আশরাফুল আলম,ভৈরব- কুলিয়ারচর প্রতিনিধি||“স্থানীয় প্রশাসন ও প্রভাবশালীদের ছত্র ছায়ায় ভৈরব পৌর শহরের পঞ্চবটি এলাকা আবারো মাদকের স্বর্গরাজ্যে। এ পরিস্থিতি শুধু পঞ্চবটি এলাকার নয়। সমগ্র ভৈরবে যেন এর স্থির চিত্র দেখা যায়।
আমাকে একা বলছেন কেন? আমার নিকট না পেলে পাশের পাড়ার বিক্রেতার নিকট থেকে কিনে আনবে। এমন কোন পাড়া নেই যেখানে মাদক বিক্রি হয় না। ভৈরবে এখন পাড়ায় পাড়ায় মাদক বিক্রয় চলে “। এমনই এক সম্মতি সূচক অভিযোগ পাওয়া যায় জনৈক এক মাদক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে।
কিশোরগঞ্জ জেলার ঐতিহ্যবাহী বন্দরনগরী ভৈরব দেশের প্রথম শ্রেণীর পৌরসভা হিসেবে স্বীকৃত। শুধু তাই নয় এ ভৈরবে কৃতি সন্তান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব মোঃ জিল্লুর রহমান ও নারী নেত্রী শহীদ আইভি রহমানের সুযোগ্যপুত্র সূর্য সন্তান বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)’র কয়েক বারের সফল সভাপতি ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপনের বাস ভবনের আদা কিলোমিটার অদৌরে ভৈরব পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড পঞ্চবটি (পুকুর পাড়) এলাকা মাদকের স্বর্গরাজ্যে পরিনিত হয়েছে।
নাম প্রকাশে এক অনিচ্ছুক ব্যক্তি বলেন, গত ৯ মাস পূর্বেও ভৈরবের শীর্ষ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের মাদক বিরোধী কমিটি গঠনের মাধ্যমে পঞ্চবটি পুকুর পাড়া সহ পৌর শহরের বিভিন্ন ওয়ার্ডে মাদক বিরোধী সমাবেশ করে অবাদে মাদক বিক্রয় বন্ধ রেখেছিলেন। কিন্তু আবারো এ এলাকায় পূর্বের চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ীরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। তিনি আরো বলেন, প্রশাসনের নাকেরঢগা দিয়ে চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী একাধিক মাদক মামলার আসামীরা নাকে তেল দিয়ে প্রকাশ্যে মাদক বিক্রয় করে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য প্রতিদিন বিকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ভৈরব পৌর শহরের পঞ্চবটি (পুকুরপাড়) এলাকার চিহিৃত মাদক ব্যবসায়ী
১.মাইগ্যা আলম (৪০),
২.সুমি (৪৩),
৩. কাদির (৪০),
৪.হেলিম (৩৮),
৫.রব মিয়া (৫৫) ,
৬. চাইনা (৩৫) ,
৭.ফাতি (৪৫) ,
৮.কুলসী (৪০),
৯.শিল্পী (৪০) ,
১০.রাজন (৩৩),
১১. সুজন (৪৮),
১২. রতনা (৪০) ,
১৩.মাফি (৪৫)সহ প্রায় অর্ধ শতাধিক শীর্ষ মাদক ব্যবসায়ী তাদের নিজ নিজ বাড়ীতে অবাধে ফেনসিডিল, ইয়াবা, গাজা বিক্রয় করে আসছে।
পুলিশ,র্যাব,আবগাড়ী কে খবর দিলে ঐ মাদক ব্যবসায়ীরা অলৌকিক কারনে খবর দাতার নাম জেনে যায় ও উল্টো খবর দাতাকেই ঐসব মাদক ব্যবসায়ীদের দালাল কথিত সোর্স নামধারীদের খপ্পরে পড়ে হেনস্থা হতে হয়। তাছাড়া তাদের সাথে সাধারন মানুষের পেড়ে উঠাটা নাগালের বাইরে।
সড়ক, রেল এবং নৌ পথে সহজ যাতায়াত ব্যবস্থা ভালো থাকায় ভৈরবে এখন মাদকের রাজত্ব। আর সড়ক, রেল ও নৌপথে আসছে গাঁজা, ইয়াবা ও ফেনসিডিল। হাত বাড়ালেই মেলে বিভিন্ন রকমের মাদকদ্রব্য। ফলে ধ্বংসের পথে যুবসমাজ, উঠতি বয়সের তরুণরা। এ ছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে চলছে প্রভাবশালী মহলের ছত্রছায়ায় মাদক বেচা-কেনা। পাড়া-মহল্লায় গড়ে উঠেছে মাদকের বাজার।
এই বিষয়ে ভৈরবের সচেতন নাগরিকগণ বলেন, আমরা আমাদের সন্তানদের নিয়ে শঙ্কায় আছি। ভৈরবে যেভাবে মাদকের ছড়াছড়ি চলছে কখন যে অসৎ সঙ্গে গিয়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে নাকি ইতি মধ্যে জড়িয়ে গেছে মাদকের সাথে, কর্মে থেকেও সন্তানদের নিয়ে সেই ভয় কাজ করে মনে।
শহরের বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে মাদক সম্রাট। এই সব সম্রাটরা এলাকার প্রভাবশালী মহল ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তায় রাজত্ব করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রশাসন বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠালেও আইনের ফাঁক দিয়ে বেরিয়ে আবার তারা মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়ছেন।
পুলিশের মতে, বিভিন্ন সময় অভিযান চালিয়ে মাদকসহ মাদক ব্যবসায়ীদের আটক করে জেল হাজতে পাঠানো হচ্ছে। ভৈরব থানায় সব চেয়ে বেশি মাদকের মামলা হয়েছে। মাদক ব্যবসা বন্ধে পুলিশের চেষ্টার কমতি নেই বলেও জানায় পুলিশ।
এ ব্যাপারে ভৈরব থানার পুলিশ কর্মকর্তা বলেন,মাদক বিক্রয় নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং তুলনামূলক ভাবে আগের চেয়ে অনেক কম। মাদক বিক্রয় জিরো পয়েন্টে আনতে আরও সময় লাগবে।
তাছাড়া আমরা প্রত্যকটি এলাকায় মাদকবিরোধী কমিটি করেছি। ইতোমধ্যে ৮০ ভাগ মাদক ব্যবসা বন্ধ বা নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছি। ভৌগোলিক কারণে বাকি ২০ ভাগ মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের বাইরে রয়েছে।