ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে ছাত্ররা কী করেছে সে বিষয়ে জানা নেই বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল।
৩ জুলাই, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে দি খ্রিস্টান কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লিমিটেড ঢাকা’র ৩৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
আন্দোলনকারীদের ওপরে হামলা যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ইউনিভার্সিটির ভেতরে পুলিশ কখনো ঢোকে না। যে পর্যন্ত ইউনিভার্সিটি তাদেরকে না ডাকে। ছাত্ররা কী করেছে সেটা আমাদের জানা নেই। যদি কোনো ছাত্র ইয়ে হয়েছে, যদি সেটা বিচার দেয়, তখন আমরা দেখব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট ঘোষণা দিয়েছেন যে, কোটা নিয়ে আন্দোলনের কোনো প্রয়োজন নাই। তারপরে আমাদের কিছু জটিলতা আছে, সেগুলো নিরসনের জন্য আমাদের ক্যাবিনেট সেক্রেটারি ও অন্যরা কাজ করছে। এই কমিটির মাধ্যমেই এই কোটা কীভাবে হবে, সেগুলো নির্ধারণ করা হবে।’
বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে প্রচলিত ব্যবস্থায় ৫৬ শতাংশ আসনে কোটায় নিয়োগ দেওয়া হয়ে থাকে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ রয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কোটা। ১০ শতাংশ নারীদের জন্য, জেলাভিত্তিক ১০ শতাংশ, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জন্য ৫ শতাংশ ও প্রতিবন্ধীদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে ১ শতাংশ কোটা।
এ কোটাব্যবস্থার সংস্কার দাবিতে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের একপর্যায়ে ৮ এপ্রিল ঢাকার শাহবাগে আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়ে মারলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে পরিস্থিতি শান্ত করতে ১১ এপ্রিল জাতীয় সংসদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা বাতিলের ঘোষণা দেন।
২৭ জুন, বুধবার জাতীয় সংসদে কোটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কিছু বক্তব্য নতুন করে সংশয়ের জন্ম দিয়েছে বলে দাবি আন্দোলনকারীদের। ওই দিন বিরোধী দলের নেতা রওশন এরশাদ সংসদে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বহাল রাখার দাবি করলে এ বক্তব্যের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
শেখ হাসিনা সংসদে বলেন, ‘আমি বলে দিয়েছি, থাকবে (কোটা) না। সেই থাকবে নাকে কীভাবে কার্যকর করা যায়, সে জন্য ক্যাবিনেট সেক্রেটারিকে দিয়ে একটি কমিটি করে দেওয়া হয়েছে, যাতে এটা বাস্তবায়ন করা যায়। তবে আমি ধন্যবাদ জানাই মাননীয় বিরোধীদলীয় নেতাকে যে তিনি বলেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের কোটা থাকতে হবে। অবশ্যই মুক্তিযোদ্ধাদের জন্যই তো আজকে দেশ স্বাধীন।’