পঞ্চগড় জেলা জুড়ে মাঠে এখন শুধুই সবুজের সমারোহ। কমবেশি বৃষ্টি হওয়ায় এবং জমিতে পর্যাপ্ত পানি থাকায় আমন ক্ষেতে দোল খাচ্ছে সবুজ ধান। অনুকুল আবহাওয়া আর সঠিক পরিচর্যা করায় বেড়ে উঠছে কচি আমন ধান গাছ। জেলায় এবছরদেরীতে বৃষ্টি হওয়ায় আমন চাষে সংশয় ছিল কৃষকদেও মাঝে। তবে এখন জমিতে চারা লাগিয়ে সকল বাধা কাটিয়ে এখন আমনের বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
পঞ্চগড়ের কৃষকদের প্রাণ প্রকৃতি নির্ভর আমন ধান। তুলনামুলকভাবে উচু জমি এবং মাটিতে বালুর পরিমান বেশি হওয়ায় এখানে সেচ নির্ভর বোরো ধান অন্যান্য জেলার চেয়ে কম আবাদ হয়। তাই একমাত্র ভরসা আমন ধান। এই আমন ধান কৃষকের সারা বছরের খাবারসহ পরিবারের খরচের যোগান দেয়। আদিকাল থেকে চলে আসছে এই নিয়ম। কিন্তু প্রকৃতি এবার মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় সময়মত বৃষ্টিপাত হয়নি। বৃষ্টির অভাবে আমন চাষ নিয়ে শঙ্কায় পড়ে কৃষকেরা। অতিরিক্তি টাকা খরচ করে কৃষকরা সেচ দিয়ে জমিতে আমন চারা রোপণ করে। বৃষ্টি না হওয়ায় চারা রোপনের পরেও জমিতে সেচ দিতে হয়। জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলার কৃষক সিরাজ জানান, এবার আমি ১০ বিঘা জমিতে আমন ধান লাগানোর জন্য জমি প্রস্তুত করেছিলাম। বীজতলায় চারাও প্রস্তুত ছিল। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে জমিতে চারা লাগাতে পারিনি। বৃষ্টি হওয়া মাত্রই জমিতে চারা লাগিয়েছি। প্রয়োজনীয় সকল সার ও কীটনাশক দিয়েছি একমাসের মধ্যেই সবুজে ভরে গেছে আমন ক্ষেত। তিনি বলেন, এখনও জমিতে পানি জমে আছে, মাঝে মধ্যে বৃষ্টিও হচ্ছে।
আর দুই-তিন সপ্তাহ এমন আবহাওয়া বিরাজ করলে পূর্ববর্তী বছরের মতই আমন ধান ঘরে তুলতে পারব। পঞ্চগড়ের কৃষি সম্প্রসারনের অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, চলতি আমন মৌসুমে পঞ্চগড় জেলায় ৯৬ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে মৌসুমের শেষে বৃষ্টিতে শেষ পর্যন্ত ৯৭ হাজার ৫৯০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চারা রোপন করা হয়েছে। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক হাজার ১৬৫ হেক্টর বেশি। তিনি আরও জানান, বর্তমানে আবহাওয়া অনূকুলে রয়েছে। অন্য কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবারও আমনের বাম্পার ফলনের আশা করছেন এই কৃষি কর্মকর্তা।