মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় অভিযুক্ত জাতীয় পার্টির নেতা ও কায়সার বাহিনীর প্রধান সৈয়দ মোহাম্মাদ কায়সারের বিরুদ্ধে একাত্তরে হত্যা,গণহত্যা,ধর্ষণ,আটক ও নির্যাতনের ১৬ টি অভিযোগ রয়েছে।
তার নেতৃত্বেই পাঁচ শতাধিক স্বাধীনতাবিরোধীকে নিয়ে গঠন করা হয় কায়সার বাহিনী। যে বাহিনী একাত্তরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও হবিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় হত্যা,গণহত্যা,ধর্ষণ,লুণ্ঠন চালায় । মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য চার মাস অপেক্ষমাণ তালিকায় থাকার পর, আজ রায় ঘোষণা করবেন ট্রাইব্যুনাল-২।
১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় সৈয়দ মোহাম্মাদ কায়সার মুসলিম লীগের নেতা ছিলেন। তার নেতৃত্বেই পাকিস্তানী বাহিনীকে সহায়তা করতে ৫’শতাধিক স্বাধীনতা বিরোধীদের নিয়ে গঠন করা হয় কুখ্যাত কায়সার বাহিনী। যে বাহিনী সৈয়দ মোহাম্মাদ কায়সারের নেতৃত্বে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-হবিগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় শতাধিক ব্যাক্তিকে হত্যাসহ মানবতাবিরোধী ১৬টি অপরাধ সংগঠন করে।
কায়সারের বিরুদ্ধে ১৬টি অভিযোগের মধ্যে রয়েছে,বাহ্মণবাড়িয়ার ইসলামপুরে একজনকে হত্যা,হবিগঞ্জের মাধবপুর,কৃষ্ণনগর,শায়েস্তাগঞ্জ,লেঞ্জাপাড়ায় ১৪জনকে হত্যা এবং ১৫০টি বাড়িতে লুটপাট ও আগুন।
এছাড়া সাঁওতাল হীরামনিকে ধর্ষণ, মাধবপুর লোহাইদ এলাকায় আটজনকে হত্যা,একই এলাকার মাজেদা বেগমকে ধর্ষণ এবং নলুয়ার চারজনকে হত্যার অভিযোগ। অভিযোগ রয়েছে মাধবপুরের সিরাজ আলী ও ওয়াহেদ আলী সহ চারজনকে হত্যা এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ভাটপাড়া থানার ২১টি গ্রামের ১০৮ জনকে নির্বিচারে গুলি করে হত্যা।
মামলার কার্যক্রম
মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় কায়সারকে গত বছরের ২১ মে গ্রেফতার করা হয়। শারীরিক অসুস্থতার কথা বিবেচনা করে তাকে ঐ বছরের জুলাইতে শর্তসাপেক্ষে জামিন দেন ট্রাইব্যুনাল। আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয় এবছরের ২ ফেব্রুয়ারি।তার বিরুদ্ধে সাক্ষ্যদান যুদ্ধশিশু’সহ ৩১জন।প্রায় সাড়ে ৬ মাস ধরে বিচার শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমাণ রাখেন ট্রাইব্যুনাল-২।ঐ দিন তাকে জামিন বাতিল করে কারাগারে পাঠানো হয়
ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউশন বলছে,সৈয়দ মোহাম্মাদ কায়সার স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন আত্মগোপনে ছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর পুনরায় সক্রিয় হন রাজনীতিতে। প্রথমে বিএনপির রাজনীতিতে যোগ দিলেও পরে এরশাদের জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে, সরকারের কৃষি প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পান।