একাত্তরের মার্চের প্রথম দিন থেকেই উত্তাল হয়ে ওঠে ঢাকার রাজপথ। উড়ানো হয় স্বাধীন বাংলাদেশের মানচিত্র খচিত পতাকা। এর পরই ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তার ঐতিহাসিক ভাষণে পুরো জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত হওয়ার আহ্বান জানান। সব দ্বিধা ঝেড়ে ফেলে চূড়ান্ত লড়াইয়ের জন্য প্রস্তুত হয় এ দেশের মানুষ।
বেলা সোয়া ৩টার কিছু পর ধানমণ্ডি ৩২ এর বাড়ি থেকে রওনা দিয়ে তৎকালিন রেসকোর্স ময়দান যা আজকের সোহরাওয়ার্দি উদ্যান জনসভায় পৌঁছান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। দলের ভেতর থেকে স্বাধীনতা ঘোষণার চাপ আর তা করলে ইয়াহিয়ার জান্তা সরকারের তরফ থেকে হামলার হুমকি দারুন এক সংকটের ক্ষণ ছিল সেটি।
১৮ মিনিট ৩১ সেকেন্ডের সেই ভাষণ ছিল বঙ্গবন্ধুর সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত কিন্তু শ্রেষ্ঠ ভাষণ। ভাষণকে দুটি অংশে ভাগ করেছিলেন। প্রথম অংশে রাজনৈতিক সংকট সমাধানের জন্য নিয়মতান্ত্রিক গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এগুনোর জন্য চারটি শর্ত দিয়েছিলেন। তা মানা না হলে কি করতে হবে তা বললেন দ্বিতীয় অংশে।
বাঙালি জাতির ইতিহাসের ক্রান্তিকালে ভবিষ্যতের দিক নির্দেশা দেয়ার সবচেয়ে কঠিন কাজটি বঙ্গবন্ধু করেছিলেন সেই মঞ্চে আর সে কারণেই ওই ভাষণ আজও অমলিন।
বিশ্লেষকরা বললেন, সেদিন সরাসরি স্বাধীনতার ডাক দিলে বিচ্ছিন্নতাবাদী বলে বিবেচিত হতেন শেখ মুজিব। তবে সেই ডাকের পরই এদেশের মানুষ সশস্ত্র সংগ্রামে প্রস্তুত হতে থাকে।
ভাষণে মোট তিনবার মুক্তির কথা বলেছিলেন বঙ্গবন্ধু যা আজকের দিনের স্বাধীনতা ঘোষণার দিন তারিখের বিতর্কের অনেক ঊর্ধ্বে।: