ডেস্ক রিপোর্ট: রাষ্ট্রের বিপুল অর্থ খরচ করে ডাক্তার বানিয়ে কী লাভ- এমন প্রশ্ন তুলেছেন অর্থপ্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান। হতাশা ব্যক্ত করে তিনি বলেছেন, ডাক্তার হওয়ার পর গ্রামে গিয়ে এরা দেশের সাধারণ মানুষকে চিকিৎসা দিতে চায়না। তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মারামারি করে।
হাসপাতাল বন্ধ করে শত শত রোগীকে কষ্ট দিয়ে ভুলুন্ঠিত করে সেবার ধর্ম। তাহলে এই ডাক্তার দিয়ে কী হবে? তার চেয়ে বরং যারা বেসরকারি পর্যায়ে ডাক্তারি শিখে মানুষের সেবা করছেন তাদের উৎসাহিত করা উচিৎ।
বিকেলে সিরডাপ মিলনায়াতনে সুপ্রর প্রাক বাজেট আলোচনায় এ সব কথা বলেন তিনি। বাজেট আলোচনায় যখন দেশের সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিয়ে নানা বঞ্চনার চিত্র তুলে ধরা হচ্ছিল, বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে অর্থ বরাদ্দ কমানোর সমালোচনা করা হচ্ছিল তার প্রেক্ষিতেই এমন মন্তব্য করেন এম এ মান্নান।
দেশের ৪৫টি জেলার প্রান্তিক মানুষের বাজেট ভাবনা নিয়ে এই প্রাক বাজেট আলোচনার আয়োজন করেছিল বেসরকারি সংস্থা সুসাশনের জন্য প্রচারাভিযান বা সুপ্র। সংস্থাটি বলেছে, এবার হতে হবে দরিদ্রবান্ধব প্রত্যক্ষ করের বাজেট। এছাড়া বাজেটে স্বাস্থ্য ও শিক্ষা খাতকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আরো বেশি বরাদ্দ দেওয়ার দাবি জানানো হয়। একই সঙ্গে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টিকে বাজেটে গুরুত্ব দিতে বলা হয়।
ডাক্তারদের পর সুশীল সমাজকেও একহাত নিয়েছেন অর্থপ্রতিমন্ত্রী। নারায়নগঞ্জের ঘটনাকে অমানবিক, বিভৎস এবং নৃশংস আখ্যা দিয়ে বলেছেন, এটা মেনে নেওয়া যায়না। সরকার এতে বিব্রত। এর বিচার করতে প্রতিজ্ঞ সরকার। তবে সুশীল সমাজ যেভাবে এর প্রতিবাদে প্রেসক্লাবের সামনে রাস্তা বন্ধ করে সভা করেছে, নারায়নগঞ্জে বাস পুড়িয়ে মানুষ মেরে প্রতিবাদ করেছে তা কাম্য নয়।
তিনি আরো বলেন, বাজেট এলেই অনেকে আঞ্চলিক বিভাজন তৈরি করেন। বলেন, বাজেটের আর্থিক কাঠামোতে অনেক অঞ্চল বৈষম্যের শিকার হয়। এই বিভাজনের মানসিকতা বিপদজনক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। এমন মানসিকতা পরিহার করার তাগিদ দেন অথপ্রর্তিমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশটাকে একক ও ঐক্যের ভাবতে হবে। কোথায়ও উন্নয়ন কম হলে সরকারের দৃষ্টিতে আনুন। উন্নয়নের চেষ্টা করা হবে।
তিনি বলেন, যে সব বিষয় আলোচনায় উঠে এসেছে তার মধ্যে শিক্ষা স্বাস্থ্য এবং সামাজিক নিরাপত্তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়গুলো বাজেটে যাতে অগ্রাধিকার পায় সে প্রচেষ্টা থাকবে অর্থমন্ত্রণালয়ের।
সুপ্রর চেয়ারপারসন মোস্তাফিজুর রহমান খানের সভাপতিত্বে ওই অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন, সংসদ সদস্য শিরিন আখতার এবং ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন।
সুপ্র ৪৫ টি জেলায় বিপুল অর্থ খরচ করে বাজেট বিষয়ে প্রান্তজনের ভাবনা তুলে এনেছেন। নানা দাবি ও গুরুত্বপূর্ন তথ্য দিয়েছেন। আজও অনেক টাকা খরচ করে প্রাক বাজেট আলোচনার আয়োজন করেছেন। এই খরচ আর পরিশ্রম পুরোটায় জলে গেছে বলে ইঙ্গিত করেছেন শিরিন আখতার ।
তিনি বলেন, আজ যে আলোচনা হচ্ছে তা আসছে বাজেটে কোন কাজে আসবেনা। এই দাবি ও গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো জানুয়ারীতেই তুলে ধরা উচিৎ ছিল। তাহলে বাজেটে অন্তর্ভূক্ত করা যেত। তারপরও আগামীতে এটা কাজে দেবে বলে তিনি মনে করেন।
সুপ্র, প্রত্যক্ষ কর নির্ভর কাঠামো প্রতিষ্ঠা, জেলা বাজেট আইন প্রণয়ন, জাতীয় শিক্ষানীতি ১০ বাস্তবায়ন, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতের বাণিজ্যকরণ বন্ধ, সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি বাস্তবায়নসহ ১৬টি দাবী তুলে ধরে। আসন্ন বাজেটে এই দাবীগুলো যাতে মানা হয় তারও সুপারিশ করেছে এই সংস্থাটি।