জেলার হাওরবেষ্টিত উপজেলা অষ্টগ্রামের হতদরিদ্র ৩ মুক্তিযোদ্ধা নিদার“ণ কষ্টে জীবনযাপন করছেন। বৃদ্ধ বয়সে দিনমজুরের কাজ করে পরিবারের ভরণপোষণ করতে গিয়ে তারা হিমশিম খা”েছন। সহায়-সম্বলহীন অব¯’ায় অন্যের বাড়িতে আশ্রিত হয়ে অবর্ণনীয় দুর্দশার মধ্যে দিন কাটালেও কেউ তাদের খোঁজ নেয় না। এ তিন মুক্তিযোদ্ধা হলেন উপজেলার দেওঘর ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের দেওঘর গ্রামের যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা মুমিন উল্লাহ সরকার, এরশাদ আলী ও গাজীউর রহমান। বর্তমানে তারা ৩ জনই দিনমজুরের কাজ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে খুব কষ্টে দিন কাটা”েছন। অষ্টগ্রাম উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার ফজলুল হক হায়দারী বা”চু জানান, এই তিন মুক্তিযোদ্ধার অব¯’া খুবই কর“ণ। অনেক চেষ্টা করে তাদের সম্মানী ভাতার ব্যব¯’া করে দিয়েছেন। তবে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ে তাদের সাহায্যের জন্য আবেদন পাঠানো হ”েছ। বিষয়টি তারা দেখবেন বলে তিনি জানান। যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের আলাদা ভাতার ব্যব¯’া রয়েছে। তবে তারা এর আওতায় এখনও আসেননি। তিন মুক্তিযোদ্ধা জানান, ৩ জনেই ভারতের ৩নং সেক্টরে লেবুচুরা ট্রেনিং কমান্ডার রাজপুত্র শর্মার অধীনে ট্রেনিং শেষে কমান্ডিং অফিসার শফিউল্লাহর নেতৃত্বে প্রথমে কুমিল্লা জেলার কসবা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, আশুগঞ্জ ও সিলেটের তেলিয়াপাড়া যুদ্ধ শেষে নিজ জেলা কিশোরগঞ্জ ফিরে আসেন। পরে তারা কিশোরগঞ্জ জেলার বিভিন্ন অপারেশনে অংশ নেন। যুদ্ধ চলাকালীন মুক্তিযোদ্ধা গাজীউর রহমান ডান পায়ের হাঁটুর নিচে শেলের আঘাত পান। সে থেকেই পঙ্গু অব¯’ায় জীবনযাপন করছেন তিনি। তিনি বলেন, যুদ্ধাহত হিসেবে বহু আবেদন করেও কোনো লাভ হয়নি। এ সরকার মতায় আসার পর বহু চেষ্টার ফলে তারা এখন জনপ্রতি ২ হাজার টাকা করে ভাতা পা”েছন। অন্যের জমিতে কাজ করারও বয়স নেই। খুব কষ্টে দিনযাপন করছেন। মুক্তিযোদ্ধা মুমিন উল্লাহ সরকার বলেন, তাকে একটি ইউনিয়ন কমান্ডারের দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন। তার ৫ ছেলে ও ৫ মেয়েসহ পরিবারের ১৩ জন সদস্য নিয়ে খুব কষ্টে চলতে হ”েছ। টাকার অভাবে মেয়েদের বিয়ে দেওয়া সম্ভব হ”েছ না। অপর যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা গাজীউর রহমান জানান, যুদ্ধের সময় শেলের আঘাতে ডান পা অকেজো হয়ে পড়ে। মুক্তিযোদ্ধা এরশাদ আলী জানান, তার কোনো ভিটেমাটি নেই। তার ৩ ছেলে ও ২ মেয়ে। অনেক কষ্টে তিনি দিনাতিপাত করছেন।
কটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ থেকে সুবল চন্দ্র দাস ঃ