যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের নতুন পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে ইরান। দেশটির প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, বর্তমান চুক্তি পরিবর্তনের কোনো অধিকার নেই পশ্চিমাদের। তবে নতুন চুক্তির আগ পর্যন্ত পুরাতন চুক্তি থেকে বের না হয়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। আর ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, বর্তমান চুক্তি নিয়ে পুনরায় আলোচনায় আগ্রহী নয় যুক্তরাষ্ট্র।তিন দিনের রাষ্ট্রীয় সফরের অংশ হিসেবে বুধবার মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ অধিবেশনে ভাষণ দেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। বক্তব্যে যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্সের মধ্যে গড়ে ওঠা সম্পর্কের প্রশংসা করলেও মার্কিন জাতীয়তাবাদ নীতির সমালোচনা করেন ম্যাক্রোঁ। বলেন, এ ধরনের নীতি বিশ্ব শান্তির জন্য চরম হুমকি। নতুন চুক্তি না হওয়া পর্যন্ত ইরানের সঙ্গে বর্তমান পরমাণু চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বের হয়ে যাওয়া উচিত হবে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, ইরান নিয়ে আমাদের উদ্দেশ্যে খুবই পরিষ্কার। আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে তারা পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে পারবে না। কিন্তু এই নীতি মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নয়। আমরা প্রতিটি রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, স্থিতিশীলতা, সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে চাই। এমনকি ইরানেরও। বর্তমান পরমাণু চুক্তি অনেকের দ্বিমত থাকতে পারে। কিন্তু নতুন কোনো নির্ভরযোগ্য ভিত্তি ছাড়া এটা আমরা বাতিল করতে পারি না।
ট্রাম্প প্রশাসন বলছে, তেহরানের বর্তমান চুক্তি নিয়ে পুনরায় আলোচনা নয় বরং নতুন একটি চুক্তির বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র।
যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্রিস্টোফার এ. ফোর্ড বলেন, ইরানের চুক্তি নিয়ে আলোচনা করা আমাদের লক্ষ্য নয়। আমরা আরো সুন্দর এবং গ্রহণযোগ্য একটি চুক্তি করতে চাই। মিত্রদের নিয়ে আমরা যদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষম হই, তবেই আমাদের প্রেসিডেন্ট পরমাণু চুক্তি বাতিল করবেন।ডোনাল্ড ট্রাম্পের তীব্র সমালোচনা করে ইরানি প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, বর্তমান পরমাণু চুক্তি থেকে এক বিন্দুও সরবে না তেহরান।
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, একজন ভবনের ঠিকাদার, যিনি শুধু টাওয়ার নির্মাণ করেন, আর ব্যবসা করেন। তিনি কিভাবে আন্তর্জাতিক বিষয়ে নাক গলান। আন্তর্জাতিক চুক্তি এবং আইন বিষয়ে কোনো ধারণাই নেই তার।
ইরানের পরমাণু কর্মসূচি সীমিত করতে ২০১৫ সালে তেহরানের সঙ্গে একটি চুক্তি সই করে ছয় জাতিগোষ্ঠী। কিন্তু প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতা নেয়ার পর থেকেই ত্রুটিপূর্ণ আখ্যা দিয়ে তা বাতিলের দাবি জানিয়ে আসছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। গেল ১২ই জানুয়ারি ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ১২০ দিনের জন্য স্থগিত করলেও এই সময়ের মধ্যে মার্কিন কংগ্রেস ও ইউরোপকে তার দাবি মানার আহ্বান জানান। অন্যথায় আগামী ১২ই মে পরমাণু চুক্তি থেকে বের হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি ইরানের ওপর নতুন অবরোধ আরোপের হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প।