অামি বাঙালী, অামি গর্বিত। সোহরাওয়ার্দী, শের-ই-বাংলা, ভাসানী, বঙ্গবন্ধু- এ মাটির সন্তান, যাঁদের ত্যাগ, দেশপ্রেম প্রশ্নাতীত। জাতি হিসাবে কত বিশেষণ আমাদের- বীর, সাহসী, লড়াকু। একটিও মিথ্যে নয়, শুনে মুগ্ধ হই। তবে যদি এমন হতো ‘ঘুষ, দুর্নীতি, চুরি’ নেই তবে কেমন হতো প্রিয় স্বদেশের রূপ, অার্থ-সামাজিক পরিস্থিতি? বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সাথে কি মিলতো? আছি সুদিনের আশায়।
এক সময় বন্দী ছিলাম বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদের কাছে। দেশ আমাদের, মাটি আমাদের, আকাশ-বাতাস, সাগর-নদী সব আমাদের। তবু অামরাই ছিলাম বঞ্চিত-লাঞ্ছিত। পায়ের তলার মাটির মালিক বৃটিশ রাজপরিবার। দু’শো বছর পর শাসক পাল্টেছে মাত্র, পড়েছি নতুন বেনিয়ার হাতে। শুরু নতুন লড়াই, বাঁচার লড়াই, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই। হায়রে দুর্নীতি!! দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই অাজো শেষ হলোনা !!
পাকিস্তানীদের বিরুদ্ধে অামাদের অভিযোগের অন্ত ছিলনা। পৃথিবীতে সবচেয়ে ঘৃণ্য শাসক ও শাসনব্যবস্থা পাকিস্তানের। কিন্তু কার ক’টা মাথা যে তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়? হ্যা, যত জটিল অঙ্কই হোক, সমাধান তো অাছেই। জাতির ভাগ্যাকাশে ত্রাতার ভুমিকায় উদয় হলেন শ্রেষ্ঠ বাঙালী বঙ্গবন্ধু। অামরা মুক্ত ও স্বাধীন হলাম। কিন্তু যে সুনীতি, সুব্যবস্থার প্রত্যাশায় ছিলাম তার কতটুকু পুর্ণ হলো? না হলে, অার কবে হবে?
সমাজে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তরা সমাজপতি সেজে বসেছে যার ফলে সুনীতি নির্বাসিত। সমাজের চরিত্রবান, ভালো মানুষটি সভা-সমিতির সামনের চেয়ারটি পান না। উশৃঙ্খল, বখাটেরা দাপিয়ে বেড়ায়, দখলে নেয় মাঠ-ঘাট, পুকুর-ডোবা, খাল-বিল। আগ্নেয়াস্ত্রের যত্রতত্র ব্যবহারে শংকিত হই, ম্রিয়মাণ থাকি। অফিস-আদালতে টু-পাইস না দিলে ভদ্রলোকের ফাইল নড়ে না। এমনটি কি প্রত্যাশা ছিল? মুক্তিযুদ্ধের এটাই চেতনা?
হায় বঙ্গবন্ধু, তুমি বিশ্বস্ত তাজউদ্দিন, সৈয়দ নজরুল, কামারুজ্জান, মনসুর অালীর অার্তনাদ শোন? তুমি কি দেখতে পাও তোমার পঁচানব্বই ভাগ গরীব-দুঃখী মানুষের ঘামের ফসল উঠছে পাঁচভাগ মানুষের ঘরে? ইউনিয়নের তহশীল অফিস থেকে সচিবালয়ের ঠান্ডা ঘর অবধি বিস্তৃত দুর্নীতির ডালপালা। এসব কবে ছেঁটে দিতে পারবে বাঙালী? কবে নির্মান হবে সত্যিকারের সোনার বাংলা? দুর্নীতি মুক্ত বাংলার চেহারাটি দেখতে কেমন হবে? অাদৌ হবে কি, আশায় রইলাম।।
জয়বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।।