বাংলাদেশের মাটিতে হলে আয়ারল্যান্ড নিয়ে তেমন চিন্তার কিছু ছিলনা। কিন্তু ভয়টা যে প্রতিপক্ষ আইরিশরা খেলছে নিজেদের মাঠে। যে কারণে এখানে বড় প্রতিপক্ষ ছিল কন্ডিশন ও উইকেট। তাই শঙ্কা ছিল ভিতরে ভিতরে, কি হয় কি হয় ভেবেই ম্যাচ দেখা শুরু করেছিল টাইগার ভক্তরা। কিন্তু সব শঙ্কা উড়িয়ে বাংলাদেশ জয় তুলে নিয়েছেন দাপটের সঙ্গে। শুরুতে টসে জিতে আইরিশদের ব্যাটিংয়ে পাঠিয়ে বল হাতে ১৮১ রানে বেঁধে ফেলে মাশরাফি বিন মুর্তজা বাহিণী। এরপর ব্যাট হাতে জবাব দিতে নেমে তুলে নেয় ৮ উইকেটের বিশাল জয়। এক কথায় আইসিসির এই সহযোগী দেশটির বিপক্ষে দাপুটে জয়ই তুলে নিয়েছে বাংলাদেশ। সেই সঙ্গে ত্রিদেশীয় সিরিজে ফাইনাল খেলাও প্রায় নিশ্চিত হয়েছে। অবশ্য অধিনায়ক মাশরাফি জয়ের চেয়ে জয়ের ধরণে বেশি খুশি। এ ম্যাচের আগে এমন দাপুটে জয়ই তিনি আশা করেছিলেন। ম্যাচ শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই খুশি। জিতলে সবসময়ই ভালো লাগে। আজ ছেলেরা যেভাবে খেলেছে, সেটিই আমাদের কাছে বেশি তৃপ্তিদায়ক।’
প্রতিপক্ষকে ১৮১ রানে গুটিয়ে ১৩৭ বল বাকি রেখেই ৮ উইকেটের জয়। জয়ের ধরন এমন বলেই মাশরাফি বিন মুর্তজার তৃপ্তি বেশি। বোলাররা যে ভিত গড়ে দিয়েছিলেন, তার ওপর জয়ের সোনালী পথ গড়েছেন ব্যাটসম্যানরা। ব্যাটে-বলে এদিন বাংলাদেশের পারফরম্যান্স ছিল প্রায় পরিপূর্ণ। মাশরাফির কণ্ঠেও সেই ভালো লাগা। ‘ ব্যাটিং- বোলিয় দুটোই ভালো হয়েছে। আমরা শুরুতে উইকেট নিতে পেরেছি, যেটি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আগের ম্যাচে আমরা এটা পারিনি। ব্যাটিংয়ে ওপেনাররা আবারও দারুণ করেছে। ভালো দিক হলো, ছেড়ে না দিয়ে খেলাটা শেষ করে এসেছে। সৌম্য দারুণ ব্যাট করেছে। তামিমও ভালো খেলেছে। এই পারফরম্যান্স, এই আত্মবিশ্বাস এখন পরের ম্যাচ আর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে কাজে দিবে বলে মাশরফি বিশ্বাস করেন।
আয়াল্যান্ডের ছোট লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দারুণ শুরু করে সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল। দু’জনের ওপেনিয় জুটিতে আসে ৯৫ রান। কিন্তু ৫৪ বলে ৪৭ রান করা তামিম ৩ রানের জন্য ফিফটি বঞ্চিত হওয়ার হতাশা নিয়ে সাজঘরে ফিরেন। তবে হাল ছাড়েননি সৌম্য, আগের ম্যাচে ফিফটি করা এই তরুণ ওপেনার এ ম্যাচেও ফিফটি তুলে নেন। ২৭ ম্যাচের ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার ৭ম ফিফটি। সেই সঙ্গে সাব্বির রহমানকে নিয়ে দ্বিতীয় উইকেটে ৭৬ রানের জুটি গড়েন। প্রথম দুই ম্যাচে দুই অংক ছুঁতে নাপারা সাব্বির এই ম্যাচে ৩৪ বলে ৩৫ রান করে দারুণ ভাবে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ জয় থেকে ১২ রান দূরে আউট হন তিনি। অবশ্য এরপর মুশফিক ও সৌম্য মাঠ ছাড়েন জয় নিয়েই। সৌম্য অপরাজিত থাকেন ৬৮ বলে ৮৭ রান করে। ইনিংসটি সাজান ১১ চার ও দুটি ছয়ের মারে। মুশফিক ৩ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে বল হাতে মোস্তাফিজুর রহমান ২৩ রানে ৪টি, মাশরফি ১৮ রানে ২টি, অভিষিক্ত স্পিনার সানজামুল ২২ রানে ২টি করে উইকে পান। এছড়াও সাকিব ও মোসাদ্দেক নিয়েছেন একটি করে উইকেট। এক কথায় ব্যটিং-বোলিংয়ে দারুণ পারফরম্যান্স করেছে টাইগাররা।