইকবাল। অন্যদিকে আফগানরাও জয় দিয়ে সিরিজ শুরুর ব্যাপারে আশাবাদী।
সাত মাস পর টিম টাইগার্সের ওয়ানডে মিশন। সিরিজটা যেখানে শেষ করেছিল, ওখান থেকে নতুন শুরুর চ্যালেঞ্জ তামিমদের। স্কোয়াডে সিনিয়রদের সঙ্গে আছেন ওয়ানডে না খেলা চার তরুণ ক্রিকেটার।
বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিম ইকবাল জানান, আফগানিস্তানের স্পিন ত্রয়ী নিয়ে ভাবনা বেশি। রাশিদ, মুজিব, নাবিদের বোলিং বৈচিত্রে ভুগতে হয়েছে অতীতে। তাই ব্যাটারদের চ্যালেঞ্জ থাকবে একটু বেশি।
চট্টগ্রামে প্রথমবার ওয়ানডের স্বাদ নিবে আফগানিস্তান৷ জহুর আহমেদে শেষবার ওরা টেস্টে হারিয়েছিল স্বাগতিকদের। সেই সাহস পাশে পাচ্ছে আফগানরা।
আফগানিস্তানের ওয়ানডে অধিনায়ক হাশমত উল্লাহ শহিদি জানান, স্পিন আক্রমণ আমাদের শক্তির জায়গা। বাংলাদেশের কন্ডিশনে স্পিনাররা বেশি কার্যকর। কন্ডিশনের সাথে মানিয়ে নিয়েছি আমরা। মুজিবসহ বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার বিপিএল খেলে তাদের অভিজ্ঞতা বাড়িয়ে রেখেছে। আশা করি লড়াইটা দারুণ হবে।
তবে ওয়ানডে ফরম্যাটে দাপুটে বাংলাদেশ। সাত মাসের বিরতিতে কিছুটা জড়তা থাকলে সতীর্থদের আত্মবিশ্বাস রাখার তাগিদ অধিনায়কের। এদিকে ব্যাটিং পজিশনে পাঁচ নম্বর জায়গা নিয়ে দুশ্চিন্তা তামিমের। ঘাটতি কাটাতে ইয়াসির-জয়ে সমাধান খুঁজছে টিম টাইগার্স।
চট্টগ্রামে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি নিয়েছে টাইগাররা। আফগানিস্তানকে হোয়াইটওয়াশ করলেই ইংল্যান্ডকে টপকে ওয়ানডে সুপার লিগের শীর্ষে ওঠার সুযোগ থাকছে তামিম-সাকিবদের সামনে।
বাংলাদেশের বর্তমান পয়েন্ট ৮০। আর শীর্ষে থাকা ইংল্যান্ডের পয়েন্ট ৯৫। ১৫ ম্যাচে ৯ জয় রয়েছে ইংলিশদের। ম্যাচ প্রতি ১০ পয়েন্ট করে দুটি জয় পেলেই শীর্ষে উঠে আসবে বাংলাদেশ। ১ পয়েন্ট কম নিয়ে বাংলাদেশের পরেই অবস্থান ভারতের।
এদিকে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের চারে অবস্থান করছে আয়ারল্যান্ড। ৬২ ও ৬০ পয়েন্ট নিয়ে এই তালিকার পাঁচ ও ছয় নাম্বারে আছে শ্রীলঙ্কা ও আফগানিস্তান।সুপার লিগ চালু হওয়ার পর থেকে ১২ ম্যাচে ৮ জয় পেয়েছে টাইগাররা।
আফগানদের বিপক্ষে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জয়টি এসেছে ১৪১ রানের। ২০১৬ সালের ওই সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে তামিম ইকবালের সেঞ্চুরিতে টাইগাররা ২৭৯ রান তুলেছিল। জবাবে মোশাররফ রুবেলের ঘূর্ণিতে আফগানরা মাত্র ১৩৮ রানে গুটিয়ে যায়।
এছাড়া ২০১৮ এশিয়া কাপের দ্বিতীয় দেখায় ১৩৬ রান আর ২০১৫ বিশ্বকাপে ১০৫ রানে আফগানদের হারিয়েছিল টাইগাররা। ২০১৯ বিশ্বকাপে সর্বশেষ দুই দল মুখোমুখি হয়েছিল বিশ্বকাপের মঞ্চে। বাংলাদেশ ৬২ রানে উড়িয়ে দিয়েছিল আফগানদের।
এদিকে সাত মাস পর পছন্দের ফরম্যাট ওয়ানডে খেলতে নামছে তামিমরা। বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজ নিয়ে চট্টগ্রামে উৎসবের আমেজ। দর্শক প্রবেশের অনুমতিতে বেড়েছে আবেদন। তবে টিকিট কম ছাপানোর কারণে তিন হাজার সমর্থক পাবে খেলা দেখার সুযোগ। এ নিয়ে আক্ষেপ স্থানীয় ক্রিকেট প্রেমীদের।
জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামের গ্যালারিতে বসেছে নতুন চেয়ার। ভেন্যু হয়ে উঠেছে রঙিন। সাগরিকায় সবশেষ ওডিআই হয়েছিল এক বছর আগে, উইন্ডিজের বিপক্ষে।
সম্প্রতি বিপিএল উৎসব হয়েছে এখানে, যদিও করোনার বিধি-নিষেধে দর্শক প্রবেশে ছিলো নিষেধাজ্ঞা। এবার বাংলাদেশ-আফগান সিরিজ মাঠে বসে দেখার সুযোগ হচ্ছে, তবে সেটা সীমিত পরিসরে।
তামিম-সাকিবদের খেলা নিয়ে উন্মাদনা বন্দর নগরীতে, ভেন্যুর বাইরে টিকিটের জন্য হাহাকার, রীতিমত কাড়াকাড়ি অবস্থা। মঙ্গলবার সকাল থেকেই ভক্তরা ভিড় করে কাউন্টারে।
যদিও টিকেট বিক্রি শুরু হয় দুপুরের দিকে। দূরত্বও বাধা হতে পারেনি সমর্থনে। সাকিব-তামিমদের কাছ থেকে দেখার জন্য অনেকে এসেছেন অন্য জেলা থেকে। পিছিয়ে নেই নারী ভক্তরাও।
জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে, বাংলাদেশের রেকর্ড দারুন। এখানে ২০ ওডিআই খেলে ১৩টায় জয়, সবশেষ ৩ ম্যাচেই সফল টাইগাররা।
/এইচ কে/