মেক্সিকোর এক দম্পতি হুয়ান কার্লোস এন এবং প্যাট্রিসিয়া এন। তারা নিজেদের পোষা প্রার্ণীর খাবার যোগাড় করতে আশ্রয় নে এক নৃশংস পন্থার। তারা কমপক্ষে ২০ জন নারীকে প্রলুব্ধ করে তাদেরকে হত্যা করেছে। এখানেই থেমে যায় নি। ওই মৃতদেহকে কেটে কেটে টুকরো টুকরো করেছে। তারপর তা পরিবেশন করেছে পোষা প্রাণির সামনে। এ অভিযোগে মেক্সিকো পুলিশ তাদেরকে গ্রেপ্তার করেছে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ওয়াশিংটন পোস্ট।অভিযোগ আছে, হুয়ান কার্লোস এন এবং প্যাট্রিসিয়া এনের বাড়ি মেক্সিকো সিটিতে। নারীদেরকে তারা প্রলুব্ধ করতো কাপড় বিক্রি করার জন্য। ফাঁদে পড়ে নারীরা যখন তাদের বাড়ি যেতেন তখন তাদেরকে হত্যা করা হতো। এরপর টুকরো টুকরো করে পরিবেশন করা হতো পোষা প্রাণিদের সামনে। এ অভিযোগে বৃহস্পতিবার তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় তারা বাচ্চাদের একটি ব্যাগ ঠেলে ঠেলে নিচ্ছিল। আর তার মধ্যে ছিল মানুষের মৃতদেহের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। সম্প্রতি দুই মাস বয়সী একটি মেয়ে সহ একজন নারী নিখোঁজ হন। এ ছাড়া আরও দু’জন নারী নিখোঁজ হন। এর সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে গোয়েন্দারা তাদের ওপর জাল বিছিয়ে দেন। তাতেই ধরা পড়েন তারা। পুলিশ মনে করে, তারা যে ব্যাগটি ঠেলে ঠেলে নিচ্ছিলেন তার ভিতরে থাকতে পারে ওই দুই মাস বয়সী শিশুটির মৃতদেহ। কিন্তু তার ভিতর পাওয়া যায় মানুষের দেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে ওই দম্পতি স্বীকার করেছে যে, তারা ওই শিশুটিকে ১৫০০০ পেসো বা ৬০০ পাউন্ডের বিনিময়ে বিক্রি করে দিয়েছে। পরে পুলিশ ওই শিশুটিকে খুঁজে বের করেছে এবং তাকে তার দাদি বা নানীর কাছে ফিরিয়ে দিয়েছে। মেক্সিকোর এটর্নি জেনারেল অ্যালেজানদ্রো গোমেজ বলেছেন, ওই দম্পতি ব্যাগে করে মৃতদেহের অবশিষ্টাংশ পাশের ময়লা ফেলার স্থানে নিয়ে যাচ্ছিল ফেলে দিতে। সেই ময়লা ফেলার স্থান থেকে পুলিশ আরো শরীরের অবশিষ্টাংশ উদ্ধার করেছে। এর মধ্যে কিছুটা রাখা হয়েছিল প্লাস্টিকের বালতিতে। এর মুখ ঢেকে দেয়া হয়েছিল সিমেন্ট দিয়ে। অন্য দেহাবশেষ পাওয়া যায় ফ্রিজে। তবে কি কারণে, ওই দম্পতি নারীদের এভাবে হত্যা করতো তা পরিষ্কার জানা যায় নি।
মেক্সিকোর পত্রিকা এল ইউনিভার্সাল জানিয়েছে, ওই দম্পতিকে ১০টি হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু হুয়ান কার্লোস এন রোববার আদালতে বলেছে, তারা ১০ জন নয়, হত্যা করেছে ২০ জনকে। তারপর ওইসব মানুষের হাড় ব্যবহার করে তারা সার বানিয়েছে। আর শরীরের মাংস ব্যবহার করে পোষা প্রাণির খাবার বানিয়েছে। হত্যা করার আগে এসব নারীর অনেককে যৌন হয়রান করা হয়েছে। নারীদেরকে নিজেদের বাড়িতে আনার জন্য নানাভাবে প্রলুব্ধ করতো প্যাট্রিসিয়া।
উল্লেখ্য, সাম্প্রতিক সময়ে মেক্সিকোতে সহিংসতা বৃদ্ধি পেয়েছে দ্রুতগতিতে। এ সময়ে হাজার হাজার নারী নিখোঁজ হয়েছেন অথবা তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, ২০১৫ সালে কমপক্ষে ২৫৮৫ জন নারীকে হত্যা করা হয়েছে। আগের বছরের তুলনায় এ সংখ্যা ১৭৫৫ বেশি। সবচেয়ে বেশি এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন মেক্সিকো সিটির নারী।