কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তেঁতুলের প্রলোভন দেখিয়ে তাওহীদা ইসলাম ইলমা নামের নয় বছর বয়সী এক শিশু শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় উত্তেজিত জনতা ধর্ষকের বাড়িঘর + আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। উপজেলার শ্রীপুর ইউনিয়নের গজারিয়া গ্রামে শনিবার এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ধর্ষক বাপ্পিসহ পাঁচজনকে আটক করেছে। নিহত শিশু ইলমা স্থানীয় গজারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গজারিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেনের কন্যা তাওহীদা ইসলাম ইলমা (৯) কে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ পাশের মরা ডাকাতিয়া নদীতে পুঁতে রাখে। পুলিশ শনিবার সকালে নিহতের লাশ উদ্ধার শেষে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
শনিবার দুপুরে সরেজমিন পরিদর্শনে গেলে নিহতের মা হাছিনা বেগম, পার্শ্ববর্তী বাড়ির আবুল খায়ের, গ্রামের নুর মোহাম্মদ, আবদুল মতিনসহ এলাকাবাসী জানান, ইলমাকে শুক্রবার বিকেলে পার্শ্ববর্তী বাড়ির জাকির হোসেনের বখাটে পুত্র মাঈন উদ্দিন বাপ্পি (২০) ও একই বাড়ির আবুল কালামের ছেলে মিজানুর রহমান (১৯) তেঁতুলের প্রলোভন দেখিয়ে বাপ্পিদের ঘরে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে প্রথমে লাশ বাপ্পির ঘরের সিলিংয়ের উপর লুকিয়ে রাখে।পরে রাতে বাড়ির পার্শ্বস্থ মরা ডাকাতিয়া নদীতে লাশটি কাঁথা মুড়িয়ে পানির নিচে ডুবিয়ে রাখে। এদিকে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ইলমাকে খুঁজে না পেয়ে তার পরিবারের পক্ষ থেকে মাইকিং ও পাশের ডাকাতিয়া নদীতে খুঁজতে থাকে। বাপ্পির গতিবিধি সন্দেহজনক হওয়ায় শনিবার সকালে এলাকাবাসী তাকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ডাকাতিয়া নদীর পানির নিচ থেকে লাশটি উদ্ধার করে। লাশটির সাথে মোড়ানো কাঁথা ও মশারি ধর্ষক বাপ্পির। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা বাপ্পির দুইটি ঘর, একটি খড়ের গাদা ও তার সহযোগী মিজানের দুইটি ঘর ভাংচুর করে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। খবর পেয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার বিপুল সংখ্যক পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
ইলমার মা হাছিনা বেগম জানান, ধর্ষক বাপ্পির বাড়িতে একটি তেঁতুল গাছ রয়েছে। ইলমা স্কুল থেকে আসা-যাওয়ার পথে প্রায়ই ধর্ষক বাপ্পি তাকে তেতুলের প্রলোভন দেখাতো। ঘটনার দিন শুক্রবার দুপুরে বাপ্পি ইলমাকে তেতুলের কথা বলেই তার ঘরে নিয়ে যায়।
শনিবার বিকেলে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মাহফুজ জানান, স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় মূল আসামি বাপ্পিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আরও চারজনকে আটক করা হয়েছে। উত্তেজিত জনতা বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ করলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।