পরিবহন ধর্মঘটে অচল হয়ে পড়েছে খুলনা বিভাগের ১০ জেলা। রোববার (১৫ মে) ভোর ৬টা থেকে শুরু হয়েছে ৪৮ ঘণ্টার এ পরিবহন ধর্মঘট। শেষ হবে মঙ্গলবার(১৭ মে) ভোর ৬টায়।
মানিকগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় মিশুক-তারেকের মৃত্যুর ঘটনায় ক্ষতিপূরণ আদায়ের মামলা প্রত্যাহারসহ তিন দফা দাবি আদায়ের লক্ষে ঘোষিত সাতদিনের আল্টিমেটাম সরকার মেনে না নেওয়ায় সড়ক পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এ ধর্মঘটের ডাক দেয়।
এদিকে, ধর্মঘটের কারণে দ্বিতীয় দিন সোমবারও (১৬ মে)অসহনীয় দুর্ভোগে পড়েছেন এ বিভাগের সাধারণ মানুষ। দূরপাল্লার যাত্রীরা জরুরি প্রয়োজনে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে গন্তব্যে যেতে পারছেন না। অনেকে বাড়ি ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, খুলনা বিভাগের সর্ব বৃহৎ বাস টার্মিনাল সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনাল থেকে ঢাকাসহ দূরপাল্লার কোনো গাড়ি ছেড়ে যায়নি। অনেক যাত্রীকে টার্মিনালে গিয়ে ফিরে যেতে দেখা গেছে। প্রচণ্ড তাপদাহের মাঝে পরিবহন ধর্মঘটে যাত্রীদের দুর্ভোগকে চরম পর্যায়ে নিয়ে গেছে।
দূরপাল্লার পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ রুটে কোনো বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, ট্যাংকলরি চলাচল করছে না।। তবে, নগরীতে ইজিবাইক চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ এমনিতেই গরমে অনেক কষ্ট করে প্রতিদিন কর্মস্থলে পৌঁছাতে হয়। তার ওপর পরিবহন ধর্মঘট ভোগান্তি আরও বেশি বাড়িয়ে দিয়েছে। তিনগুণ বেশি ভাড়া দিয়ে ভ্যান ও মোটরসাইকেলে কর্মস্থলে পৌঁছাতে হচ্ছে। পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চল কমিটির সদস্য সচিব আব্দুর রহিম বকস দুদু সকাল ৯টা ৪৪ মিনিটে বলেন, ৩ দফা দাবি আদায়ের লক্ষে ঘোষিত সাতদিনের আল্টিমেটাম সরকার মেনে না নেওয়ায় আমরা এ ধর্মঘট পালন করছি।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার ভোর ৬টায় আমাদের এ ধর্মঘট শেষ হবে। আশা করি এ সময়ের মধ্যে সরকার আমাদের দাবি মেনে নেবেন। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।
এর আগে শনিবার সংবাদ সম্মেলনে পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় কমিটির সদস্যসচিব আব্দুর রহিম বক্স দুদু তিন দফা দাবিতে এ ধর্মঘটের ঘোষণা দেন।
৩ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে- সড়ক দুর্ঘটনায় তারেক মাসুদ ও মিশুক মুনীরসহ ৫ জন নিহতের ঘটনায় দায়েরকৃত মামলার বিচার কাজ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে শেষ করতে হবে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে ক্ষতিপূরণ চেয়ে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ওই মামলায় ৭ কোটি ৭৬ লাখ ২৫ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।
মামলা বর্তমানে হাইকোর্টে বিচারাধীন। এছাড়াও গ্রিন লাইন পরিবহনের নামে সিলেট জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দায়ের করা মামলাটি প্রত্যাহার করতে হবে।