গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার কাছে গত ১০ বছরে প্রায় ২ কোটি টাকার বিল পাওনা হয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী (ন্যাসকো) লিমিটেডের। বারবার তাগিদ নেওয়া সত্ত্বেও বকেয়া বিল পরিশোধে কোন উদ্যোগ নেয়নি পৌর কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানী (ন্যাসকো) লিমিটেড গোবিন্দগঞ্জ ডিস্টিবিউশন নির্বাহী প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গোবিন্দগঞ্জ পৌর এলাকায় বাণিজ্যিক ও আবাসিকসহ প্রায় ২৭ হাজার গ্রাহক রয়েছে।
গোবিন্দগঞ্জ পৌরসভার নামে তিনটি মিটার (হিসাব নম্বর) রয়েছে।এরমধ্যে ৮০৩ ও ৮১৮ নম্বর একাউন্টের দুটি মিটারে সড়কের বাতি ও ৯২৪/ই নম্বরের মিটারে পৌর ভবনে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে পৌর কর্তৃপক্ষ। গত ১০ বছর ধরে এ পর্যন্ত তিনটি মিটারের হিসেবের বিপরীতে পৌরসভার কাছে বিদ্যুৎ বিল বাকি রয়েছে ১ কোটি ৮৯ লাখ ৩১ হাজার ৮৮১ টাকা। এরমধ্যে ৮০৩ মিটার একাউন্ট হিসেব নম্বরে ১ কোটি ৩ লাখ ৫৩ হাজার ৮৭৪ টাকা, ৮১৮ মিটার একাউন্ট হিসেব নম্বরে ৮০ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩ টাকা এবং ৯২৪ মিটার একাউন্ট হিসেব নম্বরে ৫ লাখ ২২ হাজার ৯৩৪ টাকা বাকি পড়েছে।
ন্যাসকো লিমিটেডের গোবিন্দগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী এ.কে.এম শাহাদত হোসেন স্বদেশ নিউজ২৪ কে বলেন, ‘ইতোপূর্বে বকেয়া বিল পরিশোধে পৌর
কর্তৃপক্ষকে বলা হলেও কোন উদ্যোগ নেই। তিনি দুই মাস আগে যোগদান করে কয়েকবার বকেয়া পরিশোধে পৌর মেয়রকে তাগাদা দেন। কিন্তু তাতেও কোনো সাড়া পাওয়া যাচ্ছেনা। পৌর কর্তৃপক্ষ বকেয়া বিদ্যুৎ বিল পরিশোধে অতিমাত্রায় গড়িমসি করছেন। তবে বকেয়ার বিষয়টি ন্যাসকোর উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করা হয়েছে।
ইতোমধ্যে বকেয়া আদায়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ে সমঝোতার জন্য পত্র দেয়ার প্রক্রিয়া চলছে। তারপরেও বকেয়া বিল পরিশোধে পদক্ষেপ না নিলে উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেই বিকল্প ব্যবস্থা নেয়া হবে’।গোবিন্দগঞ্জ পৌর মেয়র মো. আতাউর রহমান সরকার বিদ্যুৎ বিল বকেয়া সম্পর্কে স্বদেশ নিউজ২৪ কে বলেন, ‘পৌরবাসীর চলাচলের সুবিধার্থে সড়কের বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুৎ ব্যবহার করে বাতি জ্বলছে। পৌর ভবণেও বিদ্যুৎ ব্যবহারসহ
সবমিলে বিল বকেয়া পড়েছে। অর্থ সংকুলান না হওয়ায় বিদ্যুৎ বিলের বকেয়া (১ কোটি ৫৫ লাখ ৬৪ হাজার ৮শ’ টাকা)। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রনালয়ে বরাদ্দ চেয়ে গত বছরের ২১ জানুয়ারী আবেদন করা হয়। কিন্তু আজ পর্যন্ত বরাদ্দ না মেলায় বিদ্যুৎ বিল বকেয়ার পরিমাণ বাড়ছে’।
তবে বিদ্যুৎ বিভাগ ন্যাসকোর দাবি করা বিল সঠিক নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘পৌরসভায় একটি মিটার ব্যবহার হলেও সড়কের বাতির জন্য অপর
দু’টি মিটার সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না। পৌর ভবণ ও সড়কে বাতি জ্বলেই এতো বিপুল পরিমাণের বকেয়ার তথ্য সঠিক নয়। এক্ষেত্রে বিদ্যুৎ ব্যবহার হিসেবে (রিডিং) না দেখে মনগড়া (ভুতুড়ে) বিল দিয়েছে ন্যাসকো কর্তৃপক্ষ। বকেয়া পরিশোধের আগে বিষয়টি নিয়ে ন্যাসকো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার কথা জানান তিনি’।
আরিফ উদ্দিন/স্বদেশ নিউজ২৪