ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি রেজিমেন্টের প্রতীক আঁকা গ্লাভস হাতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলতে নামেন মহেন্দ্র সিং ধোনি। ভারতের সাবেক অধিনায়কের কিপিং গ্লাভসে সেনা প্রতীক নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে খোদ ক্রিকেটের অভিভাবক সংস্থা- আইসিসি। তবে আইসিসি’র থোড়াই তোয়াক্কা করেন ভারতীয়রা। ধোনি জানিয়ে দিয়েছেন তিনি গ্লাভস থেকে সেনা প্রতীক সরাবেন না। দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে ম্যাচে ধোনি এমন এক গ্লাভস পরে খেলেছেন, যেখানে ভারতের প্যারামিলিটারি বাহিনীর প্রতীক আঁকা ছিল। ব্যাপারটা নজরে আসার সঙ্গে সঙ্গে ধোনিকে সেই গ্লাভস পরতে নিষেধ করেছে। তবে আইসিসি’র আদেশ মানতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড- বিসিসিআই। ভারতীয় বোর্ড জানিয়েছে, ধোনির গ্লাভসের ওই প্রতীকের সঙ্গে সেনাবাহিনীর কোনো সম্পর্ক নেই। তাই ধোনি সেই গ্লাভস পরেই খেলবেন। আর ধোনি যেন সেই গ্লাভস জোড়া পরতে পারেন, সে জন্য আইসিসি’র অনুমতিও চেয়েছে বিসিসিআই। প্রতীকটির অপর নাম ‘বলিদান ব্যাজ’। ব্যাজটি শুধু ভারতের প্যারা কমান্ডোরা ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু ধোনি সেই ব্যাজ পরে নেমেছিলেন বিশ্বকাপের ম্যাচে। মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যাওয়া রিপ্লের সেই ভিডিওটি দেখে ভারতীয়রা ধোনির প্রশংসায় পঞ্চমুখ হলেও আইসিসি’র নীতিমালার সঙ্গে সেটি ছিল সাংঘর্ষিক। এতে আইসিসি’র পোশাক এবং ক্রীড়া সামগ্রী সম্পর্কিত আইনের লঙ্ঘন হয়েছে বলেও কথা উঠেছে। ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা স্বাভাবিকভাবেই সেই গ্লাভস পরতে নিষেধ করেছে ধোনিকে। আইসিসি’র স্ট্র্যাটেজিক কমিউনিকেশনস বিভাগের মহাব্যবস্থাপক ক্লেয়ার ফারলং সংবাদমাধ্যমকে জানান, ধোনির কিপিং গ্লাভস থেকে সেনাবাহিনীর সেই প্রতীকটি সরাতে বিসিসিআইকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এদিকে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির প্রধান বিনোদ রাই এই প্রতীকের ব্যবহার করতে না পারার কোনো কারণ খুঁজে পাননি। বিনোদ রাই বলেন, ‘আইসিসি’র নিয়ম অনুযায়ী এমন কিছু পরা যাবে না যা ব্যবসায়িক, ধর্মীয় ও সেনাবিষয়ক কোনো কিছু নির্দেশ করে। আমাদের মতে ধোনির গ্লাভসে ধর্মীয় বা ব্যবসায়িক কোনো চিহ্ন ছিল না। প্যারা কমান্ডো বাহিনীর ওই প্রতীকও নয় এটা। তাই বলা যায়, ধোনি আইসিসির কোনো নিয়ম ভঙ্গ করেনি। আমরা আইসিসির কাছে অনুরোধ করেছি ধোনিকে যেন এই গ্লাভস জোড়া পরতে দেয়া হয়। অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে পরবর্তী ম্যাচের আগেই বিসিসিআইয়ের প্রধান নির্বাহী রাহুল জোহরি আইসিসি’র সঙ্গে এই ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করতে বসবেন।’ আগামীকাল আসরে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামবে ভারত। সেনাবাহিনীর সঙ্গে ধোনির সম্পর্কটা পুরনো। ২০১১ সালে সেনাবাহিনীর প্যারাস্যুট রেজিমেন্টের সম্মানসূচক লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদ পেয়েছিলেন তিনি। ২০১৫-তে প্যারা ব্রিগেডের সঙ্গে ট্রেনিংয়েও অংশ নিয়েছেন ধোনি। গত বছরের এপ্রিলে ভারতের অন্যতম রাষ্ট্রীয় পুরস্কার পদ্মভূষণ গ্রহণ করতে ধোনি রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়েছিলেন সেনাবাহিনীর পোশাক পরেই। আর গত মার্চে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের তৃতীয় ম্যাচে ভারতের সকল খেলোয়াড়কে সেনা টুপি সরবরাহ করে বির্তকে জড়ান ভারতের বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক ধোনি। পরে বিসিসিআই’র তরফ থেকে বলা হয়, কাশ্মীরের পুলাওয়ামায় গাড়িবোমা হামলায় নিহত ৪০ সেনার সম্মানে এমনটা করেন ভারত দলের ক্রিকেটাররা।