নারায়ণগঞ্জে জাতীয় পার্টির সমাবেশে অংশ নিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির নেতারা। এমনকি জাপার সংসদ সদস্য সেলিম ওসমানের জন্য ভোট চেয়েছেন তারা। এনিয়ে জেলাজুড়ে তোলপাড় চলছে। শুক্রবার বিকালে বন্দরের ময়মনসিংহপট্টিতে সদর-বন্দরের এমপি (জাপা সমর্থিত) সেলিম ওসমানের আয়োজনে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে জাতীয় পার্টি ও অঙ্গসংগঠনের শ’ শ’ নেতাকর্মীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির অন্যতম শরিক দল আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। সেখানে মঞ্চে উপস্থিত হন, বন্দর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি আতাউর রহমান মুকুল, নারায়ণগঞ্জ মহানগর বিএনপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও নাসিক’র ১২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর শওকত হাশেম শকু, মহানগর বিএনপি’র দপ্তর সম্পাদক ও নাসিক’র ২১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হান্নান সরকার, বিএনপি নেতা ও নাসিক’র ২২ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সুলতান আহমেদ ভূঁইয়া, ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম নবী মুরাদ, গোগনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নওশেদ আলী। বিএনপি’র এই নেতারা জাতীয় পার্টি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে একই সুরে সেলিম ওসমানের প্রশংসা করে বক্তব্য রাখেন। এ সময় তারা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সেলিম ওসমানের জন্য জনগণের কাছে ভোট প্রার্থনা করেন।
মতবিনিময় সভায় বিএনপি’র জনপ্রতিনিধিরা বলেন, সেলিম ওসমান একজন জনপ্রিয় সংসদ সদস্য। তিনি নিজ অর্থায়নে সদর-বন্দরের অনেক উন্নতি করেছেন।
এমন একজন নেতাই মানুষ চায়। তাই আপনারা আগামী সংসদ নির্বাচনে সেলিম ওসমানকে ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করবেন। সেলিম ওসমান এমপি হলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। এদিকে জাতীয় পার্টির এমপি’র মঞ্চে উপস্থিত হয়ে তার পক্ষে ভোট প্রার্থনা করায় চরম ক্ষোভ ও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে বিএনপি’র নেতাকর্মীদের মধ্যে।
এদিকে সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, ‘শুক্রবার নারায়ণগঞ্জের বন্দরে জাতীয় পার্টির সভাতে যেসব আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী স্টেজে উঠে বক্তব্য দিয়েছেন, সেলিম ওসমানের জন্য ভোট চেয়েছেন তাদের আমি ধিক্কার জানাই। জেলা আওয়ামী লীগের সদস্যও সেখানে ছিল। আমি জানি না তারা দলকে এবং নেত্রীকে কেমন ভালোবাসে। কী কারণে সেখানে যাবেন? যদি নেত্রী (শেখ হাসিনা) তাকে এই আসনে মনোনয়ন দেন তাহলে দলের স্বার্থে আমরা সবাই তার পক্ষে থাকবো। কিন্তু দলের নির্দেশ ছাড়া আমরা তার পক্ষে থাকতে পারি না, ভোট চাইতে পারি না। এতো সুবিধাবাদী হলে তো চলবে না।’ শনিবার দুপুরে নগরীর দুই নং রেলগেটে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনার দল আওয়ামী লীগ আজকে ক্ষমতায় আছে বলেই ব্যাপক উন্নয়ন হচ্ছে, কাজ হচ্ছে।
আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারছি- এটাই আমাদের জন্য বিশাল পাওয়া। আগের নেতাদের চাল-চুলোর খবর ছিল? না আদর্শের পথে চলেছে। কিন্তু আজকে আমরা চিন্তা করি, আমার পকেটে কয় টাকা গেলো? এভাবে চলতে থাকলে এ দলের অস্তিত্ব থাকবে না। দল ক্ষমতায় না এলে কী হবে- তা ভাবতেও পারবেন না। তাই দল ক্ষমতায় আসতেই হবে। আমাদের সততার উপর নির্ভর করছে আওয়ামী লীগে মানুষ ভোট দেবে কি দেবে না।’ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাইয়ের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরো উপস্থিত ছিলেন, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদের সদস্য এডভোকেট আনিসুর রহমান দিপু, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবুল কাদির, আরজু রহমান ভূঁইয়া, আসাদুজ্জামান আসাদ, মিজানুর রহমান বাচ্চু, যুগ্ম সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।