মুম্বইয়ের আয়কর বিভাগ শাহরুখ খানের আলীবাগের বাংলোয় রেজিস্ট্রিভুক্ত ‘দেজা ভ্যু’ ফার্মস প্রাইভেট লিমিটেডকে প্রাথমিকভাবে ৯০ দিনের জন্য ক্রোক করেছে। এর আগে গত ডিসেম্বরেই ‘প্রহিবিশন অফ বেনামি প্রপার্টি ট্রানজাকশনস অ্যাক্ট’ (পিবিপিটি)-এর আওতায় এই ফার্মটিকে ক্রোক করার নির্দেশ জারি করেছিল আয়কর বিভাগ। মুম্বইয়ে আয়কর বিভাগের আধিকারিকেরা জানিয়েছেন, এই বেনামি আইনের ২৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী তারা যদি বুঝতে পারেন, কোনও ব্যক্তি বা উপভোক্তা এই বেনামি সম্পত্তির আইন ভঙ্গ করেছেন, তাহলে তারা ৯০ দিনের জন্য সেই সম্পত্তি ক্রোক করার নির্দেশ দিতে পারেন। আলীবাগে শাহরুখের এই বাংলোর আনুমানিক মূল্য ১৪ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আলীবাগের সমুদ্রতটে ১৯ হাজার ৯৬০ বর্গমিটারের এই বাংলোয় রয়েছে সুইমিং পুল, বিচ আর হেলিপ্যাড। ২৪শে জানুয়ারি শাহরুখের অফিস ‘রেড চিলিজ এন্টারটেইনমেন্ট’ এবং ‘কলকাতা নাইট রাইডার্স’-এর চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসারকে ই-মেইল পাঠানোর পরেও তিনি কোনো উত্তর না দেওয়ায় শাহরুখের আলীবাগ বাংলো ক্রোক করার এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। আয়কর বিভাগের অফিসাররা বুঝতে পেরেছিলেন, ‘দেজা ভ্যু’ ফার্ম হাউসের নাম করে ফার্মিংয়ের কার্যকারিতার আড়ালে আসলে আলীবাগের কৃষিজমিকে শাহরুখ এভাবেই নিজের বিলাসী প্রমোদকাননে
পর্যবসিত করেছেন। ২০০৪ সালে এই জমি কেনার সময় প্রথম ট্রান্সফার সার্টিফিকেটে শেয়ার হোল্ডার হিসেবে শাহরুখ এবং গৌরী খানের নাম ছিল। এর পর প্রথম ডিরেক্টরের জায়গায় অন্য তিনজন ডিরেক্টর আসেন। তারা হলেন- রমেশ ছিব্বা, সরিতা ছিব্বা এবং রাজারাম আজগাঁওনকর। সেই সময়ই শাহরুখ ‘দেজা ভ্যু’ ফার্মকে ৮ কোটি ৪৫ লাখ টাকা বন্ধকহীন ঋণ দেন। ২০০৪ সালে ওই কৃষিজমি কেনার সময় আজগাঁওনকরকে কৃষক হিসেবে দেখানো হয়েছিল। শর্ত হিসেবে বলা হয়েছিল আগামী তিন বছরের মধ্যে ওই জমিকে চাষের জন্য ব্যবহার করার কাজ শুরু করতে হবে। এর পর ২০১১ সালে আজগাঁওনকরের জায়গায় ‘দেজা ভ্যু’র ডিরেক্টর হন নমিতা ছিব্বা। আয়কর বিভাগের অফিসারেরা অনুসন্ধান করে বুঝতে পেরেছেন, কৃষিকাজের জন্য এই জমি ব্যবহার করে লাভ করার বদলে ‘দেজা ভ্যু’ শাহরুখের টাকায় শুধু জমি কিনেছে। রমেশ, সবিতা এবং নমিতা ছিব্বারা আসলে হলেন যথাক্রমে শাহরুখের শ্বশুর, শাশুড়ি ও শ্যালিকা। আর শাহরুখের ‘দেজা ভ্যু’-এর একমাত্র আয় হলো সেই শাহরুখেরই দেওয়া ঋণের টাকা।