ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচে ভুটানকে হারিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের প্রস্তুতি সেরেছে বাংলাদেশ। কাতার ম্যাচের আগে এমন জয়ে মানসিকভাবে বেশ চাঙ্গা ফুটবলাররা। তবে ফুটবলারদের চেয়ে বেশি উৎফুল্ল বাংলাদেশ দলের হেড কোচ জেমি ডে। এই বৃটিশ কোচের অধীনে সবচেয়ে বেশি জয় পেয়েছে বাংলাদেশ। তার অধীনে এ পর্যন্ত ১৭ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তার মধ্যে ৮ ম্যাচেই জয় পেয়েছে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। সাত হারের বিপরীতে বাংলাদেশ ড্র করেছে দুই ম্যাচে। এর আগে বাংলাদেশ ফুটবল দল সর্বোচ্চ ছয় জয় পেয়েছিল আর্জেন্টাইন কোচ দিয়াগো আন্দ্রেস কুসিয়ানির অধীনে।
২০১৬ সালের অক্টোবরে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে ভুটানের কাছে ৩-১ গোলে হেরে নির্বাসনে যায় বাংলাদেশের ফুটবল।
প্রায় ১৮ মাস আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে দূরে ছিলেন জামাল-মামুনুলরা। লাওসের সঙ্গে ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচের মাধ্যমে ফের আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরে বাংলাদেশ। বৃটিশ কোচ আন্ডু্র অর্ডের অধীনে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরার ম্যাচটিতে ২-২ গোলে ড্র করে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। এরপরেই শুরু জাতীয় ফুটবল দলের জেমি ডে অধ্যায়। এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বে ভুটানের বিপক্ষে হেরে যে ঘোর অন্ধকার নেমে এসেছিল বাংলাদেশের ফুটবলে, হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাওয়ার যে হাপিত্যশ ছিল চারপাশে; নিশ্চিতভাবেই তার কিছুটা হলেও কমিয়েছেন জেমি। দায়িত্বে নেয়ার পরেই ফুটবলারদের মধ্যে জাগিয়ে তোলেন জয়ের ক্ষুধা। দেখিয়েছেন আশার আলো। শুরুটা হয় জাকার্তার এশিয়ান গেমসের মধ্যদিয়ে। তার অধীনেই কাতারের মতো শক্তিশালী দলকে হারিয়ে এশিয়ান গেমসের নকআউট পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। তরুণ দল নিয়ে ঢাকায় অনুষ্ঠিত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচের মধ্যে দুটিতে জয় পায় স্বাগতিকরা। যদিও নেপালের কাছে এক হারে সেমিফাইনালের স্বপ্নভঙ্গ হয় বাংলাদেশের। বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপে লাওসকে হারিয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে জামাল-সুফিলরা। বিশ্বকাপ প্রাক বাছাই পর্বে লাওসের বিপক্ষে ঢাকার মাঠে জয়ের পর ফিরতি ম্যাচে ড্র করে চূড়ান্ত পর্বে জায়গা করে নেয় বাংলাদেশ। যদিও আফগানিস্তানের সঙ্গে হার দিয়ে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের মিশন শুরু হয়েছে জামালদের। তবে সে ম্যাচে হারলেও ফুটবলারদের লড়াকু মানসিকতা বাহবা কুড়িয়েছে সকলের। জেমি ডে’র অধীনে অলিম্পিক দল ও জাতীয় দল মিলিয়ে ১৭টি আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশ নিয়েছে বাংলাদেশ। যার মধ্যে সর্বাধিক তিনটি করে ম্যাচ খেলেছে ভুটান ও লাওসের বিপক্ষে। ভুটানের বিপক্ষে খেলা তিন ম্যাচের তিনটিতে জিতেছে বাংলাদেশ। আর লাওসের বিপক্ষে দুটি জয়ের সঙ্গে অপর ম্যাচটি ড্র করেছে জেমি ডের শিষ্যরা। তার অধীনে সবচেয়ে বড় চমক ছিল এশিয়ান গেমসে কাতার বধ। এবার বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের কাতার বর্ধের অপেক্ষায় কোটি কোটি ফুটবল প্রেমীরা। আগামী ১০ই অক্টোবর ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে কাতারের বিপক্ষে হোম ম্যাচে মাঠে নামবে জেমি ডে’র শিষ্যরা।
জেমি ডে’র অধীনে বাংলাদেশ
এশিয়ান গেমস
উজবেকিস্তান ৩-০ বাংলাদেশ
থাইল্যান্ড ১-১ বাংলাদেশ
কাতার ০-১বাংলাদেশ
উত্তর কোরিয়া ৩-১ বাংলাদেশ
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ
ভুটান ০-২ বাংলাদেশ
পাকিস্তান ০-১ বাংলাদেশ
নেপাল ২-০ বাংলাদেশ
বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ
লাওস ০-১ বাংলাদেশ
ফিলিপাইন ১-০ বাংলাদেশ
ফিলিস্তিন ২-০ বাংলাদেশ
ফিফা ফ্রেন্ডলি
শ্রীলঙ্কা ০-১ বাংলাদেশ
কম্বোডিয়া ০-১ বাংলাদেশ
ভুটান ১-৪ বাংলাদেশ
ভুটান ০-২ বাংলাদেশ
বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব
বাংলাদেশ ১-০ লাওস
লাওস ০-০ বাংলাদেশ
আফগানিস্তান ১-০ বাংলাদেশ