বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া উৎসব অলিম্পিক ২০১৬ এর আয়োজক ব্রাজিল। এ আয়োজনের বাকি আর দু’ মাসেরও কম। এরই মধ্যে হাজার হাজার ক্রীড়ামোদি রিও ডি জেনিরোতে জমায়েত হতে শুরু করেছেন। কিন্তু একটি বস্তিতে ১৬ বছর বয়সী একটি বালিকাকে গণধর্ষণের ঘটনায় এ শহরের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। অভিযোগ করা হয়েছে, ওই বালিকা গত রোববার সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতে পায় তাকে ঘিরে রেখেছে ৩৩ জন পুরুষ। তাদের হাতে পিস্তল ও রাইফেল। তারা তাতে গণধর্ষণ করে। এ ঘটনা প্রকাশ পাওয়ার পর বিক্ষোভে ফেটে পড়েছে নারী অধিকারকর্মী, মানবাধিকার কর্মী ও সাধারণ মানুষ। মিডিয়ার রিপোর্টে বলা হয়েছে, ওই বালিকার ওপর নৃশংসতা শুরু হয় শুক্রবার রাতে। ওই রাতে সে তার প্রেমিকের বাড়িতে ছিল। সেখানেই রোববার সকালে ঘুম থেকে উঠে তার চারপাশে ওই পুরুষরূপী নরপিশাচদের দেখতে পায়। তারা ওই বালিকার ওপর ৩৬ ঘন্টারও বেশি আদিম লালসা চরিতার্থ করে। এক পর্যায়ে তার ঠাঁই হয় একটি হাসপাতালে। সেখান থেকে সে গত বৃহস্পতিবার বেশ কয়েবকার পালাতে চেষ্টা করে। হাসপাতালের স্টাফদের অনুনয় জানিয়েছে, আমি বাড়ি ফিরতে চাই।
এ ঘটনায় দক্ষিণ আমেরিকার এই বৃহৎ দেশটিতে এক ধরণের হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ নিয়ে খবর প্রকাশের পর বুধবার পাবলিক প্রসিকিউটর অফিসের সঙ্গে হটলাইনে যোগাযোগ করেন কমপক্ষে ৮০০ মানুষ। এতে তারা ওই বালিকার ওপর নরপিশাচদের নৃশংসতার বর্ণনা দেন। তারা নির্যাতিতার ছবি ও ভিডিও প্রকাশ করেন। বলা হয়, ওই বালিকাকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে বিবস্ত্র করে ফেলা হয়। নির্যাতিত ওই বালিকা এখন একটি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে। তাকে কাউন্সেলিং দেয়া হচ্ছে। তার ওপর এমন নির্যাতনে তার দরিদ্র পরিবার ভেঙে পড়েছে। তার পিতা একটি মিডিয়ার কাছে কান্নায় ভেঙে পড়েন। বলেন, আমার মেয়ে এখনও কাঁদছে। সে ভয়ে কেঁপে কেঁপে উঠছে। তারা আমার মেয়েকে শেষ করে দিয়েছে। তাকে তো তারা প্রায় হত্যা করেছে। কষ্টে আমার বুক ভেঙে যাচ্ছে। বালিকাটির দাদি কথা বলেছেন স্থানীয় একটি রেডিও স্টেশনের সঙ্গে। তিনি বলেছেন, নির্যাতন চালানোর সময় অচেতন হয়ে পড়েছিল সে। এ সময় যে ভিডিও ধারণ করা হয়েছে তা বেদনাদায়ক। আমি এটা দেখেছি। এটা দেখার মতো নয়। এ নিয়ে তীব্র প্রতিবাদের মুখে পুলিশ ওই বালিকার ২০ বছর বয়সী প্রেমিক সহ চারজনকে আটক করেছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, ১৮ বছর বয়সী তাদের একজন বালিকাটির নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে পোস্ট করেছে। ২৪শে মে বাড়ি ফিরে যায় বালিকাটি। এ সময় তার পরিবার বুঝতে পারে কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। তার এক প্রতিবেশী বলেন, সে বাড়ি ফিরেছে খালি পায়ে। তার মুখচোখ ছিল বিধ্বস্ত। পোশাক ছিল ছিন্নভিন্ন। হয়তো তারা তাকে নগ্ন করে ফেলেছিল। তাই সে হাতের কাছে যা পেয়েছে তাই পরে চলে এসেছে। তার নগ্ন ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়ার পর ২৫শে মে তার পরিবার ধর্ষণের ঘটনা জানতে পারে।