বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সী তরুণ-তরুণীদের ৭৩ দশমিক ৭১ শতাংশ সাইবার অপরাধের ঝুঁকিতে রয়েছে। এর মধ্যে মেয়ে বা নারীদের ৫১ দশমিক ১৩ শতাংশ এবং ছেলেদের ৪৮ দশমিক ৭ শতাংশ এই ঝুঁকিতে রয়েছে।
২০ মে, রবিবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক গোলটেবিল আলোচনায় ‘সাইবার ক্রাইম অ্যাওয়ারনেস ফাউন্ডেশন’ এক গবেষণা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
সাইবার অপরাধের শিকার এমন ১৩৩ জনের সাক্ষাৎকার নিয়ে এ প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। ফাউন্ডেশনের আহ্বায়ক কাজী মুস্তাফিজ প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১৮ বছরের কম বয়সী ১০ দশমিক ৫২ শতাংশ, ৩০ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে ১২ দশমিক ৭৭ শতাংশ এবং ৪৫ বছরের বেশি বয়সী তিন শতাংশ নারী-পুরুষ সাইবার অপরাধের ঝুঁকিতে রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রতিকারের উপায় নিয়ে স্বচ্ছ ধারণার অভাব এবং লোকলজ্জা ও ভয়ভীতির কারণে সাইবার অপরাধ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যেতে পারে। অ্যাকাউন্ট জাল ও হ্যাক করে তথ্য চুরির মাধ্যমে অনলাইনে সবচেয়ে বেশি অনিরাপদ বাংলাদেশের নারীরা।
অনলাইনে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ভুয়া অ্যাকাউন্টে অপপ্রচারের শিকার হন গড়ে ১৪ দশমিক ২৯ শতাংশ নারী। একই ধরনের অপরাধের শিকার হন ১২ দশমিক ৭৮ শতাংশ পুরুষ। অবশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আইডি হ্যাকিং ও তথ্য চুরির শিকারের দিক থেকে পুরুষ ভুক্তভোগীর সংখ্যা দ্বিগুণের চেয়ে বেশি।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, হয়রানির শিকার হলেও ভুক্তভোগীদের ৩০ শতাংশই এর বিরুদ্ধে কীভাবে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হয়, সে বিষয়ে জানেন না। বাকিদের মধ্যে ২৫ শতাংশ লাভ হবে না ভেবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে অভিযোগ করেন না।
জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ২১ শতাংশের মধ্যে সাত শতাংশ ভুক্তভোগী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে নালিশ করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। আর ২৩ শতাংশ আইনি ব্যবস্থা নিয়ে উল্টো হয়রানির ভয়ে পুরো বিষয়টিই চেপে যান।
অন্যদিকে সামাজিক ভাবমর্যাদা রক্ষায় পুরো বিষয়টি গোপন রাখেন ১৭ শতাংশ। আর প্রভাবশালীদের ভয়ে নিশ্চুপ থাকে ৫ শতাংশ ভুক্তভোগী।
আইসিটি মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব আবুল মনসুর মোহাম্মদ শরফুদ্দিন গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।
ওই সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক রাশেদা রওনক খান, ফাউন্ডেশনের উপদেষ্টা একেএম নজরুল হায়দার, সহ-প্রতিষ্ঠাতা ইমদাদুল হক, তানজিয়া খানম প্রমুখ।