সরকার খালেদা জিয়ার ওপর সর্বোচ্চ জুলুম করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একমাত্র রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হিসেবে, সরকারের সকল অপকর্ম, দুর্নীতি ও দুঃশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী কণ্ঠস্বরের মুখ বন্ধ করতেই সম্পূর্ণ প্রতিহিংসাবশত খালেদার জামিন অধিকারসহ সব অধিকার কেড়ে নিয়ে তিলে তিলে কষ্ট দিচ্ছে।
৭৩ বছর বয়স্ক নেত্রীর এখন প্রকৃত শারীরিক অবস্থা কেমন সেটিও আমরা জানতে পারছি না এবং তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকদেরকে সুচিকিৎসা দিতেও বাধাগ্রস্ত করা হচ্ছে। মামলায় জামিন পাওয়া মানুষের অধিকার। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে হাইকোর্ট জামিন দিয়েছেন, সরকার প্রধানের নির্দেশে সে জামিন স্থগিত করা মানবধিকারের চরম লঙ্ঘন।
বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সরকার খালেদা জিয়ার মুক্তি নিয়ে যে টালবাহানা চলছে তা জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্রোধ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। সরকারকে বলতে চাই-অবিলম্বে দেশনেত্রীর কারামুক্তি নিয়ে নিষ্ঠুর ষড়যন্ত্র বন্ধ করুন, আর যদি না করেন তাহলে কেউ হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না। দেশবাসী তার নিঃশর্ত মুক্তি চায়।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ভোটারবিহীন সরকারের সীমাহীন লুটপাট আর দুর্নীতিতে আর্থিক খাত ধ্বংস হয়েছে, রাজকোষ কেলেঙ্কারিসহ সমস্ত ব্যাংক লুট করে ফোকলা করে দেয়া হয়েছে, ব্যাংকে স্বাভাবিক লেনদেনেও বর্তমানে প্রভাব পড়ছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ কমতে কমতে এখন সর্ব নিম্ন পর্যায়ে, বিদেশি রেমিটেন্সে ধস নেমেছে, দুঃশাসনের কবলে পড়ে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগে স্থবিরতা বিরাজ করছে, রফতানি আয় কমছে ব্যাপক হারে, উন্নয়নের নামে দেশজুড়ে হরিলুট চলছে, সারাদেশের সড়ক-মহাসড়ক, ব্রিজ-কালভার্টের বেহাল দশা, খুলনা-যশোর মহাসড়কের খানাখন্দ বেহাল দশা সংস্কার দাবিতে আজও ১৫ জেলায় পরিবহন ধর্মঘট চলছে, ঢাকা-চট্রগ্রাম, ঢাকা-উত্তরাঞ্চল সড়কে যানজটে পড়ে মানুষের দুর্ভোগের সীমা নেই।
তিনি গ্লোবাল কম্পেটিটিভ ইনডেক্সের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, এশিয়ার মধ্যে নেপালের পরেই সবচেয়ে খারাপ রাস্তা বাংলাদেশে। অন্যান্য দেশের তুলনায় দ্বিগুণ –তিনগুণ অর্থ ব্যয়ে রাস্তা নির্মাণ করা হলেও কয়েক বছরের মাথায় ভয়াবহ দুর্গতি হচ্ছে রাস্তাগুলোর। দ্রুত পুনঃর্নিমাণ করার প্রয়োজন পড়ছে। অর্থাৎ আবারো নতুন বাজেট, নতুন লেনদেন, নতুন ভাগ-বাটোয়ারা, নতুন চুরির সুযোগ করে দেয়া হয়। তারপরও জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়ার সরকারি ঘোষণা শুধুই চাপাবাজী ছাড়া আর কিছুই না।