রায়হান কবির, স্বদেশ নিউজ২৪.কম: পাকিস্তানের দীর্ঘদিনের মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কে ব্যাপক টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের অভিযোগ অর্থ নেয়ার পরও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে তেমন সক্রিয় নয় পাকিস্তান। এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতেই মূলত ইসলামাবাদ-ওয়াশিংটন সম্পর্কে চির ধরে। তবে পরিস্থিতি খারাপ হওয়া শুরু হয় মূলত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর।
বছরের প্রথম টুইটে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন, পাকিস্তান মিথ্যা বলছে ও যুক্তরাষ্ট্রকে ধোঁকা দিচ্ছে। এমনকি পাকিস্তান সন্ত্রাসীদের লালন করছে বলেও অভিযোগ করেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
অবশ্য পাকিস্তানও এর কড়া জবাব দিয়েছে। তারা বলছে, সব অর্থ যথাযথ জায়গায় ব্যয় হয়েছে। আর ‘যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে হেরেছে’ তাই ট্রাম্প এমন তেঁতো কথা বলছেন। এদিকে সম্পর্ক এতোটাই তিক্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, গেলো বছরের আগস্ট থেকে ইসলামাবাদের জন্য নির্ধারিত একটি অর্থ সহায়তা ঝুলিয়ে রেখেছে ওয়াশিংটন। তারা ইসলামাবাদকে ২৫ কোটি ৫০ ডলার অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দেয়ার চিন্তা করছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ইসলামাবাদের বিরুদ্ধে মোটেই সন্তুষ্ট নয় ওয়াশিংটন। ট্রাম্প তার টুইটে লিখেন, গেলো ১৫ বছর আমরা বোকার মতো পাকিস্তানকে ৩৩০০ কোটি ডলার অর্থ সহায়তা দিয়েছি। আমাদের নেতাদের বোকা বানিয়েছে তারা। পাকিস্তান আমাদের মিথ্যা ও প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই দেয়নি।তিনি আরো বলেন, আফগানিস্তানে যে জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আমরা অভিযান করি তাদেরকেই পাকিস্তান আশ্রয় দিচ্ছে। আর না! পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, ওয়াশিংটনকে ইতোমধ্যেই বলে দিয়েছি আমরা আর তোমাদের সঙ্গে নেই। তাই প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘আর না’ খুব একটা মানে রাখে না।তিনি আরো বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া সব অর্থ সহায়তার বিস্তারিত জানাতে প্রস্তুত।এদিকে ইসলামাবাদে মার্কিন দূতকে ডেভিড হেলকে ডেকে পাঠিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। অন্যদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খুররাম দস্তগীর খান এক টুইটে লিখেন, যুক্তরাষ্ট্র পাকিস্তানকে হামলা ও অবিশ্বাস ছাড়া আর কিছুই দেয়নি।এর আগেও প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসীদের লালনের অভিযোগ তুলেছিলেন। তবে এবার পরিস্থিতি যেদিক গড়াচ্ছে মনে হচ্ছে দেড় দশকেরও বেশি সময়ের এই সম্পর্কে ছেদ পড়তে পারে।