বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দাঁত ভাঙার হুমকি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। তিনি বলেছেন, “আওয়ামী লীগের লাখ লাখ কর্মীরা আজ ঐক্যবদ্ধ। আন্দোলনের নামে নৈরাজ্যের চেষ্টা করলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা খালেদা জিয়ার বিষদাঁত ভেঙ্গে দেবে।”
আওয়ামী লীগের ৬৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার বিকেলে রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনের সামনে এক সমাবেশে তিনি এ হুশিয়ারি উচ্চারণ করেন।
তিনি বলেন, “আন্দোলন করে সরকার পতন ঘটালে কিসের আলোচনা? যারা সন্ত্রাস-নৈরাজ্য করে মানুষ হত্যা করে তাদের সঙ্গে কোনো আলোচনা নয়।”
শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেন, “শেখ হাসিনা বলেছিলেন আসুন আলোচনা করি, একটি ভালো নির্বাচন করি। তখন শেখ হাসিনার সাথে দুর্ব্যবহার করেছেন, অপমানজনক কথা বলেছেন। এখন আলোচনার কথা বলেন। আবার বিদেশিদের কাছে ধর্ণা দিচ্ছেন।”
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, “হুমকি দিচ্ছেন আন্দোলনের। আন্দোলন করে নাকী আমাদের পতন করবেন। সাড়ে ৫ বছর আমাদের পতন করতে গিয়ে আপনাদেরই পতন হয়েছে। এবার পতনের আন্দোলন করলে বিএনপি নামের কোনো দল থাকবে না। আন্দোলনের নামে সন্ত্রাস-নৈরাজ্য করার চেষ্টা করলে এবার খবর আছে।”
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশেআওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, “অনুপ্রবেশকারীরা যেন আওয়ামী লীগে ঢুকতে না পারে, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রত্যেক পাড়ায়-মহল্লায় আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে হবে। আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করতে পারলে কেউ আমাদের কিছু করতে পারবে না।”
দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন বলেন, “খালেদা জিয়া আন্দোলনের কথা বলেন। আজকের লোকসমাগম দেখে যান। রোজার পর আন্দোলন করবেন? কিসের আন্দোলন? আপনার আন্দোলন মানুষ হত্যার আন্দোলন। বাংলার মানুষ আপনাকে আর কোন আন্দোলন করতে দেবে না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছে। আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করতে রাস্তায় নামতে দেওয়া হবে না।”
সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, “আমরা ঐক্যবদ্ধ থাকলে বিএনপি-খালেদা যে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে সেই আন্দোলন করতে পারবে না।”
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও দূযোর্গ-ত্রাণ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেন, “ঈদের পরে আন্দোলন করার হুমকি দিয়েছেন খালেদা-জামায়াত। তাদেরকে বলবো দেখে যান আজকের লোকসমাগম দেখলে আন্দোলন করার কথা বলবেন না।”
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও খাদ্যমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, “আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে বার বার ষড়যন্ত্র হয়েছে। সবচেয়ে বড় ষড়যন্ত্র হয়েছে ৭৫-এ। শত ষড়যন্ত্রের মধ্যেও আওয়ামী লীগ এগিয়ে গেছে, যাবে। বাংলাদেশ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে যাবে। এখনও ষড়যন্ত্র চলছে দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিতে। বিএনপি-জামায়াত এখনও ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবেলা করবো। আওয়ামী লীগ ষড়যন্ত্রের সকল প্রাচীর ভেঙ্গে এগিয়ে গেছে। যতই নির্বাচন-সংলাপের কথা বলেন না কেন? এানুষ শস্তিতে আছে। ২০১৯ সালের আগে কোন নির্বাচন হবে না। আপনাদের সঙ্গে এখন কোন সংলাপের প্রয়োজন নেই।”
ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এম এ আজিজের সভাপতিত্বে সভা পরিচালনা করেন নগর আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আবদুল হক সবুজ।
সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন, নগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুকুল চৌধুরী, শেখ বজলুর রহমান, কামাল আহমেদ মজুমদারসহ আরো অনেকে।
সমাবেশ শেষে কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে একটি র্যা লী শাহবাগ, এলিফ্যান্ট রোড, সাইন্সল্যাব, কলাবাগান হয়ে বঙ্গবন্ধু ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
র্যালী পূর্ব সমাবেশের শুরুতে মঞ্চের সামনে অবস্থান নেওয়াকে কেন্দ্র করে উপস্থিত ছাত্রলীগ কর্মীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্দিকী নাজমুল আলমের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়।