কট্টোর রক্ষণশীল সৌদি আরবে নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারীদের মুক্তি মিলছে না। আটকের পর দীর্ঘ সময় কেটে যাবার পরেও তাদেরকে থাকতে হচ্ছে কারাগারে। আটকদের বেশিরভাগই নারীদের গাড়ি চালানোর স্বাধীনতা ও পুরুষতান্ত্রিক প্রথার অবসান চেয়ে আন্দোলন করেছিলেন। আল-জাজিরার খবরে বলা হয়, সৌদি আরবে নারীদের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়ার পূর্বে অবশ্যই তার কোনো পুরুষ অভিভাবকের অনুমোদন নিতে হয়। প্রাচীন এ প্রথার বিরুদ্ধে নব্বইয়ের দশক থেকেই ছোট ছোট আন্দোলন চলে আসছে। তবে সেসব কট্টোরভাবে দমন করে সৌদি রাজপরিবার। ১৯৯০ সালে ৪০ জনেরও অধিক নারী রাজধানী রিয়াদে গাড়ি চালিয়ে এ আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। বর্তমানে সৌদি সরকার নারীদের গাড়ী চালানোর অনুমতি দিয়েছে।তবে আন্দোলনের সময় আটকদের মুক্তি মিলছে না। আন্দোলনকারীরা একইসঙ্গে পুরুষ অভিবাবক প্রথার অবসান চান। সাম্প্রতিক কালে অধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম অবস্থান নেয় সৌদি সরকার। নিজেদের কর্মকান্ডকে ন্যায্যতা প্রদানের লক্ষ্যে, আটককারীদেরকে সৌদি আরবের নিরাপত্তার জন্য হুমকি ও বিদেশী শত্রুর এজেন্ট হিসেবে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। তাদেরকে ২০ বছর পর্যন্ত কারাদণফ দেয়া হয়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এর প্রতিবাদ জানিয়ে বলেছে, নারীদের চুপ রাখতে ও অধিকার আন্দোলন থেকে তাদের দূরে রাখতেই সৌদি সরকার নারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও অনেক রাষ্ট্র ইতিমধ্যে সৌদি সরকারকে আটক অধিকারকর্মীদের মুক্তি দেয়ার আহবান জানিয়েছে। কিন্তু এতে অবস্থানের নরচর হয়নি দেশটির। গত সপ্তাহে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আটক নারীদের ওপর তীব্র যৌন নিগ্রহ চালানো হয়। একইসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাদের উপর নেমে আসে ভয়াবহ নির্যাতন। লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত ধাহবান কারাগারের বন্দী নারীদের তীব্র ইলেক্ট্রিক শক ও পেটানো হয়। সেখান থেকে মুক্তির পর অনেকেই দাঁড়ানো বা হাটার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছেন। অত্যাচারের পর সিলিং-এ ঝুলিয়ে হত্যা ও মুখোশ পরে কর্মকর্তারা বন্দী নারীদের যৌন নির্যাতন করে বলেও অভিযোগ এনেছে অ্যামনেস্টি।