ফিফা র্যাংকিংয়ে ঘানার চেয়ে অনেকটাই এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র। আমেরিকানরা যেখানে ১৩তম অবস্থানে, সেখানে বস্ন্যাক স্টাররা ৩৭তম। তবে দুই দলের তিনবারের সাক্ষাতে র্যাংকিংয়ের প্রভাব লক্ষ করা যায়নি মোটেও। ইয়াঙ্কসদের বিপক্ষে সব ক’টি ম্যাচেই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ঘানা।
অ্যারিনা ডাস ডুনাসে আজ মুখোমুখি হচ্ছে ‘জি’ গ্রুপের চমকপ্রত্যাশী দুই দল ঘানা এবং যুক্তরাষ্ট্র। এমনিতে দুই দলের মুখোমুখি সাক্ষাৎ হয় কদাচিত। কিন্তু এই কদাচিতের মধ্যে বিশ্বকাপকে ফেলা যাবে না কিছুতেই। এ নিয়ে টানা তিন বিশ্বকাপে নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ে নামতে হচ্ছে তাদের। গ্রুপ ফেভারিট পর্তুগাল আর জার্মানির মধ্যে কাউকে হটিয়ে নিজেদের সেই জায়গায় বসানোর আশায় বসতি গড়ছে দুই দলই। ফিফা র্যাংকিংয়ে ঘানার থেকে অনেকটাই এগিয়ে যুক্তরাষ্ট্র। আমেরিকানরা যেখানে ১৩তম অবস্থানে, সেখানে বস্ন্যাক স্টাররা ৩৭তম। তবে দুই দলের তিনবারের সাক্ষাতে র্যাংকিংয়ের প্রভাব লক্ষ্য করা যায়নি মোটেই। ইয়াঙ্কসদের বিপক্ষে সবকটি ম্যাচেই জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে ঘানা। ১৯৮৩ সালে এক প্রীতিম্যাচে ১-০ গোলে জয়, এরপর দুইটি বিশ্বকাপেই সেই ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন্ন রেখেছে বস্ন্যাকস্টাররা। ২০০৬ সালের বিশ্বকাপে গ্রুপপর্বেই সাক্ষাৎ হয়েছিল তাদের, সেই ম্যাচটি ২-১ ব্যবধানে জয়ের পর ২০১০ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় রাউন্ডে একই ব্যবধানে জিতে আমেরিকানদের দেশের টিকিট ধরিয়ে দিয়েছিল ঘানা। গত বিশ্বকাপ স্কোয়াডের অধিকাংশ সদস্যই এবারো মাঠ কাঁপাবেন ঘানার হয়ে। দুর্দান্ত রক্ষণভাগ, বিপদজনক কাউন্টার অ্যাটাক এবারো তাদের প্রধান শক্তি। তবে বরাবরের মতোই মিডফিল্ডারের দুর্বলতা ভোগাবে আফ্রিকার দলটিকে। আজকের ম্যাচকে ঘিরে ৪-২-৩-১ ফরমেটে রণপরিকল্পনা সাজিয়েছেন তাদের কোচ কোয়েসি আপিয়াহ। গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় যথেষ্ট খেলোয়াড় মজুদ না থাকায় মাথা খাটিয়ে দল সাজাতে হচ্ছে তাকে। প্লে-মেকার হিসেবে নিজেকে পরিচিত করার ইচ্ছা থাকলেও তাই লেফট উইঙ্গারে খেলতে হবে কোয়াডো আসামোয়াহকে। বস্ন্যাকস্টার দলের জর্ডান আয়েউয়ের দিকেও আলাদা নজর রাখতে হবে যুক্তরাষ্ট্রকে। ঘানার এই ফরোয়ার্ড দক্ষিণ কোরিয়ার বিপক্ষে সর্বশেষ প্রীতিম্যাচে করেছেন দারুণ এক হ্যাটট্রিক। ডানদিক সামলানোর দায়িত্বে থাকবেন তারই ভাই আন্দ্রে আয়েউ। স্ট্রাইকারকে সহযোগিতা করার জন্য ঠিক পেছনেই থাকবেন আসমোয়াহ জিয়ান, কেভিন-প্রিন্স বোয়াটেংদের মতো সত্যিকারের প্লে-মেকাররা। সাম্প্রতিক সময়টা খুব একটা ভালো না কাটলেও মিডফিল্ড সামলানোর দায়িত্বটা মাইকেল এসিয়েন আর সুলে মুনতারির কাঁধেই ন্যস্ত থাকবে। ডিফেন্সের মূল ভরসা হিসেবে থাকবেন জোনাথান মেনশাহ ও জন বোয়ে। অন্যদিকে কোচ ইয়ুর্গেন ক্লিন্সম্যানের মূল ভরসার জায়গা মিডফিল্ড। তাই তার রণপরিকল্পনায় রয়েছে ৪-৪-১-১ ফরমেট। লেন্ডন ডনোভান দলে না থাকায় মূল আলোটা থাকবে মাইকেল ব্র্যাডলি, ক্লিন্ট ডেম্পসি আর জোজি আলতিদোরের ওপর। প্রতিপক্ষ ডিফেন্ডারদের জন্য বড় হুমকি হতে পারেন এই তিনজনই। ব্র্যাডলির পেছনে মিডফিল্ড সামলাবেন কাইল বেকারম্যান, আলেজান্দ্রো বেদোয়া এবং জার্মেইন জোনস অথবা গ্রাহাম জোসি। পারফর্ম্যান্সের বিচারে জুসিকে হটিয়ে জোনসকেই মিডফিল্ডে দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। প্রতিপক্ষকে রুখে দেয়ায় যুক্তরাষ্ট্র রক্ষণভাগের ভরসা হিসেবে থাকবেন জিওফ ক্যামেরুন এবং ম্যাট বেসলার। ফুলব্যাকে থাকবেন ভার্সেটাইল দুই ডিফেন্ডার ফাবিয়ান জনসন এবং দিমার্কাস বেয়াসলি। গোলরক্ষক হিসেবে ক্লিনসম্যানের আস্থা টিম হাওয়ার্ডে।