অফিসে যেতে যেতে বাসে দেরি হলে অথবা টানা কাজের মাঝে একটু অবসরে কী করেন আপনি? ইন্টারনেট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের এই যুগে নিশ্চয় নিজের ফেসবুক নোটিফিফিকেশনই চেক করেন আপনি। তবে ফেসবুক না ব্যবহার করে টুইটিং, গুগলে সার্চ অথবা ইয়াহুতে স্টকের দাম চেকিং অথবা এরকম কোন সংবাদও যদি পড়েন আপনি তবে তাতে একতরফা ইন্টারনেট বাণিজ্য করতে পারবে না ফেসবুক। বর্তমানে হোক স্মার্টফোন বা ডেস্কটপ, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের জনপ্রিয়তা ইন্টারনেট ভিত্তিক অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলোকে মাটিতে নামিয়ে আনছে।
ফেসবুকে আপনার আসক্তি এটিকে ক্রমাগত সম্পদশালী করে তুলছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটিতে আপনার আবেগ এবং বুদ্ধিবৃত্তিসংক্রান্ত পদচারণাগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে এটিতে বিজ্ঞাপন দিতে আগ্রহী করে তুলেছে।
বুধবার প্রকাশিত বছরের প্রথমভাগের ফিনান্সিয়াল রেজাল্টে ফেসবুকের এই অর্থনৈতিক সাফল্যের নম্বরগুলো লক্ষ্যণীয়। শুধুমাত্র যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডাতে ইউজারপ্রতি বিজ্ঞাপন থেকে ফেসবুক আ্য় করেছে ১১.৮৬ মার্কিন ডলার। আর এ কারণে বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে আপনি যত ফেসবুকে আপনার বন্ধুদের সাথে তর্ক-বিতর্ক করবেন ওদিকে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলোও তাদের বিজ্ঞাপন ফেসবুকে দিতে বেশি উৎসাহী হবে।
বছরের প্রথমার্ধ্বে ফেসবুকের আয় ৫০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছিল। তখন এর নেট আয় ২০০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়। বৃহস্পতিবার পুরো মার্কেটে ধ্বস নামলেও ফেসবুকের স্টক স্বউচ্চ ছিল। অ্যাপল, টুইটার গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট বছরের প্রথমার্ধ্বে ভালো সূচনা না করতে পারলেও একমাত্র ফেসবুক যার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির অবনতি হয়নি। ফেসবুক ভালো করছে কারণ সারা বিশ্বজুড়েই বড় বড় মৌলিক স্পট আছে এটির। আর এগুলো গুগলের থেকেও বড়।
ফেসবুক থেকে গুগল নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে সেরা। সিমিলার ওয়েবের সূত্রানুসারে, মার্চ মাসে ফেসবুকের ২৯.৫ বিলিয়ন ভিজিটর থেকে গুগলের ৩২.৩ বিলিয়র ভিজিটর ছিল। তাছাড়া মার্চের শেষ অব্দি ১২ মাসজুড়ে গুগলের লভ্যাংশের পরিমাণ ছিল ৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সেখানে ফেসবুকের ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অপেক্ষকৃত কম ছিল। তবে প্রতিষ্ঠানদ্বয় বিজ্ঞাপন থেকে বেশি টাকা আয় করে থাকে।
তবে মানুষ ফেসবুকে বেশি সময় পার করে থাকে। সিমিলার ওয়েবের প্রতিবেদন অনুসারে, পুরো মার্চ মাস জুড়ে ইউজাররা ফেসবুকে গড়ে ১৭ মিনিট সময় ব্যয় করেছে। অথচ গুগলে তার পরিমাণ ঠিল ৯ মিনিট। এ জরিপ থেকে বোঝা যায়, মানুষজন কোন সাইটে কতোটা সক্রিয়।
গুগল অনেকদিন ধরেই অনলাইন বিজ্ঞাপন থেকে প্রচুর আয় করেছে। কারণে বেশিরভাগ ইউজারই কোন কিছু ইন্টারনেটে খোঁজার সময় বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে ক্লিক করে থাকে। তবে ফেসবুক ইউজাররা কোন কিছু কেনার জন্য নেটওয়ার্কে থাকেন না তাই ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য অবশ্যম্ভবী হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফেসবুকের আরেকটি উপকারিতা হলো এটি গুগলের থেকে অনেক সস্তায় ব্যবহাার করা যায়। যার ফলে খুব সহজেই ডলায় আয় করতে পারে সাইটটি। মার্চ মাস পর্যন্ত বিগত বছরে ফেসবুকের অপারেটিং লভ্যাংশ রেভেনিউয়ের ৩৭ শতাংশ ছিল। সেখানে গুগলের ছিল ২৬ শতাংশ। তবে অদূর ভবিষ্যতে যদি নতুন কোন নেটওয়ার্ক অনলাইন জগতে প্রবেশ করে এবং ইউজাররা তাতে মত্ত হয় তবে ফেসবুকের লাভ পড়তে থাকবে। তবে সেরকম কোন হুমকি এখনও পর্যন্ত আসেনি। তবে সে পর্যন্ত ফেসবুক ব্যবহারের মাধ্যমে মার্ক জাকারবার্গকে সম্পদশালী করতে থাকব আমরা।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া