চলতি হজ মৌসুমে হজ পালনে সৌদি আরবে পৌঁছানোর পর দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছেন বাংলাদেশি হজযাত্রীরা। অভিযোগ উঠেছে, কয়েকটি এজেন্সির অনিয়মের কারণে কালিমা লাগছে পুরো অর্জনে। অনিয়মের অভিযোগে এরই মধ্যে চার এজেন্সিকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এর মধ্যে ৩০০ হজযাত্রীর পাসপোর্টের পেছনে মোয়াল্লেম ও বাড়িভাড়ার তথ্যসংবলিত কোনো স্টিকার ছিল না, যা নিয়ে কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ।
কয়েকটি হজ এজেন্সির উদাসীনতা ও গাফিলতির কারণে এই পরিস্থিতির শিকার হয়েছেন হজযাত্রীরা।
এদিকে, স্টিকারবিহীন পাসপোর্টধারী অধিকাংশ বয়স্ক হজযাত্রী জেদ্দা আন্তর্জাতিক হজ টার্মিনালে গিয়ে ইমিগ্রেশন বিভাগে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা আটকে থাকতে হয়েছে। এতে সৌদি হজ মন্ত্রণালয় ও মদিনায় আদিল্লা অফিস কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে মক্কার বাংলাদেশ হজ মিশনকে।
গত ২১ জুলাই ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব (হজ) এস এম মনিরুজ্জামান অভিযুক্ত চারটি হজ এজেন্সিকে সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছেন।
পরিচালক হজ মো. সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন, হজের পরে এসব দায়ী হজ এজেন্সির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত হজ এজেন্সিগুলো হচ্ছে রাজশাহীর মেসার্স আকবর ওভারসিজ, রাজধানীর মোবাস্বেরা ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস, ক্যাসক্যাড ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরস ও আল সেকেন্দার অ্যান্ড ট্রাভেলস।
জানা গেছে, ক্যাসক্যাড ট্রাভেলস তাদের হজযাত্রী তোজাম্মেল হক ও তাঁর স্ত্রী শেফালীকে দুটি ভিন্ন বাড়িতে রেখেছে।
এ ছাড়া আরো তিনটি হজ এজেন্সি স্টিকারবিহীন পাসপোর্টের মাধ্যমে হজযাত্রীদের সৌদি আরবে নিয়ে গেছে। ওই সব এজেন্সির হজযাত্রীরাও চরম হয়রানি ও ভোগান্তির কবলে পড়েছেন।
হজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) মহাসচিব এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম রাতে এ বিষয়টি স্বীকার করেছেন। এ ব্যাপারে রাতেই হাবের পক্ষ থেকে সকল হজ এজেন্সিকে সতর্কমূলক নোটিশ পাঠানো হয়েছে।
সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বলা হয়, মক্কা-মদিনায় ভাড়া করা বাড়ির ঠিকানা ও মোয়াল্লেম নম্বরসংবলিত স্টিকার পাসপোর্টে সংযুক্ত করে হজযাত্রীদের পাঠাতে হবে। বারবার এ ব্যাপারে এজেন্সিগুলোকে দিকনির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত হজ এজেন্সিগুলো এসব নির্দেশনা প্রতিপালন না করে হজযাত্রীদের পাঠানোতে সৌদি কর্তৃপক্ষও হতবাক।
গতকাল পর্যন্ত প্রায় ৮০ হাজার হজযাত্রীর ভিসা সম্পন্ন হয়েছে। গত বুধবার সকাল পর্যন্ত ৫০ হাজার ১০৬ হজযাত্রী সৌদি আরবের মক্কা ও মদিনায় পৌঁছেছেন।
এদিকে, হজ করতে গিয়ে মক্কায় এখন পর্যন্ত তিন বাংলাদেশি হজযাত্রী মারা গেছেন।