মার্কিনী নির্বাচন বরাবরই বিশ্ব রাজনীতি ও মিডিয়ার আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু। এবার সে মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে একজন নারী ও একজন উদ্দাম বাক-বিলাসী প্রার্থীর জন্য। ফলে এই নির্বাচন বিশেষ দ্যোতনা সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে ট্রাম্পের প্রতি রাশিয়ার প্রত্যক্ষ সমর্থনও আলোচনার পালে হাওয়া দিচ্ছে। IS, ওবামা-হিলারীর ভুল নীতির ফসল বলেও ভাবে রাশিয়া তাই ট্রাম্পের পক্ষে প্রকাশ্যে অবস্থান।
ঘোষিত বা অঘোষিত যেভাবেই বলি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর একমাত্র পরাশক্তি। পৃথিবীতে নানামুখী মেরুকরণ চলছে মার্কিন নির্বাচনকে ঘিরে। এ নির্বাচন যেন শুধুমাত্র আমেরিকার নয়, বিশ্ব নির্বাচন। ষাটের দশকে পৃথিবীর হর্তাকর্তা ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মস্কোর আগের সক্ষমতা না থাকলেও গুরুত্ব কমেনি। রাশিয়ার ধারনা হিলারী জয়ী হলে মধ্যপ্রাচ্য সংকট আরো ঘনীভূত হবে, যা সামাল দেবার পর্যায়ে না-ও থাকতে পারে।
সে যাই হোক, ইতোমধ্যে নির্বাচনের চেহারাটি দাড়িয়েছে সম্মুখ সমরের মতো। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে নির্বাচনী প্রচারনা জমে ক্ষীর। শেষ জরীপে হিলারী ট্রাম্পের চেয়ে ৬ পয়েন্ট এগিয়ে। দুই দলের প্রার্থী বাছাই শেষে কিন্তু দু’জনের খুব একটা ব্যবধান ছিলনা। হিলারীর বাড়তি সুবিধা এই যে, আমেরিকার ইতিহাসে তিনি প্রথম নারী প্রার্থী। আর ট্রাম্পের সমস্যা তাঁর ব্যাক্তিগত আচরন, তার জিহ্বা। অসংযমী বাক তাকে ব্যাকসিটে নিয়ে গেছে।
মার্কিনীরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশকে দিয়েছে অনেক কিছুই তবে অকারনে বা বিনাস্বার্থে নয়। খোলা চোখে মনে হবে ইসরাইলের সাথে সম্পর্কে কোনো বিনিময় নেই, তা মোটেও নয়। মধ্যপ্রাচ্যের কর্তৃত্ব রক্ষায় ইসরাইলকে সমর্থন দেয়। মধ্যপ্রাচ্যের তেল সম্পদ এবং কর্তৃত্বের জন্য ইসরাইলকে প্রয়োজন। বর্তমান ওবামা প্রশাসনও এর ব্যতিক্রম নয়। ইসরাইলও আমেরিকা বলতে অজ্ঞান, তা ক্ষমতায় রিপাবলিকান বা ডেমোক্রেট যেই আসুক।
সবশেষে বলা যায়, নির্বাচনটি যতটা বর্ণময় ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপুর্ন হতে পারতো আপাতত তেমনটি মনে হচ্ছে না। আগামীকালের কথা ভিন্ন। ট্রাম্পের অনিয়ন্ত্রিত কথা-বার্তা তাকে অনেকটা পেছনে ঠেলে দিয়েছে। এমন কোনো বিষয় নেই যা নিয়ে ট্রাম্প বিতর্ক সৃষ্টিকরেনি। নারী, অভিবাসী, সংবাদপত্র সব বিষয়ে কথা বলে তার নিজ দলেও আতঙ্ক তৈরী করেছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে হিলারীর এক পা হোয়াইট হাউজে ঢুকে গেছে।