শ্বাসরুদ্ধর চট্টগ্রাম টেস্ট জয়ের দারুণ সম্ভাবনা থাকলেও, শেষ পর্যন্ত ইতিহাস গড়া হলো বাংলাদেশের। স্বপ্ন জয়ের খুব কাছে গিয়েও ২২ রানে হারতে হলো ইংল্যান্ডের কাছে। স্নায়ুচাপের এই জয়ে দুই ম্যাচ সিরিজে ১-০’তে এগিয়ে গেলো ইংলিশরা।
২৮৬ রানের টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে স্বাগতিকদের ইনিংস থামে ২৬৩ রানে। এ হারের জন্য প্রথম ইনিংস স্বল্প রানের আক্ষেপ বাংলাদেশ অধিনায়ক মুশফিকের।
অন্যদিকে, জিতেও বাংলাদেশের দারুণ প্রশংসা করলেন ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক।
চট্টগ্রামের স্নিগ্ধ এক সকাল। ইংলিশ বিপক্ষে রূপ কথা। নয়তো অনেকটাই ২০০৩-এ মুলতান টেস্টের মতো কষ্টের সাথে সন্ধি। শেষের ২ উইকেটে ৩৩ রান পাহাড় সমান ক্রিকেট জ্যোতিষীর কাছেও। তারপরেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আরাধ্য টেস্ট জয়ের স্বপ্ন কোটি ক্রিকেট পিয়াসির হৃদয়ে।
এদিন সকালের দুই স্বপ্ন সারথি সাব্বির আর তাইজুলের ব্যাটিং স্বপ্ন জয়ের সিঁড়ি তৈরি করে। কিন্তু, বেন স্টোকসের এক ওভারের আগুনে পোড়া বাড়িতে পরিণত হয় বাংলাদেশের ড্রেসিং রুম। ভেস্তে যায় স্বপ্ন জয়ের স্বপ্ন। বাংলাদেশ পুরো টেস্ট দারুণ খেলেও, হারের প্রধান কারণ হলো। ব্যাটিংয়ে প্রথম ইংনিসে পিছিয়ে পড়া।
আমাদের প্রথম ইনিংসটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। সেখানে আমরা লিড নিতে না পারলেও, অন্তত ২৮০/২৯০ যদি করতে পারতাম, কারণ তারা তাদের দ্বিতীয় ইনিংসে ২৪০ করেছে যেখানে আমরা করেছি ২৬৩। তাই আমি মনে করি ওই রানটাই এখানে নির্ধারক হয়েছে।’ বলছিলেন মুশফিক।
গেলো ১৫ মাসে টেস্ট খেলেনি টাইগাররা। আর এই সময় ১৭টি টেস্ট খেলেছে ইংলিশরা। কিন্তু তারপরেও চট্টগ্রাম টেস্টে ইংল্যান্ডের টুটি যেভাবে চেপে ধরেছিলো বাংলার বাঘেরা তাতে নিজেদের জয়ের অনুভুতি থেকে বাংলাদেশের প্রশংসায় বাধ্য হলেন অতিথিদের অধিনায়ক।
‘দীর্ঘ দিন টেস্টে বাইরে ছিলো বাংলাদেশ। নিয়মিত টেস্ট না খেলেও, দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়েছে তারা। সত্যি অসাধারণ টেস্ট হলো চট্টগ্রামে। বাংলাদেশ শুধু ওয়ানডেতেই না টেস্টেও ধারাবাহিকভাবে উন্নতি করছে। আশা করছি ঢাকায় আবারো উপভোগ্য টেস্ট হবে।’ এভাবেই টাইগারদের প্রশংসায় ভাসালেন ইংলিশ অধিনায়ক অ্যালিস্টার কুক।
মুশফিকের দল প্রত্যাশার প্রাপ্তি মেলাতে পারে নি ঠিক। তবে টেস্টে যে বাংলাদেশের উন্নতির গ্রাফ বেশ ঊর্ধ্বমুখী। কারণ গেলো ১৫ টেস্টে ৩ জয় ৭ ড্র হার ৫টি টেস্টে। যার মধ্যে সম্প্রতি পাকিস্তানের পর ইংল্যান্ডকে কাঁদিয়েছে টাইগাররা।
‘আমার দু’টা টেস্ট সবসময় মনে থাকে, তার মধ্যে একটা হলো খুলনায় পাকিস্তানের বিপক্ষে আমরা ড্র করেছিলাম যেটি আমার কাছে এখনো এক নম্বরে তারপর যদি বলতে হয় এটা সেরা টেস্টগুলোর মধ্যে একটি।’ এভাবেই নিজেদের খেলার মূল্যায়ন করছিলেন টাইগার অধিনায়ক। ১৫ মাস পর বাংলাদেশ কি খেলতে পারে সেটা প্রমাণ করাও দলের ওপর চাপ ছিলো বলেও মনে করেন মুশফিক।
চট্টগ্রামে উত্তেজনার রেণু ছড়ানোর পর ২৮ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া ঢাকায় সিরিজে শেষ টেস্টে হয়তো আরো রোমাঞ্চ অপেক্ষা করছে।