দেখতে দেখতে কেটে গেল ২১টি বছর। ১৯৯৭ সালের ১৩ এপ্রিল মালয়েশিয়ার রাজধানী কুয়ালামপুরের কিলাত কেলাব মাঠে কেনিয়াকে হারিয়ে আইসিসির সহযোগীদের চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল বাংলাদেশ। কোয়ার্টার ফাইনালে হল্যান্ড, সেমির যুদ্ধে স্কটল্যান্ড আর ফাইনালে কেনিয়াকে হারিয়ে বিশ্বকাপে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।
এক বলে এক রান দরকার , থমথমে পিনপতন নিরাবতা চারপাশে ঠিক এমন অবস্থায় মিডিয়াম পেসার হাসিবুল হোসেন শান্তর প্যাডে লেগে আসা লেগ বাই থেকে জয় সূচক রান পায় বাংলাদেশ। এদিনে মরিস ওদুম্বে, স্টিভ টিকোলো, টমাস ওদেয়োর কেনিয়াকে দুই উইকেটে হারিয়ে আইসিসি ট্রফি জিতেছিল আকরাম-বুলবুল-নান্নুদের বাংলাদেশ।
সেই অবিস্মরণীয় জয়ের মুহূর্তটি মুহূর্তের মধ্যে রেডিও মাধ্যমে ছড়িয়ে যায় সারা বাংলাদেশে। টেকনাফ থেকে তেতুলিয়া, রূপসা থেকে পাথুরিয়া- সারা বাংলাদেশ মেতে ওঠে অবিস্মরণীয় জয়ের খুশিতে। স্বপ্নের বিশ্বকাপ, বাস্তব হয়ে দেখা দেয়। আইসিসি ট্রফি হাতে আকরাম খানের হাসি মুখ হয়ে যায় বাংলাদেশের ক্রিকেটের বড় বিজ্ঞাপন। আকরাম, বুলবুল, নান্নু, দুর্জয়, সুজন, পাইলট, রফিক, শান্ত, সাইফুল, মনি, আতাহাররা বনে যান জাতীয় বীর। আজকের বাংলাদেশের ক্রিকেট যে জায়গায় দাঁড়িয়ে তার মজবুত ভীত ও রূপকার ওই সব ক্রিকেটবীররা।
আইসিসি ট্রফি শুরুর কয়েক মাস আগে বিশ্ব ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা থেকে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল ১৯৯৭ এর আইসিসি ট্রফির চ্যাম্পিয়ন, রানার্স আপ ও তৃতীয় হওয়া দল খেলবে ১৯৯৯ এর বিশ্বকাপ।
কারো কারো ধারণা ১৯৯৭ সালের ১৩ এপ্রিলই বুঝি প্রথমবারের মত বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত হয়েছিল বাংলাদেশের। আসলে তা নয়, সেবার আইসিসি ট্রফির তিন শীর্ষ দল পেয়েছিল বিশ্বকাপ খেলার টিকিট। সেই আলোকে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে সেমির যুদ্ধে জেতার পরপরই আসলে বিশ্বকাপ নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল বাংলাদেশের। সেটা ছিল ১৯৯৭ সালের ৯ এপ্রিল। বিশ্বকাপে খেলার ছাড়পত্র মিললেও ২১ বছর আগে আজকের দিনে বাংলাদেশ হয়েছিল আইসিসি ট্রফির চ্যাম্পিয়ন।
যে কেনিয়ানদের কাছে ৯৪ সালে স্বপ্ন ভঙ্গের বেদনায় নীল হয়েছিল টাইগাররা, কাকতালীয় ভাবে সেই দলকে হারিয়েই অবশেষে আইসিসি ট্রফির সেরা দলের খাতায় নাম লেখায় আকরাম বাহিনী।