আরজে রাফি , নিউজ ডেস্কঃ ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ ও টনি লুইস নাম অনেকের না জানা থাকলেও ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতির সাথে মোটামুটি সবাই পরিচিত। ক্রিকেট ভক্তদের কাছে এই পদ্ধতি কখনও আসে আশীর্বাদ হয়ে, আবার কখনও অভিশাপ হয়ে। বৃষ্টি আইনের সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য কিন্তু দুর্বোধ্য আইনটির প্রবক্তা ফ্রাঙ্ক ডাকওয়ার্থ ও টনি লুইস। তারাই জানালেন তাদের বানানো পদ্ধতির সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। যার ফলেই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে খেলতে পেরেছে।
২০১৭ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে মাত্র ১৮২ রানে থেমে যায় বাংলাদেশ। জবাবে ১৬ ওভারে এক উইকেটে ৮৩ রান তুলে ফেলে অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচের এ অবস্থায় বৃষ্টি শুরু হলে খেলা থেমে যায়। পরবর্তীতে বৃষ্টি আর না থামায় ম্যাচটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়। প্রথম পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) কোনও টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে উঠে যায় মাশরাফি-সাকিবরা।
ক্রিকেট বিষয়ক ওয়েবসাইট ইএসপিএন ক্রিকইনফোতে লেখা এক কলামে ডাকওয়ার্থ ও লুইস নিজেদের বানানো পদ্ধতির ভুল প্রয়োগের কথা উল্লেখ করে বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়ার ম্যাচকে উদাহরণ হিসেবে টেনেছেন। কলামে বলছেন, ‘সেদিন (বাংলাদেশ-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ) কাগজে-কলমে জয়ী হয়েছিল অস্ট্রেলিয়া। সেক্ষেত্রে সেমিফাইনালে ভারতের প্রতিপক্ষ বাংলাদেশ নয়, অস্ট্রেলিয়ার ওঠার কথা। বাংলাদেরেশর সেমি ফাইনালে ওঠা একটা হিসেবের ভুল।’
ওয়ানডে ক্রিকেটের ক্ষেত্রে ফল পেতে হলে দুই দলকে কমপক্ষে ২০ ওভার ব্যাট করতে হবে। অস্ট্রেলিয়া সে ম্যাচে মাত্র ১৬ ওভার ব্যাট করেছে। তবুও ডাকওয়ার্থ ও লুইসের দাবি সেদিন প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী অস্ট্রেলিয়াকেই জয়ী ঘোষণা করা যেত।
সেদিন রাত ৮টার সময় খেলা থামিয়ে দিয়ে রাত সাড়ে ৮টায় খেলা শুরু করার কথা ছিল। তবে সাত ওভার কেটে রাখা হবে অস্ট্রেলিয়ার ইনিংস থেকে। এতে ৪৩ ওভারে অস্ট্রেলিয়ার নতুন লক্ষ্য হতো ১৬৬। কিন্তু সাড়ে ৮টায় আবার বৃষ্টি নামায় খেলা আর শুরু করা যায়নি। ফলে বৃষ্টির জন্য যখন এক ওভার করে খেলা কমে আসছিল অস্ট্রেলিয়ার জন্য লক্ষ্যটাও কমে আসছিল ধীরে ধীরে। অর্থাৎ নির্ধারিত কাট অফ সময় ৯টা ৫৯ মিনিটের আগে খেলা শুরু হলে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্যটা কমে আসত অনেক। কিন্তু খেলা কাট অফের আগে শুরু করা সম্ভব না হওয়ায় ম্যাচ বাতিল করেছেন দুই আম্পায়ার।
এ প্রসঙ্গে দুই ইংলিশ ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ ডাকওয়ার্থ ও লুইস বলেন, ‘বৃষ্টির জন্য লক্ষ্য পরিবর্তিত হচ্ছিল প্রতি ওভারে। ম্যাচটা যদি ৩০ ওভারে নেমে আসত তখন অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য দাঁড়াত ১২০। সেটা ২২ ওভারে নেমে এলে অস্ট্রেলিয়ার লক্ষ্য হতো ৭৯। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া ইতিমধ্যে সে লক্ষ্য পার করে ফেলেছিল। ম্যাচটা ২২ ওভারে নেমে আসার যে সময়, সেটা কাট অফের আগেই ছিল। অর্থাৎ রাত ৯টা ৫১ মিনিটের সময় দুই আম্পায়ার যদি বৃষ্টির খোঁজ না নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার পরিবর্তিত লক্ষ্যের হিসেব নিতেন, তাহলেই অস্ট্রেলিয়া বিজয়ী হয়ে যেত।’