1. ccadminrafi@gmail.com : Writer Admin : Writer Admin
  2. 123junayedahmed@gmail.com : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর : জুনায়েদ আহমেদ, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর
  3. swadesh.tv24@gmail.com : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম : Newsdesk ,স্বদেশ নিউজ২৪.কম
  4. swadeshnews24@gmail.com : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর: : নিউজ ডেস্ক, স্বদেশ নিউজ২৪.কম, সম্পাদনায়-আরজে সাইমুর:
  5. hamim_ovi@gmail.com : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : Rj Rafi, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  6. skhshadi@gmail.com : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান: : শেখ সাদি, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান:
  7. srahmanbd@gmail.com : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান : এডমিন, সম্পাদনায়- সাইমুর রহমান
  8. sumaiyaislamtisha19@gmail.com : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান : তিশা, সম্পাদনায়-সাইমুর রহমান
ভৈরবের কৃতি সন্তান, ভৈরবের গর্ব রাকিব মোসাব্বির!! - Swadeshnews24.com
শিরোনাম
সোনার দাম আরও কমল রাজধানীতে পানি, স্যালাইন ও শরবত বিতরণ বিএনপির জায়েদ খানের এফডিসিতে ফেরা হবে কিনা, জানালেন ডিপজল কক্সবাজার জেলায় কত রোহিঙ্গা ভোটার, তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট সিনেমা হলে দেওয়া হচ্ছে টিকিটের সঙ্গে ফ্রি বিরিয়ানি ঢাকায় বড় জমায়েত করতে চায় বিএনপি ১৫ বছর পর নতুন গানে জেনস সুমন যশোরে আদালতের নির্দেশ অমান্য করে জমি দখলের অভিযোগ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে মিশা-ডিপজল প্যানেলের জয়লাভ গোবিন্দগঞ্জে অটোচালক দুলা হত্যার মূল আসামি আটক চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু পলাশবাড়ীতে উপজেলা নির্বাচনে অনলাইন মনোনয়নপত্র দাখিলের বিষয়ে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে মতবিনিময় ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিলেই বিএনপি বলে বিরোধীদল দমন’ এবার বুবলী-শাকিবের ‘কোয়ালিটি টাইম’ নিয়ে মুখ খুললেন অপু বাংলাদেশের সফলতা চোখে পড়ার মতো: সিপিডির রেহমান সোবহান

ভৈরবের কৃতি সন্তান, ভৈরবের গর্ব রাকিব মোসাব্বির!!

  • Update Time : শনিবার, ১৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৭
  • ৪৮১ Time View

ছবিতে (বাম থেকে)- বাংলাদেশের ও কলকাতার শিল্পীদের নিয়ে করা রাকিব মোসাব্বির এর “চাই তোকে’ অ্যালবামের বাংলাদেশ সঙ্গীত জগতের তারকাদের সর্ব বৃহত্তম মিলনমেলা “গানমেলা’র মঞ্চে মোড়ক উন্মোচন করছেন- বাংলাদেশের বিখ্যাত গীতিকার শহীদুল্লাহ ফরায়েজী, বাংলাদেশ সিনেমা জগতের নামকরা অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান অনুপম এর মালিক আনোয়ার হোসেন, বাংলাদেশ মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি ও প্রখ্যাত অডিও কোম্পানী লেজার ভিশন এর মালিক আরিফুর রহমান, রাকিব মোসাব্বির, বাংলাদেশ সংগীত জগতের যুবরাজ গায়ক আসিফ আকবর, বাংলাদেশের প্রথম অ্যাভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহিম, লেজার ভিশন এর এমডি মাজহারুল ইসলাম, ক্রিকেটবিশ্বের কনিষ্টতম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান মোহাম্মদ আশরাফুল প্রমুখ।

নতুন প্রজন্মে বাংলাদেশ মিডিয়াতে প্রতিষ্ঠিত খুব কম সংখ্যক মিডিয়া ব্যাক্তিত্ব রয়েছেন যারা সম্ভ্রান্ত ও রয়েল ফ্যামিলি থেকে এসেছেন মিডিয়াতে কাজ করতে। নিজ নিজ অবস্থান থেকে যারা মিডিয়াতে আলোচিত ব্যাক্তি হওয়ার আগেই তাদের স্থানীয় পর্যায়ে পারিবারিক ও বংশমর্যাদার ঐতিহ্য ছিল। তেমনি বাংলাদেশের নামকরা বানিজ্য বন্দরনগরী ভৈরবের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এ প্রজন্মের জনপ্রিয় সংগীত পরিচালক ও সংগীত শিল্পী রাকিব মোসাব্বির। তিনি খুব অল্প বয়সেই মিডিয়াতে তার মেধার সাক্ষর রেখে চলেছেন এক যুগ ধরে। ২০০৭ এর দিকে “যারে আমার মন” গানটি করে শ্রোতাপ্রিয়তা পায় রাকিব মোসাব্বির। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এরপর একের পর শ্রোতাপ্রিয় গান দিয়ে মানুষের মন জয় করতে শুরু করেন তিনি। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। মিডিয়া প্রচারণায় বিমুখ এই তরুণ একের পর হিট গান দিয়ে যান বাংলাদেশ সংগীত জগতকে। এই হিট মেশিন সংগীত পরিচালক বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের জনপ্রিয় ও আলোচিত কয়েকজন সংগীত পরিচালক ও কন্ঠশিল্পীদের মধ্যে একজন। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ও রুটস পর্যায়ের যার গানের রয়েছে অসংখ্য ভক্তশ্রোতা। তিনি ১৯৮৮ সালে ভৈরবের সম্ভ্রান্ত হাজী মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। ভৈরবে রয়েছে তার দাদা ও নানার আভিজাত্যের সুনাম। ভৈরবের নতুন প্রজন্মের অনেকেই রাকিব মোসাব্বিরের পারিবারিক ও বংশীয় ঐতিহ্য সমন্ধে জানতে চায়। এর মূল কারণ তিনি নিজেকে সর্বদা লুকিয়ে রাখতেই পছন্দ করেন। ভৈরবের কৃতীসন্তান হিসেবে রাকিবের বিষয়ে জানার জন্য সাধারণ মানুষের যে ব্যাপক আগ্রহ ও কৌতুহল সেই প্রেক্ষিতে রাকিব মোসাব্বির এর বিভিন্ন অজানা তথ্যের সাক্ষাতকারটি তুলে ধরছেন ভৈরব ইনফো ডটকম এর সম্পাদক আরজে সাইমুর।

 

জনপ্রিয় ও আলোচিত সঙ্গীত পরিচালক রাকিব মোসাব্বির।

#স্বদেশ- আমরা জানি আপনি ভৈরবের সন্তান। ভৈরবে আপনার জন্মস্থান কোথায়?

 

*রাকিব- হ্যা! আমি ভৈরবের সন্তান। আমার জন্মস্থান ভৈরবের জগন্নাথপুর লক্ষীপুর (তাঁতারকান্দি গ্রামে)।

 

#স্বদেশ- আপনার শৈশব কোথায় কেটেছে?

 

*রাকিব- আমার শৈশব ভৈরবেই কেটেছে। বিশেষ করে ভৈরবে আমার দাদার বাড়ি নানার বাড়ি একই পাশাপাশি মহল্লায় হওয়ায় আমার শৈশব কৈশোর আমি ভৈরবেই পার করেছি।

 

#স্বদেশ- আপনি পড়াশোনা কোথায় করেছেন?

 

রাকিব- আমার পড়াশোনার লাইফটা ছিল বৈচিত্র্যময়। আমি ছোটকাল থেকেই ডানপিটে ছিলাম। ছাত্র হিসেবে মেধাবী হলেও পড়াশোনার প্রতি ছিলাম বেশ উদাসীন। আমি ভৈরবের ‘ব-আলী কলন্দর প্রাথমিক বিদ্যালয় (তাঁতারকান্দি), ব্লু-বার্ড কিন্ডারগার্টেন (চন্ডিবের), বাংলাদেশ রেলওয়ে হাই স্কুল(চন্ডিবের), কমলপুর হাজী জহির উদ্দিন স্কুল (কমলপুর), হাজী আসমত কলেজ (কমলপুর) এবং ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল মিউজিক স্কুল এ পড়াশোনা করেছি।

 

#স্বদেশ- আমরা জানি অনেকেই জানে না যে আপনি ভৈরবের সন্তান। অনেকে মনে করে আপনি পুরোপুরি ঢাকার ছেলে। এছাড়া আপনার দাদা ও নানা যে স্থানীয় পর্যায়ের নামিদামী লোক ছিলেন সেটাও বর্তমানে অনেকের অজানা, এ বিষয়ে আপনার মতামত কি?

 

*রাকিব- আসলে আমার দাদা একাধারে ভৈরবে এবং পুরান ঢাকার বংশালে সমান ভাবেই আলোচিত ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। কারণ আমার দাদা গুল্লু হজ্বী ভৈরব বাজার এবং পুরান ঢাকার বংশালে দুই জায়গায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন। যে কারণে ভৈরবে আমাদের পুরো বংশধররা থাকলেও দাদা ব্যবসায়ী হিসেবে ভৈরবের পাশাপাশি পুরান ঢাকার বংশালেও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। আর আমার নানা শুধু মাত্র ভৈরবেই সৌখিন ব্যাক্তি হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আর আমার দাদা-নানা’রা তাদের নিজ আমলে স্থানীয় ভাবে বিখ্যাত হয়েছিলেন। এছাড়া তাদের সময়ে যারা তাদের সুনামের কথা জানতেন, তাদের সিংহভাগ মানুষই পরলোকগমন করেছেন। তাছাড়া অতীত ইতিহাস এখন আর কেউ ঘেটে দেখে না। যে কারণে আমাদের যাদের পারিবারিক ঐতিহ্য ও বংশমর্যাদা রয়েছে আমরা সব কিছু থেকে সরে গিয়ে নিরবে-নিভৃতিতেই থাকি। কারণ যেকোন এলাকার আসল স্থানীয় মানুষেরা হয় সৌখিন ও শান্তিপ্রিয়। আর আমার নিজ শহর ভৈরবে আমার বিষয়ে আমজনতা না জানার কারণ হল জেনারেশন গ্যাপ। কারণ আমার পক্ষে তো সবাইকে বলে বেড়ানো সম্ভব না যে আমি কে, কোন এলাকার ছেলে? তাছাড়া আমার বিষয়ে জানতে গেলে আপনি ইন্টারনেটে সার্চ দিলেই অনেক তথ্য পাবেন। বিশেষ করে উইকিপিডিয়া ও ফেসবুকে বহু আগেই আমার প্রোফাইল আর্ন্তজাতিক ভাবে ভেরিফাইড করেছে। এছাড়া বাংলাদেশের অসংখ্য জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পত্রিকায় বহুবার আমাকে নিয়ে অনেক ফিচার ছাপা হয়েছে ও প্রতিবেদন তৈরি হয়েছে। সেগুলোতে নজর দিলেই আমার বিষয়ে অনেক তথ্য পাবেন। তবে অতীতে পুরান ঢাকায় আমাদের নিজস্ব ব্যবসা ছিল, যদিও এখন সেই ব্যবসা নেই, তবে পুরান ঢাকার বংশালে বর্তমানে আমাদের মালিকানায়  ভিট আছে, সেগুলো এখন ভাড়া দেওয়া আছে। এছাড়া আমার কিছু নিন্দুক রয়েছে যারা আমার বিষয়ে ভাল করে না জেনেই হিংসাপরায়ন হয়ে বিগত কয়েক বছর ধরেই আমার নামে বিভিন্ন মিথ্যে, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন গল্প আমার নামের সাথে জড়িয়ে ভৈরবের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ কাছে ছড়িয়ে দিয়েছে। তাছাড়া এসব টুকটাক মিথ্যে গুজব তারা বিভিন্ন মারফতে মিডিয়াতেও ছড়িয়েছে। এতে করে সবাই তো আর সত্যতা যাচাই করার সুযোগ পাচ্ছে না। যে কারণে হুজুগে সবাই নিন্দুকদের কথায় বিশ্বাস করে আসছে কয়েক বছর ধরেই। আর আপনারা তো জানেন কোন একটা বিষয়ে যখন মিথ্যে গুজব ছড়িয়ে পড়ে, তখন চুপ থাকাটায় বুদ্ধিমানের কাজ। কারণ যে গুজবের সত্যতা নেই, সেই গুজবে কান না দেওয়াই ভালো। আর তাছাড়া আমার কাজের ব্যস্ততায় কে কি বললো সেদিকেও নজর দেওয়ার সময় আমার নাই। আমি সর্বদা নিজের কাজগুলো নিয়েই ভাবি, অন্য কিছু ভাবার সময় আমার নেই।

 

#স্বদেশ- আপনার দাদার সমন্ধে বিস্তারিত যদি কিছু বলতেন?

 

*রাকিব- আমার দাদা মহুরম ‘হাজী গোলাপ মিয়া’ স্থানীয় ভৈরবের ইতিহাসে নামকরা কয়েকজন ব্যবসায়ীক স্থপতির মধ্যে একজন এবং পুরান ঢাকার বংশালের আলোচিত একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। এক সময় আমাদের তামাকের ব্যবসা ছিল। তৎকালীন ভৈরব’সহ আশেপাশের বিভিন্ন জেলাগুলোতে ‘গোলাপ বিড়ি’ ব্যাপক ভাবে জনপ্রিয় ছিল। সেই গোলাপ বিড়ির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন আমার দাদা হাজী গোলাপ মিয়া (গু্ল্লু হজ্বী)। তিনি স্থানীয় ভাবে “গুল্লু হজ্বী” নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধের পূর্বে আমার দাদা গুল্লু হজ্বী ও তার বড় ভাই সিদ্দি হজ্বী (হাজী সিদ্দিক মিয়া) ভৈরবের প্রেসিং ব্যবসার প্রসার ঘটিয়েছিলেন। তৎকালীন তাদেরকে ভৈরবের প্রেসিং ব্যবসার জনকও বলতো অনেকে। এছাড়া আমাদের ঢাকার বংশালে এবং ভৈরব বাজারে আমাদের একাধিক নিজস্ব ভিট ও মার্কেটে ব্যবসা স্থাপনা এখনও রয়েছে। যেখানে আমার বাবা-চাচারা সেসব প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়িত্বে আছেন। লোকের মুখে শুনেছি তৎকালীন আমার দাদা গুল্লু হজ্বী ভৈরবের দাপুটে ব্যবসায়ীদের সাথে চ্যালেঞ্জ করে ভৈরব বাজারে ভিট কিনে সারা ভৈরবে আলোচনায় এসেছিলেন। এছাড়া তৎকালীন ভৈরবের বর্তমান সময়ের নামকরা কোটিপতি ফুল মিয়া হাজী আমাদের ঢাকার বংশালের ভিটে অনেক দিন ব্যবসা করেছিলেন।

 

#স্বদেশ- আপনার বাবার বিষয়ে কিছু বলুন?

 

*রাকিব- আমার বাবা ‘হাজী গোলাম রসুল’ পৈত্রিক সূত্রে তামাক ও প্রেসিং ব্যবসায়ী ছিলেন। কিন্তু সেই ব্যবসা আব্বা সংগত কারণে দাদা মারা যাওয়ার কিছুদিন আগেই বন্ধ করে দেন। পরবর্তীতে আব্বা ভৈরবের ঐতিহ্যবাহী গরু বাজারের ইজারাদার ছিলেন কয়েক বছর, এছাড়া ভৈরব ফেরিঘাটে ছিল আমাদের নিজস্ব মাছের আরত। সেসময় আমি খুব ছোট ছিলাম। ভৈরব ফেরিঘাটে যখন ফেরি চলাচল করত সেই ফেরিঘাটও আব্বা ইজারা নিয়েছিলেন। পরে আব্বার যুবক বয়সেই যখন ডায়াবেটিক ধরা পড়লো তখন আব্বা এসব ব্যবসা গুটিয়ে আমাদের বাড়িতে অনেক বড় গরু ফার্ম দেন। তৎকালীন ভৈরবে আমাদের গরু ফার্মের বেশ সুনাম ছিল এবং আমাদের ফার্মের গরুর খুব চাহিদাও ছিল। তবে আমার আব্বা সর্বপ্রথম ভৈরবের মানুষের কাছে আলোচনায় আসেন আমার দাদার সাথে অল্প বয়সে হজ্ব করতে গিয়ে। কারণ তৎকালীন ভৈরবের মধ্যে আব্বাই প্রথম যিনি খুব অল্প বয়সে হজ্ব করেছিলেন এবং সর্বকনিষ্ঠ হাজী হিসেবে তখন অনেকেই স্থানীয় ভাবে আব্বাকে চিনতেন। সেসময়ে হজ্ব করা ছিল বিশাল ব্যাপার। খুব আভিজত্য ফ্যামিলি ছাড়া তৎকালীন কারো হজ্ব করার সামর্থ্য তেমন ছিল না।

 

#স্বদেশ- এবার আপনার নানা’র ব্যাপারে কিছু বলুন?

 

*রাকিব- আমার নানা মরহুম আব্বাস আলী মোল্লা স্থানীয় ভৈরবের একজন সৌখিন ব্যাক্তি ছিলেন। তিনি ভৈরবের মানুষের কাছে বিলাসিতার জন্য বিখ্যাত ছিলেন। তবে আমার নানার ভাই-চাচারাও সারা ভৈরবে খানদানের জন্য বিখ্যাত ছিলেন। খলিল মোল্লা, জলিল মোল্লা হলেন আমার নানার চাচা, আর বজলুল মোল্লা হলেন আমার নানার বড় ভাই, যাদের নাম এখনও ভৈরবের মানুষের মুখে মুখে আছে। আমার নানা আব্বাস আল্লী মোল্লা ও তার বড় ভাই বজলুল মোল্লা প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের খুব ঘনিষ্টভাজন ছিলেন। এছাড়া আমার আম্মার চাচাতো ভাইয়েরাও ভৈরবের মিডিয়াতে খুবই আলোচিত ব্যাক্তিবর্গ। ভৈরবের সাংবাদিকতায় তুহিন মোল্লা, সুমন মোল্লাকে ভৈরবে কে না চেনে। আর ভৈরবের সংগীত জগতে বীর মুক্তিযোদ্ধা খসরু মোল্লা, লিটন মোল্লা জনপ্রিয় মুখ।

 

#স্বদেশ- আচ্ছা স্থানীয় ভৈরবের এ প্রজন্ম যে আপনার পারিবারিক ও বংশীয় ঐতিহ্য সমন্ধে জানে না, সে বিষয়ে কি আপনার কোন আক্ষেপ আছে?

 

*রাকিব- দেখুন এতে আমার কোন আক্ষেপ নেই। কারণ জেনারেশনের গ্যাপের কারণে এমনটা হয়েছে। আর আমি কলেজ লাইফ শেষ করে ঢাকা মুখী ছিলাম। প্রায় ৭/৮বছর ধরে ভৈরবের সাথে যোগাযোগ কম ছিল। এটা একটা মূল কারণ। তাছাড়া ভৈরবের ইতিহাস ঘাটলে আমার আব্বা এবং আম্মার আত্মীয়ের বংশগত আরও অনেক ব্যাক্তিদের নাম চলে আসবে। এছাড়া আমার অনেক আত্মীয়-স্বজন সারা বাংলাদেশে অনেক বড় বড় অবস্থানে আছেন। কিন্তু তাদের অনেকের সাথেই আমার পরিচিতি নেই। কারণটা হচ্ছে আমি আমার সংগীত সাধনায় খুব নিরিবিলি ও নিজেকে লুকিয়ে রেখে আমার সংগীত ক্যারিয়ার তৈরি করতে ব্যস্ত ছিলাম। আর সাদাসিধা জীবন-যাপনই আমার প্রথম পছন্দ। যে কারণে আমি সব সময় সব কিছুতেই নিজেকে গুটিয়ে রাখতে পছন্দ করি। তাই দেখা যাই আমার অনেক কাছের আত্মীয়ও আমার কাছে পরিচিত কম। কিন্তু আমার আব্বা/আম্মার নাম শুনলেই ঠিকই তারা আমাকে আদর করে দেয়। তবে বর্তমানে ভৈরবে এবং পুরান ঢাকার বংশালে প্রায়ই সময় দিচ্ছি। তাই পুরাতন সম্পর্কগুলো আবারও ফিরে আসছে।

 

#স্বদেশ- আপনার ক্যারিয়ার নিয়ে কিছু বলুন?

 

*রাকিব- ক্যারিয়ার নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। তবে এই বছরে আমার সংগীত ও মিডিয়া ক্যারিয়ারের এক দশক পূর্তি হলো। এছাড়া এই বছরের শেষে আমার সৃষ্টি করা গানের সংখ্যা আড়াই শতকের পার করছে এবং তিনশ’র কোঠার দিকে যাচ্ছে। অ্যালবামের সংখ্যা প্রায় ত্রিশটির উপরে। এ বছরের শেষ নাগাদ এর সংখ্যা বাড়বে। মিউজিক ভিডিওর সংখ্যা পঞ্চাশের কাছাকাছি রয়েছে। এটার সংখ্যা বাড়বে এ বছর।

 

#স্বদেশ- আপনার সংগীত পরিচালনায় বাংলাদেশের এ প্রজন্মের অনেক জনপ্রিয় আর্টিস্টরা তো গান করেছে। তাদের কয়েকজনের নাম যদি বলতেন।

 

*রাকিব- আমার সংগীতে গান করেছে- শ্রদ্ধেয় বাপ্পা মজুমদার, কণা, শফিক তুহিন, সালমা, কাজী শুভ, তৌসিফ, ইমরান, ইলিয়াস, পূজা, নির্জর, পুলক, পারভেজ, মাহাদী, রন্টি, কনিকা, ফারাবি, অয়ন, শোভন, আনিসা, আনিকা, খেয়া, জুই, সাবা’সহ আরও অনেকে।

 

#স্বদেশ- আপনি এই পর্যন্ত যে অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সাথে কাজ করেছেন তাদের নাম বলুন।

 

রাকিব- লেজার ভিশন, গানচিল, সাউন্ডটেক, সিডি চয়েজ, সিডি চয়েজ মিউজিক, ইউফ্যাক্টর, টোন ফেয়ার ইত্যাদি।

 

#স্বদেশ- আপনার মুক্তি প্রাপ্ত ব্যবসা সফল অ্যালবাম কয়টি?

 

* রাকিব- আমার মুক্তি পাওয়া প্রায় সিংহভাগ অ্যালবামই ব্যবসা সফল। তবে অনেক বেশি ব্যবসা সফল হয়েছে এমন অ্যালবামের সংখ্যা ৫ এর অধিক হবে।

 

#স্বদেশ- আপনার সংগীতে করা কিছু জনপ্রিয় গানের নাম বলুন?

 

*রাকিব- যারে আমার মন (রাকিব), চুপি চুপি এলে (রাকিব), পিরিতি (রাকিব), মাধবীলতা (কণিকা), মন পাঁজর (কাজী শুভ), জানি তুমি (শোভন), সুখ পাখি (রাকিব), অতলে অতলে (রাকিব/সাবা), আমার পরাণ (রাকিব/ খেয়া), সাত পাঁকের জীবন (রাকিব/ফারাবি), এই হৃদয়ে (রাকিব ও আনিসা), নন্দিনী (পোলক), তুমি বিহনে (রাকিব), এই বুকেতে (তৌসিফ ও ফারাবী), রোদেলা আকাশ (কাজী শুভ ও পূজা), অবুঝ মন (ইলিয়াস ও নির্ঝর), ভুল বুঝো না (ইলিয়াস ও শশী), ভালবাসা এমনি (রাকিব), বলবো তোকে (রাকিব ও রোশনী), মায়াবতী ময়না (রাকিব), মন পাখি (রাকিব), মনটা ছুয়ে দেখনা (রাকিব ও ফারাবি) প্রভৃতি।

 

#স্বদেশ- আমরা জানি আপনার অনেকগুলো মিডিয়া রিলেটেড প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সেসব প্রতিষ্ঠানের এর কার্যক্রম বিষয়ে কিছু বলুন।

২০১২ সালে নিবেদিতা নাটাঙ্গান এর পক্ষ থেকে বিসিবি নাজমুল হাসান পাপন এর হাত থেকে সংবর্ধনা স্মারক নিচ্ছেন ভৈরবের গর্ব রাকিব মোসাব্বির।

*রাকিব- জ্বী। আমার নিজের বেশ কয়েকটি মিডিয়া প্রতিষ্ঠান রয়েছে। তবে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের বয়স ২/৩বছরের বেশি নয়। সবে মাত্র শুরু করেছি বলতে পারেন। বিগত কয়েক বছর ধরে আমার প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতিষ্ঠা করতে পরিকল্পনা করে যাচ্ছি। যদিও প্রস্তুতি হিসেবে প্রাথমিক অবস্থায় টুকটাক কার্যক্রম শুরু করেছি কেবল। আমার রয়েছে “টোন ফেয়ার” নামে নিজস্ব একটি অডিও কোম্পানী। যেখান থেকে বাংলাদেশ, কলকাতা ও মোম্বাইয়ের নতুন আর্টিস্টদের অ্যালবাম অফিসিয়ালি ভাবে মোবাইল কন্টেইনে মুক্তি দিচ্ছি এবং আগামী বছর থেকে পূর্ণাঙ্গ ভাবে অনলাইনে মুক্তি দেওয়া হবে। আমি প্রতিষ্ঠা করেছি “আরএম এন্টারটেইনমেন্ট” নামে একটি ছোট্ট ফিল্ম প্রডাকশন। যেখান থেকে অনেক মিউজিক ভিডিও নির্মাণ হয়েছে এবং সাম্প্রতিক ইউটিউব ধারবাহিক ও ইউটিউব ফিল্ম বানানো হচ্ছে। এছাড়া “গান টিভি” নামে রয়েছে আমার ভিজুয়াল প্রডাকশনের একটি এন্ড্রোয়েড মোবাইল অ্যাপস। তার পাশাপাশি দশ বছর আগে ভৈরবে তৈরি করেছি আমার নিজস্ব মিউজিক স্টুডিও “আরএম মিউজিক ফ্যাক্টরি”। অতীতে আরএম মিউজিক ফ্যাক্টরির ৪টি শাখা ছিল- ভৈরব, ঢাকা, কলকাতা ও মুম্বাই। তবে বর্তমানে আরএম মিউজিক ফ্যাক্টরির তিনটা শাখা রয়েছে। আর ভৈরবের ইতিহাসে প্রথম মিউজিক স্টুডিও হলো আমার “আরএম মিউজিক ফ্যাক্টরি”। এছাড়া আমার মালিকানায় রয়েছে “নায়াআলো” নামে একটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বাংলা নিউজ পোর্টাল যেটি ইতালী থেকে প্রকাশিত হচ্ছে এবং রয়েছে “ভৈরব ইনফো” নামে আরেকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল, যেটি ভৈরবের প্রথম অনলাইন নিউজ পোর্টাল।

 

#স্বদেশ- আমরা তো জানি আপনি একাধারে একজন কন্ঠশিল্পী, সুরকার, গীতিকার, সংগীত পরিচালক, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার, মিউজিশিয়ান, ভিজ্যুয়াল কালার ডিজাইনার, কলামিস্ট, লেখক, প্রযোজক ও নির্মাতা। তো এতগুলো বিষয় এক সাথে ম্যানেজ করেন কিভাবে?

 

*রাকিব- আসলে সব কিছু ম্যানেজ হয়ে যায়। এর মূল কারণ হল আমার সততা ও ইচ্ছা শক্তি। আপনি কি জানেন, একজন মানুষ সাধারণত ৫০০ মেধার নিউরন নিয়ে জন্মগ্রহণ করেন। কিন্তু আমরা তার কত ভাগই বা ব্যবহার করতে পারি। তাই একজন মানুষ এক সাথে অনেক কিছু সফলতার সাথে করতে পারলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কারণ আমরা আমাদের মেধার ৫০০ নিউরণের এক ভাগও ভাল করে ব্যবহার করতে পারি না।

 

#স্বদেশ- আপনাকে তো গানের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালিখি করতেও দেখা যায়! এ বিষয়ে কিছু বলুন।

 

*রাকিব- আসলে লেখালিখি করার অভ্যাসটা আমার ছোটকাল থেকে। ছোটকালে গল্প-ছড়া লিখলতাম। এছাড়া আমার লেখা কিছু অপ্রকাশিত উপন্যাসও রয়েছে যা আজও প্রকাশ করেনি। তবে ভবিষ্যতে প্রকাশ করার পরিকল্পনা রয়েছে। আর বর্তমানে বাংলাদেশের জাতীয় পত্রিকা “দৈনিক আমাদের কন্ঠ” এ নিয়মিত সম্পাদকীয় লিখছি। তাছাড়া অতীতে ভৈরবের দুইটি সাপ্তাহিক পত্রিকা সাপ্তাহিক গৃহকোণ (বর্তমানে দৈনিক) এবং সাপ্তাহিক মফস্বলচিত্র পত্রিকায় লিখালিখি করেছি। এছাড়া একাধিক জাতীয় অনলাইন ও দৈনিকেও অতীতে লেখালিখি করেছি। আর নিয়মিত গানও লিখছি সেই কিশোর বয়স থেকে যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

 

#স্বদেশ- আপনি তো বাংলাদেশের পাশাপাশি কলকাতা ও মোম্বাইয়ের আর্টিস্টদের সাথে কাজ করছেন। এটার বর্তমান খবর বলুন?

 

*রাকিব- মুম্বাইতে আমার নিয়মিত কাজ হচ্ছে। আর বাংলাদেশেও নিয়মিত কাজ চলছে। তবে কলকাতার সাথে কাজ আপতত বন্ধ রয়েছে। তবে আগামী বছর থেকে আমার পুরোদমে আমার আরএম মিউজিক ফ্যাক্টরির চারটি শাখায় নিয়মিত কাজ চলবে। আপাতত মুম্বাই আর ভৈরব শাখায় মিউজিক প্রজেক্ট এর কাজ চলছে।

 

#স্বদেশ- আমরা শুনেছি আপনি মিডিয়াতে মিডিয়ার প্রকাশ্যের চেয়ে মিডিয়ার আড়ালে অনেক বেশি আলোচিত এবং মিডিয়ার অনেকের কাছে শোনা যায় আপনি পর্দার আড়াল থেকে অনেক বড় বড় লিংক মেইনটেইন করেন। এ তথ্য কতটুকু সত্য?

 

* রাকিব- এটা কতটুকু সত্য সেটা আপনারা যাদের কাছ থেকে শুনেছেন তাদের কাছে জিজ্ঞাসা করেই জানতে পারেন। তবে এটা ঠিক আমার মিডিয়ার লিংকটা খুব স্ট্রং, কিন্তু আমি সেগুলো আমার অলসতার জন্য আর আমার ব্যাক্তিত্ব বজায় রাখার জন্য ব্যবহারের প্রয়োজন মনে করিনা। কারণ আল্লাহ আমাকে মিডিয়াতে অনেক সুযোগ দিয়ে রেখেছেন, যেটা অনেকে বলে আমার মত অল্প বয়সে এই মিডিয়াতে কেউই অর্জন করতে পারেননি। তবে  আমার যত লিংক ও লবিং থাকুক না কেন আমি নিজের কাজের উপর নির্ভরশীল। আপনার নিজের কোন অর্জন না থাকলে আপনার যত লিংক, লবিং, টাকা থাকুক না কেন কোন লাভ নাই।

 

#স্বদেশ- আপনি বাংলাদেশের গর্ব, সাথে ভৈরবেরও গর্ব, ভৈরবের কৃতী সন্তান হিসেবে স্থানীয় ভৈরব থেকে কোন সংবর্ধনা পেয়েছেন কি? জাতীয় পর্যায়ে কোন পুরস্কার পেয়েছেন কি?

 

*রাকিব- হুম। ভৈরব থেকে ২০১২সালে নিবেদিতা নাট্যঙ্গান সংগঠন থেকে আমাকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ভাইয়ের কাছ থেকে আমি সংবর্ধনা পুরস্কার গ্রহণ করি। আর ২০১৫ সালে জাতীয় পর্যায়ে “শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক” হিসেবে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক এর হাত থেকে ‘কাগজ-কলম বিজনেস এওয়ার্ড” লাভ করি।

 

স্বদেশ- এতক্ষণ সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে স্বদেশনিউজ এ’র পক্ষ থেকে ধন্যবাদ। আপনার সবার্ঙ্গিক সাফল্য কামনা করছি।

 

* রাকিব- আপনাকেও ধন্যবাদ। স্বদেশ’কেও ধন্যবাদ।

২০১৫ সালে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী মোজাম্মেল হক এর কাছ থেকে শ্রেষ্ঠ সংগীত পরিচালক হিসেবে পুরস্কার গ্রহন করছেন ভৈরবের কৃতিসন্তান রাকিব মোসাব্বির।

 

Please Share This Post in Your Social Media

More News Of This Category
© All rights reserved © 2020 SwadeshNews24
Site Customized By NewsTech.Com