নওগাঁ শহরের পাটালির মোড় এলাকায় নিজ কর্মস্থলেই ধর্ষণের শিকার খাতিজা (৩০) আক্তার নামে এক নারী বিষপানে আত্মহত্যা করেছেন।
অভিযোগ উঠেছে গেল ১৮ জানুয়ারি হেলাল আহম্মেদ লিটন নামের এক চিকিৎসক তার চেম্বারের ভেতরে ওই নারীকে ধর্ষণ করেন।
এই নির্যাতন সহ্য করতে না পেয়ে গেল ২০ জানুয়ারি বিকেলে খাতিজা বিষপান করেন। পরে পরিবারের সদস্যরা বিষয়টি টের পেয়ে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে এদিন রাতেই তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গেল ২২ জানুয়ারি তিনি মৃত্যুবরণ করেন।
খাতিজা শহরতলীর আরজী নওগাঁ মদ্যপাড়ার রাজমিস্ত্রি জাহাঙ্গীর আলমের স্ত্রী।
এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত চিকিৎসক হেলাল আহম্মেদ লিটনকে মামলার পর গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বাড়ি নড়াইল জেলার নড়াগাতী থানার কলা বাড়িয়া শিবপুর গ্রামে। তার বাবার নাম নজরুল ইসলাম সরদার।
নওগাঁ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাই জানান, পাঁচ বছর আগে শহরের পাটালীর মোড়ে জনৈক শাহিন হোসেনের বাসার দুটি রুম ভাড়া নিয়ে সেখানে পাইলস্ কিউর সেন্টার খোলেন ডা: হেলাল আহম্মেদ(ডিপিএইচ,মেডিশিন/ ডিএমএফ, ঢাকা)। সেই সেন্টারে ঘটনার তিন সপ্তাহ আগে আয়া কাম চেম্বার সহকারী হিসেবে চাকরি নেন এক সন্তানের জননী খাতিজা আক্তার। গেল ১৮ জানুয়ারি বিকেল পাঁচটার দিকে ডাক্তার হেলাল আহম্মেদ তার চেম্বারের ভেতরে খাতিজাকে ধর্ষণ করে।
খাতিজার জা আয়েশা সিদ্দিকা জানান, ঘটনার পর থেকেই প্রাণচঞ্চল খাতিজা নীরব হয়ে যান। অনেক চাপাচাপির পর তিনি জানান ডা: হেলাল আহম্মেদ তাকে ধর্ষণ করেছে। এই ঘটনার পর থেকে খাতিজা স্বামী-সন্তানের সঙ্গেও কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন। এরপর ২০ জানুয়ারি বিকেলে তিনি বিষপান করেন। পরে ২২ জানুয়ারি রাতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এই ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর পুলিশ খাতিজার বাবাকে বাদী করে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে একটি মামলা করে। এই মামলায় গতকাল শুক্রবার ভোরে চিকিৎসক হেলাল আহম্মেদ লিটনকে তার পাটালীর মোড়ের চেম্বার থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
ওসি আবদুল হাই জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে খাতিজাকে ধর্ষণের বিষয়টি স্বীকার করেছে হেলাল আহম্মেদ। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।