রাজধানীতে নতুন আমদানি করা হলুদ ট্যাক্সিক্যাবগুলোর উচ্চহারে ভাড়া নির্ধারণ করায় সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে বলে জানিয়েছেন সাধারণ যাত্রীরা। ভাড়া শুনেই চমকে যাচ্ছেন নিু ও মধ্যবিত্ত মানের যাত্রীরা। অন্যদিকে আমদানি করা হলুদ ট্যাক্সিক্যাবগুলো নিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন বিত্তবান যাত্রীরা। প্রাইভেটকার রেখে অনেকে এই ক্যাবে চড়ে যাচ্ছেন গন্তব্য স্থানে। ক্যাব থেকে নেমে স্বস্তিও প্রকাশ করছেন বিত্তবান যাত্রীরা।
সরেজমিনে ট্যাক্সিক্যাব ড্রাইভারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, উত্তরার আবদুল্লাহপুর থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সরকার নির্ধারিত ভাড়া ৭৬৫ টাকা। যানজটে আটকে থাকলে প্রতি মিনিটের জন্য আরও সোয়া চার টাকা গুণতে হবে। এতেই ভাড়া ছাড়িয়ে যাচ্ছে হাজার টাকা। উত্তরা থেকে কারওয়ান বাজার ১৫ কিলোমিটার পথের ভাড়া ৫৪০ টাকা। কিন্তু যানজট আর সিগন্যালে পড়ায় ওয়েটিং চার্জসহ ভাড়া উঠছে প্রায় ৭০০ টাকা। ফোনে ক্যাব ডাকার সুবিধা রয়েছে। তবে সেখানেও যাত্রীর পকেট থেকেই টাকা যাচ্ছে। ক্যাব যেখান থেকে যাত্রা করছে সেখান থেকেই ভাড়ার মিটার চালু হচ্ছে। গতকাল দুপুরে রাজিব নামের এক যাত্রী বাংলামোটর থেকে মোহাম্মদপুর বাবর রোডে যাওয়ার জন্য একটি ট্যাক্সিক্যাব ডাকেন। ভাড়া জানতে চাইলে চালক জানান, প্রথম দুই কিলোমিটার ৮৫ টাকা, পরবর্তী প্রতি কিলোমিটার ৩৫ টাকা। যানজটে পড়লে বা অন্য কোনো কারণে ক্যাব থামলে প্রতি দুই মিনিটের জন্য সাড়ে আট টাকা। সর্বমোট কত টাকা ভাড়া পড়তে পারে? এ প্রশ্নে চালক জানান, ২০মিনিট যানজট ধরে হিসাব করলে ভাড়া পড়বে প্রায় ৫০০ টাকা। ভাড়া শুনেই রাজিব বলেন, ক্যাবের দরকার নেই।
এসব ক্যাবের তো ভাড়া অনেক বেশি। তাহলে সর্বসাধারণের কেমন সাড়া পাচ্ছেন- এ প্রশ্নের জবাবে ঐ চালক বলেন, আমাদের ট্যাক্সিক্যাবগুলোর বেশি চাহিদা গুলশান, বনানী ও ধানমন্ডির দিকে। ওই এলাকার মানুষগুলো একটু বেশি সচ্ছল। তাই ট্যাক্সিক্যাবের ভাড়ায় তারা অসন্তুষ্ট নন। তবে ভাড়ার কারণে সাধারণ নিম্নআয়ের মানুষ ট্যাক্সিক্যাবে উঠতে চান না। বেশ কিছু নিু ও নিু-মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ট্যাক্সিক্যাবগুলোর ভাড়া তাদের নাগালের বাইরে। তাই তারা এসবে উঠছেন না।
গত মঙ্গলবার রাজধানীতে নতুন ট্যাক্সিক্যাব উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এই ট্যাক্সিক্যাবের প্রথম দুই কিলোমিটারের ভাড়া ১০০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বক্তব্যে তা ৮৫ টাকা করতে বলেছেন। তিনি বলেন, ভাড়া নিয়ে কিছুটা কথা উঠেছে। তাই প্রথম দুই কিলোমিটার ৮৫ টাকা করলে ভালো হয়। পরে এই ভাড়া বৃদ্ধি করা যাবে। এই গাড়িগুলোর প্রথম দুই কিলোমিটারের পর প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া হবে ৩৪ টাকা এবং প্রতি দুই মিনিটের ওয়েটিং চার্জ হবে ৮ টাকা ৫০ পয়সা। উল্লেখ্য, এর আগে রাধানীতে ১৯৯৬ সালে ট্র্যাক্সিক্যাব চালু হয়। নানা কারণে তা ভালো সেবা দিতে পারেনি।