বুধবার আসামিপক্ষের সময় আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক বাসুদেব রায় সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে আগামী ২৭ জুলাই নতুন দিন রাখেন।
পুরান ঢাকার বকশীবাজার এলাকায় আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে অবস্থিত তৃতীয় বিশেষ জজ আদালতে এদিন সাক্ষ্যগ্রহণ শুরুর কথা ছিল।
মামলার বিচারক নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জের আপিল সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে শুনানির অপেক্ষায় থাকায় আদালত সাক্ষ্য গ্রহণের এ নতুন দিন ধার্য করে।
আপিল বিভাগের শুনানি আগামী ২৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট আদালতের পেশকার আরিফুর রহমান বলেন, সরকার মামলা দুটি মাদ্রাসা মাঠে অনুষ্ঠিত হওয়ার গেজেট প্রকাশের পর সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য এ নিয়ে তিনবার তারিখ পেছাল।
সাক্ষ্য দিতে মামলা দুটির বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ ও দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) স্পেশাল পিপি মোশারফ হোসেন কাজল আদালতে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান তিনি।
এর আগে বিচারিক আদালতে মামলা দুটির অভিযোগ (চার্জ) গঠনের আদেশ বাতিল চেয়ে বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার করা রিভিশন আবেদন খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। এরপর তারা বিচারক নিয়োগের আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন করলে গত ২৫ মে হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ দ্বিধাবিভক্ত রায় দেয়।
এর আগে গত ১৯ মার্চ ঢাকার বিশেষ জজ-৩ বাসুদেব রায় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপস্থিতিতে ‘জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট’ ও ‘জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট’ দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন করেন।
ওই অভিযোগ গঠনের বৈধতার চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে এসে নিস্ফল খালেদা এরপর গত ১২ মে বিচারক বাসুদেব রায়ের নিয়োগের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে আসেন।
এতিমখানা মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়েছে খালেদা, তারেকসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে। আর দাতব্য ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সঙ্গে আসামি হিসাবে রয়েছেন আরো তিনজন।
এতিমখানা ট্রাস্ট মামলার অন্য আসামিরা হলেন- বিএনপির সাবেক সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সাবেক সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান।
এদের মধ্যে সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আছেন জামিনে। তারেক উচ্চ আদালতের জামিনে গত পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বিদেশে অবস্থান করছেন। বর্তমানে তিনিসহ বাকি দুজন পলাতক।
দাতব্য ট্রাস্ট মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও রয়েছে। খালেদাসহ বাকি দুই আসামি জামিনে রয়েছেন।
২০১১ সালের ৮ অগাস্ট জিয়া দাতব্য ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুনুর রশিদ। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়।
তেজগাঁও থানার এ মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে আসামিদের বিরুদ্ধে।
জিয়া এতিমখানা ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে। ২০১০ সালের ৫ অগাস্ট এই মামলার অভিযোগপত্র দেয়া হয়।
এতিমদের সহায়তার জন্য একটি বিদেশি ব্যাংক থেকে আসা ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৭১ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয় এ মামলায়।