শোক দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, “আমি পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, জাতির পিতার হত্যা দিবসে যারা ভুয়া জন্মদিবসের কেক কাটেন, তাদের সঙ্গে আমরা কীভাবে আলোচনায় বসব? কোনো বিবেকবান মানুষ কি পারে? আমাদের অনুভূতি আছে, আবেগ আছে।”
যারা রাজনৈতিক মতবিরোধ নিরসনে আওয়ামী লীগ-বিএনপির শীর্ষ দুই নেতার সংলাপের কথা বলেন তাদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, “দুই নেত্রী একত্রে বসেন না কেন, বসলে সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে- যারা এসব কথা বলেন, তারা বোকার স্বর্গে বাস করেন। যেই নেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিলেন, যেই দলের নেতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকারীদের পুনর্বাসিত করেছে, সেই দলের নেতার সাথে কীভাবে বসি, আপনারাই বলেন?
“সংলাপের জন্য যারা পরামর্শ দেন, তাদের আমি বলব, ১৫ অগাস্টের ভুয়া জন্মদিন পালনে আগে বিরত হোক। তারপর দেখব। এই ভুয়া জন্মদিন পালনের জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চাক, এই প্রতিশ্রুতি দিলে সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি হবে।”
১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট সপরিবারে বন্ধবন্ধুকে হত্যা করে একদল বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা। এরপর ক্ষমতার পালাবদলের এক পর্যায়ে রাষ্ট্রক্ষমতায় আসেন সেনা কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান, যার হাত ধরে গড়ে ওঠে বিএনপি।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতাকে হারানোর দিন ১৫ অগাস্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়। অগাস্টকে শোকের মাস ধরে নানা কর্মসূচি পালন করে আওয়ামী লীগ ও সমমনা সংগঠনগুলো।
অপরদিকে ১৫ অগাস্ট বিএনপি নেত্রীর জন্মদিন পালন ‘ভুয়া ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমূলক’ দাবি করে এর সমালোচনা করে আসছেন আওয়ামী লীগ নেতারা। গত দুই যুগ ধরে ১৫ অগাস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন উদযাপন হলেও তার আরও কয়েকটি জন্মদিনের হদিস পাওয়া যায়। তার জন্মসাল নিয়েও দুই রকম তথ্য রয়েছে।
খালেদা জিয়ার জন্ম ১৯৪৬ সালে বলে তার পাসপোর্টে থাকলেও বিএনপি নেতা গয়েশ্বর রায়ের ভাষ্যমতে, তার নেত্রীর জন্ম ১৯৪৫ সালে।
সমালোচনার মুখে গত বছর ১৫ অগাস্ট খালেদা জিয়ার ‘জন্মদিনের’ কেক কাটা না হলেও তার জন্য মিলাদ মাহফিল হয়।
সভায় বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের এক বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “শরৎ বাবুর (শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়) একটি উপন্যাসে পড়েছি, ‘মানুষের শক্তি যত কমে আসে তার মুখে বিষ তত বেশি হয়’।
“যতই শক্তি কমে আসছে, যতই তারা সংকুচিত হচ্ছে, ততই তাদের (বিএনপির) মুখে…।”
তিনি বলেন, “আজকে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম সাহেব বলেছেন, আওয়ামী লীগ নাকি হিটলার, আওয়ামী লীগ নাকি হিটলারকে অনুসরণ করে। ফখরুল সাহেব গলা উঁচু করে বড় বড় কথা বলে গেলেন।
“মহাসচিব সাহেব হিটলার আমাদের বলেন, পাঁচ বছরে আমাদের ২১ হাজার নেতাকর্মী হত্যা করেছেন। এটা কি ইহুদি হত্যার (হিটলারের হত্যাকাণ্ড) চেয়ে কম ভয়ঙ্কর? আপনারাই তো হিটলার। এদেশে বিএনপি হচ্ছে হিটলারের প্রেতাত্বা, তারা হিটলারের চেয়ে খারাপ।”
বিএনপি আওয়ামী লীগের চেয়ে শেখ হাসিনাকে ‘বেশি ভয়’ পায় বলে মন্তব্য করে ওবায়দুল কাদের।
বঙ্গবন্ধু সমাজ কল্যাণ পরিষদের সভাপতি বাহালুল মজনু চুন্নুর সভাপতিত্বে এই আলোচনা সভা হয়।
সূত্র: BDNEWS24.COM