বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসের কোনো প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে লিবার্টি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘বাংলাদেশের সমুদ্র সীমান্তে মায়ানমার থেকে ভারত- প্রচারণা এবং বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
মেজর হাফিজ বলেন, “এদেশে এখন ভারতের দালালের সংখ্যা এতটাই বেড়ে গেছে যে, এদেশে এখন ভারতের দূতাবাস না থাকলেও চলবে।”
ভারতের সাথে সমুদ্র সীমা মামলার রায়ে ভারতের ইচ্ছারই প্রতিফলন হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।
তিনি বলেন, “এ রায়ে বাংলাদেশ সমুদ্র তার অধিকার হারিয়েছে। এ কথাটি চাপা দিয়ে সরকার সমুদ্র সীমা অর্জনকে এতো বড় করে দেখছেন যেন, এটি ১৯৭১ সালের চেয়ে বড় অর্জন।”
বাংলাদেশের সমুদ্র সীমাকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
হাফিজ বলেন, “আমাদের সম্পদ এখন অন্যেরা দখল করে নিয়ে যাচ্ছে। এ থেকে উদ্ধার হতে হলে দেশ্রপ্রেমিক, শক্তিশালী মেরুদণ্ডের সরকার থাকতে হবে।”
তিনি আরো বলেন, “মিয়ানমারের সাথে রায়েও বাংলাদেশ সুবিচার পাইনি। সাতটি গ্যাসের ব্লক হারিয়েছি আমরা। সে তুলনায় ভারতের সাথে মামলার রায় কিছুটা ভালো। কারণ আমরা ১০টি ব্লক পেয়েছি। অথচ ভারত আমাদের এই ১০টি ব্লকই দাবি করেছিল। স্থল সীমানা বিভাজন চাইলে তো পুরো বাংলাদেশকেই দাবি করবে তারা। এই হলো আমাদের প্রতিবেশি দেশের মানসিকতা।”
তিনি বলেন, “বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নীতি এখন ভারত নীতি। এটা এদেশের শিশুরাও জানে। সরকারও সে মানসিকতা লুকানোর প্রয়োজন মনে করে না।”
সরকারের সমালোচনা করে মেজর হাফিজ বলেন, “দেশে এখন এমন সরকার, যেখানে গণতন্ত্র নেই, অর্ধেকের বেশি সংসদ সদস্য নির্বাচিত নয়, যেখানে অর্ধেকের বেশি মানুষ ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত, সংসদে জনগণের প্রতিনিধি নেই, বিচার বিভাগের উপরেও পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ। এমন সরকার কিভাবে দেশকে প্রতিনিধিত্ব করবে। সরকার সমুদ্র সীমা বিজয় নামে যা করছে তা সত্যের অপলাপ।”
“ভারতের সাথে আমাদের ২৫ হাজার বর্গমাইল এলাকা বিবাদমান বলা হচ্ছে। কিন্তু এই পুরো এলাকাটাই আমাদের ছিল। আমরা সেখান থেকে প্রায় ৬ হাজার বর্গমাইল এলাকা হারিয়েছি। এ রায়ে বিজয় উদযাপনের কিছু নেই” উল্লেখ করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. এমাজউদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন সমুদ্র বিশেষজ্ঞ ক্যাপ্টেন এম রেজাউল করিম চৌধুরী, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পানি সম্পদ বিভাগের চেয়ারম্যান প্রফেসর সাব্বির মোস্তফা খান, কোস্টগার্ডের সাবেক ডিজি কমান্ডার শফিকুর রহমান।