ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের জন্য ইসরায়েলের প্রস্তুত হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেননিয়ামিন নেতানিয়াহু। আর এই মন্তব্যের পরপরই মঙ্গলবার গাজার বিভিন্ন লক্ষ্যে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী।
সোমবার গাজায় মুসলিমদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব ঈদ উল ফিতর পালিত হয়। এদিন হামলা বন্ধ রাখা হলেও দিন পার না হতেই হামলা আবার শুরু করা হয়।
মঙ্গলবার ভোররাতে গাজায় হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়ার বাড়ি লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয়। ইসরায়েলি জঙ্গি বিমান থেকে ছোঁড়া ওই ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে কেউ হতাহত না হলেও বাড়িটি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ বিষয়ে তার কাছে কোনো তথ্য নেই এবং কি হয়েছে তা খোঁজ করে দেখছেন বলে জানিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র।
গাজা সিটির বুরেইজ শরণার্থী শিবিরের একটি বাড়িতে চালানো আরেকটি হামলায় ১১ জন নিহত হন।
হামাস জানিয়েছে, তাদের পরিচালিত আল আকসা টিভি ও আল আকসা রেডিও দপ্তরেও হামলা চালানো হয়েছে। হামলার পর টেলিভিশন স্টেশনের সম্প্রচার অব্যাহত থাকলেও রেডিও সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়।
ইসরায়েলে হামাস ও এর মিত্রদের গাজা থেকে চালানো রকেট হামলা বন্ধ করার কথা বলে ৮ জুলাই গাজায় বিমান হামলা শুরু করে ইসরায়েল। পরে গাজায় হামাসের খোড়া সুড়ঙ্গ নেটওয়ার্ক ধ্বংস করার নির্দেশ দিয়ে স্থল অভিযানে নামে।
সোমবার রাতে টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু বলেন, সঙ্কটের যে কোনো ধরনের সমাধানের জন্যই ইসলামপন্থী হামাস ও তার মিত্রদের নিয়ন্ত্রিত গাজার সামরিকায়ন বন্ধ হওয়া প্রয়োজন।
তিনি বলেন, “আমরা মিশন শেষ করবো না, গাজার সুড়ঙ্গগুলো নিষ্ক্রিয় করা না পর্যন্ত আমরা অভিযান বন্ধ করবো না, আমাদের নাগরিকদের, আমাদের শিশুদের ধ্বংস করাই এসব সুড়ঙ্গ তৈরির একমাত্র উদ্দেশ্য।”
নেতানিয়াহু বলেন, “দীর্ঘমেয়াদি অভিযান চালানোর জন্য আমাদের প্রস্তুত হওয়া দরকার। আমাদের উদ্দেশ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা শক্তি প্রয়োগ করা অব্যাহত রাখবো।”
এদিকে ইসরায়েলি চ্যানেল টেন টেলিভিশন সম্প্রচারিত এক জরিপে হামাসকে “অস্ত্রমুক্ত” করা না পর্যন্ত গাজায় হামলা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ইসরায়েলি নাগরিকদের ব্যাপক সমর্থন প্রকাশ করতে দেখা গেছে।
ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত ১ হাজার ৮৭ জন গাজাবাসী নিহত হয়েছে। যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক মানুষ। অপরদিকে ইসরায়েলের ৫১ জন নিহত হয়েছে। যার মধ্যে ৪৮ জনই সেনা সদস্য।