রাজধানীর ঢাকা ক্লাবে আনুষ্ঠানিকভাবে অপারেটরগুলো ফোর-জির লাইসেন্স বুঝে পাবে। এর পরপরই চালু হবে ফোর-জি নেটওর্য়াক। কিন্তু, এই সেবা কতজন পাবেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা-কল্পনা। আর এ কারণে আলোচনায় উঠে এসেছে হ্যান্ডসেটের ধারণা ক্ষমতা।
প্রশ্ন এসেছে, আপনার স্মার্টফোন আছে। কিন্তু, সেটি কি ফোর-জি নেটওয়ার্ক ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন? আইটি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি ফোনটি এফডিডি-এলটিই ৯০০ বা ১৮০০ বা ২১০০ মেগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি সমর্থন করে, তবেই কেবল ফোর-জি ব্যবহার করা যাবে।
যদি বিষয়টি এমন হয়, হ্যান্ডসেটের ফ্রিকোয়েন্সি ক্ষমতা ঠিক আছে, কিন্তু ফোর-জি চলছে না। সেটা কেন? এক কথায়, স্মার্টফোনটি ফোর-জি সমর্থিত করে তৈরি করা হয়নি।
অন্যদিকে ফোর-জি সিম নিয়েছেন, হ্যান্ডসেটও ফোর-জি সমর্থিত। তারপরও পাচ্ছে না ফোর-জি সেবা। সেক্ষেত্রে কি করবেন?
জানা গেছে, ফোর-জি নেটওয়ার্কের মাঝে বেশ কিছু ধরণ ও সংস্করণে পার্থক্য রয়েছে। আর এর ফলে হ্যান্ডসেট ফোর-জি সমর্থিত হলেও, অনেক ক্ষেত্রে ফোর-জি ব্যবহার সহজ হবে না।
বাংলাদেশে ৯০০, ১৮০০ ও ২১০০ মেগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সিতেই ফোর-জি সেবা দেবে অপারেটররা। এ কারণে শুধুমাত্র এসব মেগাহার্টজ ফ্রিকোয়েন্সি সমর্থিত হ্যান্ডসেট গ্রাহকরাই ফোর-জি সেবা নিতে পারবেন। আর এই তিনটি ফ্রিকোয়েন্সি ও ব্যান্ড ইউরোপে বহুল প্রচলিত।
ফলে ইউরোপীয় সংস্করণের ফোনগুলোতে ফোর-জি ব্যবহার করা যাবে। তবে চীনা সংস্করণগুলো এফডিডিএলটিই সমর্থন না করায় তাতে ফোর-জি চলবে না। আবার আমেরিকা থেকে আসা ফোনগুলোর মাঝে সবগুলো সংস্করণ ফোর-জি সেবা দিতে পারবে না।
তবে যারা বাংলাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে আমদানি করা ফোর-জি সমর্থিত স্মার্টফোন কিনেছেন, তাদের চিন্তার কিছু নেই। এসব ফোনে সরাসরি ফোর-জি কাজ করবে।
এর বাইরে ফোর-জি নিয়ে আইফোন গ্রাহকদের জন্য দুঃসংবাদ রয়েছে। ফোর-জি সুবিধা সহসাই মিলছে না তাদের। বাংলাদেশের কান্ট্রিকোডে আইফোনের ফোর-জি সেবা সংক্রান্ত কারিগরি সীমাবদ্ধতা কাটিয়ে না উঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে আইফোন ব্যবহারকারীদের।
আইফোন কর্তৃপক্ষ মোবাইল ফোন অপারেটরগুলোকে জানিয়েছে, এজন্য এক থেকে দেড় মাস বা তারও বেশি সময় লাগতে পারে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশে এখন যে সব মোবাইল ফোন ব্যবহার হচ্ছে, তার মাত্র ১০ থেকে ১৫ ভাগ ফোর-জি সমর্থিত। অর্থ্যাৎ ৮৫ থেকে ৯০ ভাগ মোবাইল গ্রাহক ফোর-জি সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন অনেকটা সময়।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন ইমপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমপিআইএ) জানায়, দেশে বর্তমানে প্রায় সাড়ে ৩ কোটি গ্রাহক স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন। এর মধ্যে মাত্র ১০ ভাগ ফোন ফোর-জির ফ্রিকোয়েন্সি ধারণ সক্ষম।
তবে মোবাইল ফোনসেট আমদানিকারকরা জানিয়েছেন, বাজারে এখন ১০ হাজার টাকার ওপরে যেসব স্মার্টফোন পাওয়া যাচ্ছে, সেগুলোর সবই ফোর-জি সমর্থিত। তারা বলছেন, সব মিলে এখন ৪৫ লাখের মতো মানুষের কাছে ফোর-জি সমর্থিত স্মার্টফোন রয়েছে।
দেশে গ্রামীণফোনের সাড়ে ৬ কোটি,রবির ৪ কোটি ২০ লাখ,বাংলালিংকের ৩ কোটি ২০ লাখ এবং টেলিটকের ৪৪ লাখ গ্রাহক রয়েছে।
এদিকে গ্রামীণফোন জানিয়েছে, তাদের ১৪ শতাংশ গ্রাহকের হাতে ফোর-জি হ্যান্ডসেট রয়েছে। যদিও তারা এরইমধ্যে ১ কোটি গ্রাহককে ফোর-জি সিম দিয়েছে।