বাংলাদেশে ১১ হাজার বিদেশি নাগরিক অবৈধভাবে রয়েছেন। সরকারি অর্থে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন, আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। গতকাল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান মন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, অনেক বিদেশি নাগরিক এ দেশের পাসপোর্ট নিয়ে আসে। পরে ভিসার মেয়াদ শেষ হলে অনেকেই যান না, থেকে যান। তারা মেয়াদোত্তীর্ণ অবস্থায় আছেন। আমাদের গত সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছিল তাদের চিহ্নিত করা। অত্যন্ত সফলতার সঙ্গে আমাদের গোয়েন্দা সংস্থা তাদের চিহ্নিত করেছে।
তিনি বলেন, এখন সমস্যা দেখা দিয়েছে, ওরা যে ফেরত যাবে তাদের কাছে টাকাও নেই। ওদের আমরা কী করব? আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি সরকারের কাছে অনুরোধ করব কিছু টাকা বরাদ্দ দেয়ার জন্য। যাতে অবৈধভাবে বসবাসকারী লোকদের তাদের দেশে ফেরত পাঠিয়ে দেয়া যায়। জেলে দিয়ে তো এরা যে টাইপের লোক ওদের সম্বন্ধে জানেন, জেলখানায় গিয়েও একটা ঝামেলা সৃষ্টি করবে। কত সংখ্যক অবৈধ বিদেশি বাংলাদেশে আছে-জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ১১ হাজারের মতো এমন বিদেশি নাগরিক আছেন। এরা কোন দেশের-এ বিষয়ে তিনি বলেন, এরা বিভিন্ন দেশের, বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলোরই বেশি; নাইজেরিয়া, তানজেনিয়া এই সব দেশেরই নাগরিক। মূলত ক্রিমিনাল টাইপের লোকই থেকে যায় জানিয়ে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী বলেন, ভালো নাগরিকরা তো থাকে না।
আমরা চিন্তা করেছি সরকারের পয়সা দিয়েই তাদের দেশে ফেরত পাঠাব। এ বিষয়ে পাশে বসা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, যারা অবৈধভাবে এখানে অবস্থান করছেন, এরা ভিসা নিয়ে ঠিকই ঢুকেছিলেন। তাদের ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে কিংবা তারা অবৈধভাবে রয়েছে কিংবা কোনো ক্রাইমে জড়িত হয়েছেন। তারাই আমাদের জেলখানায় রয়েছেন। আসাদুজ্জামান খান বলেন, জেলখানায় তাদের মেয়াদ শেষ হলেও দূতাবাসগুলোতে যোগাযোগ করার পর নিয়ে যাচ্ছে না। যারা অবৈধভাবে আছে তারা ক্রাইমের সঙ্গেও জড়িত। আবার কারাগারে রয়েছেন এমন সংখ্যাও আছে, যারা ব্যবসা-বাণিজ্য করতে এসে তারা হয়তো তাদের অজান্তেই তাদের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে এমন সংখ্যাও আছে। এসব সংখ্যা মিলে ১১ হাজার।
কতজন অবৈধ বিদেশি কারাগারে রয়েছেন এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আরেক দিন আমরা জানাব। উত্তর কোরিয়ার কোনো নাগরিক আছেন কি না-এমন প্রশ্নের জবাবে মোজাম্মেল হক বলেন, এই মুহূর্তে বলা যাবে না। আপনারা জানতে চাইলে পরবর্তীকালে মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারবে। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।