২০১৫ সালে বাংলাদেশে আসার কথা ছিল অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের। কিন্তু সে সময় নিরাপত্তা ঝুঁকির অজুহাতে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ পিছিয়ে দেয় ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ)। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালের শুরুতে বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত অনূর্ধ্ব-১৯ যুব বিশ্বকাপেও দল পাঠায়নি তারা। অবশ্য এবার তারা আসতে চায় বলেই ফের নিরাপত্তা প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে তোড়জোড় করা হচ্ছে। মূলত হলি আর্টিজানে হামলার মতো ভয়াবহ ঘটনার পরও গত বছর ইংল্যান্ড দারুণভাবে একটি সফর শেষ করেছে। সেই সময়ও বাংলাদেশে উপস্থিত ছিল অস্ট্রেলিয়ার নিরাপত্তা প্রতিনিধি। তখন থেকে তাদের আসার সম্ভাবনার কথাও শোনা যাচ্ছিল। তা নিশ্চিত করতেই নিরাপত্তা প্রতিনিধি শন ক্যারলকে আরেক দফায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনি এসেই গতকাল ছুটে বেড়িয়েছেন অস্ট্রেলিয়া হাইকমিশন থেকে শুরু করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পর্যন্ত। বৈঠক করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীসহ দেশের সব নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে। এরপর সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এর আগে ইংল্যান্ড দলকে যে নিরাপত্তা দেয়া হয়েছিল, সেটা দেখে আমি খুবই সন্তুষ্ট। নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে নিশ্চিত হতে এসেছি আমি।’ আজও সারা দিন ঘুরে প্রস্তাবিত নিরাপত্তা পরিকল্পনার গভীরতা পরখ করবেন তিনি।
আগামী আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বাাংলাদেশের সঙ্গে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আসার কথা অস্ট্রেলিয়ার। সিরিজটি নিশ্চিত করার আগে নিরাপত্তা বিষয়ে রুটিন পর্যবেক্ষণে এসে গতকাল সকালে অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছেন ক্যারল। পরে দুপুরে পুলিশ সদর দপ্তরে গেলে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) তাকে আশ্বস্ত করেছেন, চাইলে ইংল্যান্ড দলকে দেয়া নিরাপত্তার সঙ্গে বাড়তি নিরাপত্তা দেয়া হবে অজি ক্রিকেট দলকে। তবে বাড়তি নিরাপত্তা চাননি ক্যারল। বাংলাদেশের নিরাপত্তা নিয়ে ইতিবাচক মনোভাবই দেখিয়েছেন তিনি। ক্যারল বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকার ও বিসিবির সঙ্গে কাজ করার কথা ভাবছি। আগস্টে যেন সিরিজটি সফলভাবে হতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করছি। অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের সঙ্গেও বৈঠক করেছি।’
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে ক্যারলের বৈঠকের সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন বিসিবির সিইও নিজামুদ্দিন চৌধুরী সুজন। সেখানেই তিনি বলেন, ক্যারলের এ সফরটিই শেষ নয়। আরো একবার নিরাপত্তা পরিদর্শনে আসবে তারা। তিনি বলেন, ‘জুলাইয়ের শুরুর দিকে সামগ্রিক সুযোগ-সুবিধা দেখতে ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার প্রতিনিধি দল আবারো বাংলাদেশ সফর করবে। ক্যারলের সঙ্গে থাকবেন ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার আরো কয়েকজন কর্মকর্তা।’ সবকিছু ঠিক থাকলে সফরসূচিও চূড়ান্ত হয়ে যাবে খুব দ্রুত। বিসিবির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, কোরবানি ঈদের আগে প্রথম টেস্ট আর দ্বিতীয় টেস্ট মাঠে গড়াবে ঈদের পরে। ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার কাছে বিসিবির প্রস্তাবিত সূচিও এটি। কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে ১-৩ সেপ্টেম্বরের মধ্যে।
অস্ট্রেলিয়ার এ সফরটি ২০১১ সাল থেকে ঝুলে আছে। ৭ বছর আগেই সিরিজটি শেষ করার কথা ছিল ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার। সেবার তারা মাত্র ৩টি ওয়ানডে সিরিজ খেলে। এরপর দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ নিয়ে শুরু হয় তাদের টালবাহানা। শেষ পর্যন্ত ২০১৫-তে আসার কথা বললেও সেবারও প্রতিনিধি দল পাঠিয়ে নানা নাটকীয়তার পর আসেনি।