পানামার বিরুদ্ধে বড় জয়ে বিশ্বকাপের প্রস্তুতি শুরু করেছিল স্বাগতিক ব্রাজিল। বিশ্বকাপ শুরু হওয়ার মাত্র ৬ দিন আগে শুক্রবার শেষ প্রস্তুতিমূলক ম্যাচে তারা মাঠে নামে সার্বিয়ার বিপক্ষে। সাও পাওলোর এবড়োথেবড়ো মাঠে তারা প্রতিপক্ষকে ১-০ গোলে হারিয়েছে। তবে জয়টি ‘ব্রাজিলীয়’ ছিল না। সার্বিয়াকে হারাতে তাদের ঘাম ঝরাতে হয়েছে। ব্রাজিলের খেলার ছিল না তেমন কোন ছন্দ। ম্যাচের প্রথমার্ধে ব্রাজিলের খেলোয়াড়দের ভুল পাস ছিল নিয়মিত। সার্বিয়ার জমাট রক্ষণভাগে চিড় ধরাতে তাদের হিমশিম খেতে হয়। উল্টো ৯ মিনিটের মাথায় ব্রাজিল প্রায় গোল খেয়ে বসেছিল। সার্বিয়ার ফরোয়ার্ড আলেকজান্ডার কোলারোভেলের একটি শট একটুর জন্য জালের বাইরে দিয়ে চলে যায়। প্রথমার্ধে স্টেডিয়ামে উপস্থিত ৬৭.০৪২ দর্শককে হতাশা করে এবারের বিশ্বকাপ আয়োজকরা। তবে দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা ছন্দ ফিরে আসে ব্রাজিলের খেলায়। ৫৮ মিনিটের সময় অধিনায়ক থিয়াগো সিলভার পাস থেকে সুযোগ সন্ধানী ফ্রেড এগিয়ে দেন ব্রাজিলকে। ফিফা কনফেডারেশন্স কাপের পর দেশের হয়ে ফ্রেডের এটিই ছিল প্রথম গোল। তবে পরে আর কোন সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি সর্বাধিক পাঁচবারের বিশ্বকাপজয়ীরা। অবশ্য ৭৩ মিনিটে হাল্ক প্রতিপক্ষের জালে বল জড়িয়ে উল্লাস শুরু করে দিয়েছিলেন। তবে পেছনে ফিরে দেখেন, রেফারি অফসাইডের পতাকা তুলে ধরে রেখেছেন। এতে গোলটি বাতিল হয়ে যায়। অবশ্য অফসাইডের খাঁড়ায় পড়ে সার্বিয়ারও একটি গোল বাদ হয়ে যায়। ৭৩তম মিনিটে সমতা ফেরোনার দারুণ সুযোগটি হাতছাড়া হয় সার্বিয়ার। কোলারভের ক্রস থেকে জোকিচের হেড পোস্টে লেগে ফিরে আসে। পরের মিনিটে মার্কোভিচের দারুণ একটি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করেন দেন ব্রাজিলের গোলরক্ষক হুলিও সিজার। মূলত এদিন দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিলের খেলায় গতি ফিরিয়ে আনেন উইলিয়ান। দু’দিন আগে কন্যা সন্তানের জনক হওয়া অস্কারের বদলে দ্বিতীয়ার্ধে মাঠে নামেন তিনি। উইলিয়ানের দারুণ নৈপুণ্য এদিন দৃষ্টি কাড়ে দর্শকদের। ব্রাজিলের সর্বশেষ ১৬ ম্যাচে এটি ছিল ১৫তম জয়। আর স্কলারি ব্রাজিলের কোচ হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর ২২ ম্যাচে এটি ১৬তম জয়।
নিজেদের এদিনের খেলা নিয়ে সন্তুষ্ট নন ব্রাজিলের চেলসি তারকা অস্কার। তিনি নিজেদের ভুল স্বীকার করে বলেন, ‘আজকের ম্যাচটা কঠিন ছিল। সার্বিয়া খুব ভালভাবেই তাদের রক্ষণভাগ সামাল দিয়েছে। আমরা আরও অনুশীলন করব। ধীরে ধীরে আমাদের উন্নতি হচ্ছে। আশা করছি ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষে (বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ) আমরা ভালই খেলব। আজ প্রথমার্ধে কেউ কেউ ভুল পাস দিয়েছে। সাধারণত আমাদের এমন ভুল হয় না। কিন্তু আমি নিশ্চিত- ক্রোয়াশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচে সবকিছু ভালভাবেই হবে।’ ব্রাজিলের সব তারকা খেলোয়াড়রাই এদিন মাঠে নামেন। মনে করা হচ্ছে এ দলটি দিয়েই স্কলারি বিশ্বকাপের মিশন শুরু করবেন। ১২ই জুন ক্রোয়েশিয়ার বিপক্ষের ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু হবে ব্রাজিলের। ‘এ’ গ্রুপে তাদের অন্য দুই প্রতিদ্বন্দ্বী মেক্সিকো ও ক্যামেরুন।