এনায়েত মজুমদার,চাঁদপুর প্রতিনিধি-
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জের অলিপুরের কুমড়া চট্রগ্রামের বাজার দখল করে নিয়েছে। চট্টগ্রামের কাঁচা বাজারগুলোতে শীত মৌসুমে চাঁদপুরের কুমড়া দেদার বিক্রি হ”েছ। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা না পেলেও শুধুমাত্র ব্যক্তি উদ্যোগে চাষকৃত কুমড়া গত কয়েক বছর ধরে অলিপুরে উৎপাদন হ”েছ যা চাঁদপুরের সুনাম কুড়িয়ে আসছে। শুধুমাত্র শীত মৌসুমে এ এলাকায় প্রায় ১০ লাখ কুমড়া উৎপাদিত হয়। এ কুমড়া উৎপাদন করতে গিয়ে কোনো ধরনের কীটনাশক বা কেমিক্যাল ব্যবহার করতে হয় না বলে বেশ কজন কুমড়া চাষী জানিয়েছেন।
সরজমিনে অলিপুরে গেলে দেখা যায়, প্রতিদিন এলাকার জমি থেকে তুলে এনে হাজার হাজার কুমড়া সড়কের পাশে ¯‘প করে রাখা হ”েছ। ভালো ফলনের কারণে এ এলাকায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। কুমড়ার ¯‘প পাইকারী দামে কিনে নেন ¯’ানীয় বেশ কিছু ব্যবসায়ী। এরাই ট্রাক ভাড়া করে কুমড়া নিয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে পাড়ি জমান। চট্টগ্রামে পাইকারী বিক্রি শেষে আবারপ ট্রাক নিয়ে ফিরতেই কৃষককূল ফের কুমড়া জমিয়ে ¯‘প করে রাখেন সড়কের পাশে। এভাবেই শীত মৌসুম ব্যস্ত সময় কাটাবে এ এলাকার কুমড়া চাষী আর পাইকারী ব্যবসায়ীরা।
হাজীগঞ্জ উপজেলার দণি-পশ্চিম পাশে ডাকাতিয়ার কোল ঘেঁষা গ্রামগুলো হলো উ”চঙ্গা-অলিপুর, উ”চঙ্গা-দণি, অলিপুর, দণি বলাখাল, শমেশপুর আর চাঁদপুর সদর উপজেলার মনিহার-কামরাঙ্গা। এ গ্রামসমূহের কৃষকরা সাধারণত ইরি-বোরো মৌসুম ব্যতীত সকল সময়ে সবজির আবাদ করে থাকেন। এর মধ্যে মুলা, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধা কপি, আলু, সিম, কুমড়া,শসা, রিাই অন্যতম। তবে এবারে এ এলাকাসমূহে ব্যাপক ফলন হয়েছে কুমড়া আর লাউয়ের। আবার এ দুটির মধ্যে বেশি চাষ হয়েছে কুমড়ার।
প্রায় ২০ বছর ধরে নিজের জমিতে কুমড়া চাষ করছেন দণি বলাখাল এলাকার আবুল খায়ের খান। তিনি জানান, এবারে আমি প্রায় ১শ’ ২০ শতাংশ জমিতে কুমড়া চাষ করেছি। প্রথম দু ধাপে ১৪ হাজার টাকার কুমড়া পাইকারী বিক্রি হয়েছে। তবে অন্যবারের থেকে এবারে দামটা একটু কম।
কুমড়া চাষের বিষয়ে আবুল খায়ের আরো বলেন, কুমড়া চাষে খরচ তেমন একটা হয় না। তবে কচুরিপানার মূল জমাতে গিয়ে দিনমজুরের খরচাই বেশি হ”েছ। সার সামান্য পরিমাণ দিলেই হয়। তবে কোনো ধরনের কেমিক্যাল বা কীটনাশক কুমড়ার গাছে দিতে হয় না। আবুল খায়ের এবার আশা করছেন তার জমিতে ইরি ধান লাগানোর আগেই প্রায় অর্ধ ল টাকার কুমড়া বিক্রি করা সম্ভব হবে।
উ”চঙ্গা এলাকার মিজি বাড়ির আঃ লতিফ বলেন, বলাখাল-অলিপুর-উ”চঙ্গা এলাকায় প্রায় ১ হাজার একর জমিতে এবার কুমড়া চাষ হয়েছে। এ জন্য কৃষি অফিস থেকে কুমড়া চাষের উপরে কোনো ধরনের দিক নির্দেশনা পাওয়া যায়নি। পর্যাপ্ত পরামর্শ পাওয়া গেলে আরো ভালো মানের কুমড়া উৎপাদন করা সম্ভব হতো।
আঃ লতিফ আরো বলেন, আমরা সাধারণত আইডিয়ার মধ্যে কেজি প্রতি ১০/১২ টাকা হলেই কুমড়া বিক্রি করে দেই। এভাবে প্রতিটি কুমড়া ৩ কেজি হলে এর বিক্রি দাম দাঁড়ায় ৩০ থেকে ৩৫ টাকায়।