সমাবেশের মতো কর্মসূচি দিয়ে ঈদের পর মাঠে নামতে চায় বিএনপি। সরকার পতনের আন্দোলন জোরদার করার লক্ষ্যে প্রাথমিকভাবে ঢাকা এবং এর আশপাশে কয়েকটি সমাবেশ করার চিন্তা আছে দলে। এসব কর্মসূচিতে বাধা এলে হরতালের মতো কঠোর কর্মসূচিতে যাওয়ার বিষয়টিও ভাবছে বিএনপি।
বিএনপির নীতি নির্ধারণী পর্যায়ের একটি সূত্র জানায়, খালেদা জিয়া ইতোমধ্যে দলের কয়েকজন নেতার সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা করেছেন। এর আগে ঢাকা মহানগর বিএনপির নতুন কমিটিও ঘোষণা করা হতে পারে। ঈদের পরপরই বিএনপির নীতি নির্ধারণী পর্ষদ স্থায়ী কমিটি ও জোটের বৈঠকে কর্মসূচি চূড়ান্ত করা হবে।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া নিজেও সে ইঙ্গিত দিয়েছেন। গত বুধবার ঢাকা মহানগর বিএনপির ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি বলেছেন, ঈদের পর তাদের আন্দোলন হবে শান্তিপূর্ণ। তাতে বাধা দেওয়া হলে পাল্টা জবাব দেওয়া হবে।
৫ জানুয়ারির নির্বাচন বর্জনের এক মাসের মাথায় গত ৪ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া বলেছিলেন, দল গুছিয়ে তাঁরা আবার আন্দোলন শুরু করবেন। পরে বিভিন্ন সময় তিনি বলেছেন, উপজেলা নির্বাচনের পর তাঁরা আবার আন্দোলন শুরু করবেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত বিএনপির সে ধরনের কোনো কর্মসূচি দিতে দেখা যায়নি। এখন প্রায় প্রতিদিন বিভিন্ন ইফতারে যোগ দিয়ে খালেদা জিয়া বলছেন, ঈদের পর তাঁরা সরকার পতনের আন্দোলন শুরু করবেন। সবাইকে রাজপথে নামারও আহ্বান জানাচ্ছেন তিনি।
বিএনপির দলীয় সূত্র জানায়, সরকার পতনের আন্দোলনের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে দলীয় নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি জনগণকেও নিজেদের দাবির প্রতি একাত্ম করতে চায় বিএনপি। এজন্য ঈদের পর সভা-সমাবেশের মতো কর্মসূচিকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। বিএনপির নেতারা মনে করছেন, আন্দোলনের বিভিন্ন পর্যায় আছে। ঈদের পর শুরু হবে আন্দোলনের প্রাথমিক পর্যায়। এ সময় হরতাল-অবরোধের মতো কঠোর কোনো কর্মসূচি দেওয়ার ইচ্ছা বিএনপির নেই। নিয়মিত সভা-সমাবেশ থাকলে কর্মীরা ঐক্যবদ্ধ ও চাঙা থাকবেন, এতে পরবর্তী ধাপের ক্ষেত্র তৈরি হবে। বিএনপি চায় অক্টোবর-নভেম্বর নাগাদ কঠোর আন্দোলন শুরু করতে। তবে এবার আগের মতো ঢাকায় সভা-সমাবেশে বাধা দেওয়া হলে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার চিন্তা আছে। সে ক্ষেত্রে হরতাল বা এর বিকল্প কী হতে পারে তা ভেবে দেখা হচ্ছে।
ঈদের পর বিএনপির আন্দোলনের কর্মসূচি কেমন হতে পারে জানতে চাইলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য রফিকুল ইসলাম মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ঈদের পর সভা-সমাবেশের মতো কর্মসূচি আসতে পারে। তবে সরকারের আচরণের ওপর পরবর্তী কর্মসূচি নির্ভর করবে।
অবশ্য এর আগেও এ ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে ব্যর্থ হয়েছে বিএনপি। নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের পর গত মে মাসে গুম-খুনের প্রতিবাদে সরব হওয়ার চেষ্টা করে বিএনপি। এ সময় ঢাকা ও এর আশপাশে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি ঘোষণা করে দলটি। তখন তাদের বেশিরভাগ কর্মসূচিতেই বাধা দেয় পুলিশ। প্রতিবাদে বিএনপি কিছু বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করে। কিন্তু সেগুলোও খুব একটা সফল হয়নি।