ব্যাট হাতে উড়ন্ত ফর্ম দেখাচ্ছেন তামিম ইকবাল। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুই ম্যাচ শেষে সর্বাধিক রানের রেকর্ড তার। তবে তামিম মনে করেন বাংলাদেশ দল সেমিফাইনালের টিকিট না পেলে বাকি সবই বৃথা। আসরের প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের কাছে হার দেখেন টাইগাররা। আর পরের ম্যাচে বৃষ্টিতে খেলা পরিত্যক্ত হওয়ায় অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে বাংলাদেশ। এতে সেমিফাইনালের সুযোগ খোলা বাংলাদেশের সামনে। শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টাইগারদের জয় ও ইংল্যান্ডের কাছে অস্ট্রেলিয়ার হার সেমিফাইনালে পৌঁছে দেবে বাংলাদেশকে। আর নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচে নিজের ফর্ম জারি রাখতে চান তামিম ইকবাল। তিন ফরমেটের ক্রিকেটে বাংলাদেশের ব্যাট হাতে সর্বাধিক রানের মালিক তামিম ইকবাল বলেন, ব্যক্তিগত অর্জনে এখন বিশেষ খুশি হওয়ার কিছু নেই। দল যখন খুব ভালো করতো না, যেমন ধরেন চার বছর আগে, তখন হয়তো এটা ছিল খুশির একমাত্র উপলক্ষ্য। আপনি রান পাচ্ছেন। এখন দল ভালো করছে। আমরা বিশ্বের ষষ্ঠ শীর্ষ ওয়ানডে দল। তবে দল ভালো না করলে এ নিয়েও আনন্দের অবকাশ থাকে না। রান পেলে সবসময়ই ভালো লাগে। আমার সেঞ্চুরি যদি বাংলাদেশকে জয় এনে দেয়, সেটা বিশেষ এক অনুভূতি। মানুষ তা অনেকদিন মনে রাখেন। এবারের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুই ম্যাচে তামিম ইকবালের সংগ্রহ ২২৩ রানে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে ১২৮ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন তামিম ইকবাল। এতে ইনিংস শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ পৌঁছে ৩০৫ রানে। যদিও জবাবে আট উইকেটের সহজ জয়ই পায় ইংল্যান্ড। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে বাংলাদেশের ব্যাট হাতে একাই লড়াই করেন তামিম। বাংলাদেশের ১৮২ রানের ইনিংসে তামিমের অবদান ছিল ৯৫। তবে ব্যক্তিগত এসব অর্জনকে হেলাফেলাও করছেন না তামিম ইকবাল। ওয়ানডেতে অস্ট্রেলিয়া ও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে তামিমের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডও তা। আর কার্ডিফে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচেও ব্যাট হাতে তেমন কিছুই দেখাতে চান বাংলাদেশের বাঁ-হাতি ড্যাশিং ওপেনার তামিম ইকবাল। আসরে নিজের শুরুর দুই ইনিংস নিয়ে তামিম বলেন, বিশ্বের সেরা বোলিং আক্রমণ তাদের। এমন কন্ডিশনে তাদের বিপক্ষে রান পেয়ে আত্মবিশ্বাস বেড়েছে আমার। আমরা একবারে ভিন্ন কন্ডিশনে খেলে অভ্যস্ত। পরেরবার খেলতে এলে আরো ভালো জানবো, এখানে ব্যাট হাতে কিভাবে চাপ সামাল দিতে হয়। আর নিজের কথা বললে, আমি যেভাবে ব্যাট করছি তাতে আমি সন্তুষ্ট। সবচেয়ে বড় কথা আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক ম্যাচ রয়েছে। আমাদের পূর্ণ মনোযোগটা এই ম্যাচের দিকে। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম উইকেটে সৌম্য সরকারের সঙ্গে ৫৬ রানের জুটি গড়েন তামিম ইকবাল। সৌম্য বিদায় নিলে মুশফিকুর রহীমের সঙ্গে গড়েন ১৬৬ রানের জুটি। চলতি আসরের যে কোনো উইকেটে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড এটি। তবে ইনিংসের শেষের দিকে খেই হারায় বাংলাদেশ। শেষ ১০ ওভারে মাত্র ৬৭ রান জমা পড়ে বাংলাদেশের স্কোর বোর্ডে। এতে প্রত্যাশার চেয়ে ৩০ রান কম নিয়ে ইনিংস শেষ করে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাট একই চিত্র দেখান টাইগাররা। ব্যক্তিগত ৯৫ রানে উইকেট দেন তামিম। পরের ১৪ বলে স্কোর বোর্ডে মাত্র ১ রান যোগ করে চার উইকেট খোয়ায় বাংলাদেশ। তার কাঁধেই পুরো দলের বোঝা, এমনটি মনে করেন না তামিম। টাইগার ওপেনার বলেন, আমাদের দলে খুবই দক্ষ ব্যাটসম্যান রয়েছে, যারা আসরে এখনো তেমন রান পাননি। তারা প্রত্যেকেই পরিক্ষীত ক্রিকেটার। তাদের নৈপুণ্য দেখা যাবে সামনে। এটা এক ইনিংসের ব্যাপার। তারা রান পেলে পরের ম্যাচে রান পেলে বুঝবেন আমার খুবই বিপজ্জনক একটা দল। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বশেষ স্মৃতিটা মধুর। ডাবলিনে ত্রিদেশীয় সিরিজে ২৭১ রানের টার্গেটে ৫ উইকেটের সাবলীল জয় কুড়ায় বাংলাদেশ। এতে শ্রীলঙ্কাকে সরিয়ে আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের ষষ্ঠ স্থান দখলে নেয় বাংলাদেশ। ওয়ানডেতে ভিন দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের এটি প্রথম জয়। যদিও ওই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড দলের বাইরে ছিলেন মার্টিন গাপটিল, কেন উইলিয়ামসন, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট, অ্যাডাম মিলনের মতো ক্রিকেটাররা। বিষয়টি মনে আছে তামিম ইকবালেরও। তবে পূর্ণ শক্তির নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের সাফল্যের পরিসংখ্যানটাও মনে করিয়ে দেন তামিম। তিনি বলেন, আমরা তাদের পূর্ণশক্তির দলকে নিজ মাটিতে সহজেই হারিয়েছি। হয়তো আয়ারল্যান্ডে তারা তেমন শক্তিধর দল ছিল না। তাদের বিপক্ষে অতীতে ভালো খেলেছি আমরা। তবে তারা শক্তিশালী একটি দল। দারুণ দক্ষ একাধিক খেলোয়াড় রয়েছে তাদের দলে। তাদের বিপক্ষে ফের সাফল্য পেতে চাইলে আমাদের অনেক ভালো খেলতে হবে। কার্ডিফে মধুর স্মৃতি রয়েছে বাংলাদেশের। ২০০৫-এ কার্ডিফের সোফিয়া গার্ডেন মাঠে শক্তিধর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে জয় কুড়ায় বাংলাদেশ।