ইসলাম নিয়ে যে সন্দেহ, সংশয় তা দূর করতে চান লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র সাদিক খান। তিনি পবিত্র রমজানে এ জন্য গ্রহণ করেছেন বেশ কিছু পদক্ষেপ। আগামীকাল মঙ্গলবার থেকে লন্ডনে শুরু হচ্ছে রমজান। তিনি বলেছেন, এটা হবে মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি গ্রেট সুযোগ। এর মাধ্যমেই ধর্মকে কেন্দ্র করে যে সন্দেহ আছে তা দূর করতে হবে। পবিত্র রমজানের এক মাস ধরে তিনি সিনাগগ, চার্চ ও মসজিদগুলোতে ইফতার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গত মাসে তিনি লন্ডনের মেয়র নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর সহনশীলতা ও বহুত্ববাদী সংস্কৃতির এক প্রতীকে পরিণত হয়েছেন। তবে তিনি নিজেকে শুধু একজন মুসলিম হিসেবে পরিচিতি দিতে চান না। তিনি একই সঙ্গে পরিচয় দিতে চান একজন লন্ডনার হিসেবে। এ বিষয়ে তিনি গার্ডিয়ান পত্রিকায় একটি প্রবন্ধ লিখেছেন। তাতে তিনি লিখেছেন, আমি নিজেকে একজন মুসলিম রাজনীতিক বলি না। আমি মুসলিম মুখপাত্র বা নেতা নই। তবে এটা পরিষ্কার করা গুরুত্বপূর্ণ যে, আপনাকে আপনার ধর্মবিশ্বাস দিয়ে ব্যাখ্যা দেয়া হয়। তিনি লিখেছেন, আমাদের সবারই আছে অনেক পরিচিতি। আমি একজন লন্ডনার, একজন সন্তান, একজন পিতা। সিটি হল কোন যাজক সম্প্রদায়ের স্থান নয়। তবে তিনি পবিত্র রমজান মাস নিয়ে সচেতন। এই রমজানেই তিনি মুসলিম ও ইসলাম নিয়ে যে সংশয় আছে তা দূর করতে চান। ইসলামে বিশ্বাস করা হয়, রমজানে কাউকে ইফতার করালে রোজাদার ও যিনি ইফতার করালেন তিনি সমান সওয়াব পাবেন।
সাদিক খান বলেছেন, লন্ডনের মতো একটি শহরে ১০০০ বছর ধরে রয়েছে মুক্ত ব্যবসা বাণিজ্য, বিভিন্ন ধ্যান ধারণা, মানুষ, সংস্কৃতি। এখানে অনেকেই এমন কাউকে চেনেন কাজ করার মাধ্যমে বা বন্ধুদের মাধ্যমে, যিনি এক মাস ধরে রোজা রাখেন। তাদেরকে জিজ্ঞাসা করুন তারা কিভাবে এটা করতে পারেন। আমার তো অনেক বন্ধু আছেন। তারা আমার সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করতে খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। সব সময় তারা সারাদিন খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন না। তবে এটা একটি বিনয়ী আচরণ। তিনি বলেন, এ বছর রোজা রাখা কঠিন হবে। কারণ, দিনের ব্যাপ্তি ১৯ ঘন্টার মতো। রমজানে রোজা রাখা সত্ত্বেও তাকে করতে হবে অনেক কাজ। কবে কি কাজ করতে হবে তার তালিকায় ডায়রি পরিপূর্ণ। সাদিক খান বলেন, রমজানেও আমার ডায়রি পরিপূর্ণ। আমাদেরকে ইউরোপিয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে আসা না আসা নিয়ে গণভোট করতে হবে। ফলে এমনও হতে পারে কোন অনুষ্ঠানের মঞ্চেই এক গ্লাস পানি দিয়ে আমাকে ইফতার করতে হবে। গত বছর রমজানে আমরা বেছে বেছে কিছু প্রচারণামুলক কাজ করেছি। কিন্তু এবার রোজা রাখা অবস্থায় অনেক কাজ করতে হবে। তবু এটাই জীবনের অংশ। জীবনধারার সঙ্গে একে মিলিয়ে নিতে হবে।