টানা চার বছর প্রেমের নদীতে ডুবে ডুবে জল খাচ্ছিলেন তারা। একজন সংগীতের, অন্যজন অভিনয়ের। পারভেজ ও সীমানা। মানবজমিনের সঙ্গে একান্ত আলাপে পারভেজ জানান, তারা দু’জনেই বিয়ে করেছেন। মোহাম্মদপুরে সংসার সাজিয়ে সুখে শান্তিতে বসবাস করছেন। প্রাণভরা দোয়া চাইছেন সবার। তিনি জানান, ২০১০ সাল থেকে টানা চার বছর প্রেমের পর গত ৪ই জুন খুব নীরবে বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। পারভেজ বলেন, খুব স্বস্তিতে আছি। কারণ, এই প্রেম নিয়ে গেল চার বছর আমরা মিডিয়া, পরিবার এবং সামাজিকভাবে অনেক ঝড়-বৃষ্টির সম্মুখীন হয়েছি। সেই ঝড় অতিক্রম করে বিয়ের মাধ্যমে আমরা আমাদের প্রেমকে সফল পরিণতি দিয়েছি। আশা করি আমরা আমাদের ভালবাসাকে আজীবন অটুট রাখতে পারবো। এদিকে সীমানাও একই সুরে বলেন, আপাতত সুখ এটুকুই, আমরা আমাদের প্রেমের ফসল ঘরে তুলেছি। এবার সংসার জীবনটাকে আমৃত্যু এগিয়ে নিতে চাই হাতে হাত রেখে। আমাদের নতুন জীবনের জন্য দোয়া করবেন। এদিকে দুই অঙ্গনের দু’জনার সঙ্গে পরিচয়-প্রেম প্রসঙ্গে জানা যায়, ২০১০ সালে পারভেজের সঙ্গে পরিচয় হয় সীমানার। তখন ‘অতিমানব’ নামক একটি টেলিছবিতে অভিনয় করছিলেন সীমানা। একই নাটকে কণ্ঠশিল্পী পারভেজও একটি বিশেষ চরিত্রে অভিনয় করেন। মূলত সেই শুটিং ইউনিটেই দু’জনের সঙ্গে প্রথম পরিচয় এবং ভাল লাগা। এরপর পরিচয়টা ক্রমশ গড়ায় প্রেমের দিকে। উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, পারভেজ-সীমানার প্রেমের গল্প এবং বিয়ের গুঞ্জন চার বছর ধরেই মিডিয়ায় উড়ছিল। এ নিয়ে বিভিন্ন সময় সংবাদও প্রকাশ পেয়েছে। যদিও গেল সপ্তাহ পর্যন্ত এই প্রেমের গুঞ্জন কিংবা বিয়ের সংবাদকে ‘ডাহা মিথ্যা কথা’ বলে উড়িয়ে দিয়েছেন দু’জনেই! চার বছর ধরে এতটা গোপনীয়তা রক্ষা করে প্রেম করার নজির মিডিয়ায় একটিও পাওয়া যাবে না। কিন্তু কেন এমন লুকোচুরি? জবাবে পারভেজ-সীমানা দু’জনেই বলেন একই কথা। তারা বলেন, আসলে আমরা এতদিন আমাদের পরিবার থেকে বিষয়টি লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেছি। ধরুন, আমাদের যদি পরিবার-স্বজন না থাকতেন তাহলে ২০১০ সালের সেই শুটিং ইউনিটে দাঁড়িয়েই মাইকিং করে দিতাম, আমাদের একে অপরকে দারুণ ভাল লাগছে। আমরা প্রেম করবো এখন এবং অবশ্যই বিবাহ করবো! কিন্তু বিশ্বাস করুন, শুধু আমাদের দু’টি পরিবারের কথা মাথায় রেখে এই প্রেমের বিষয়টি নিয়ে এত লুকোচুরি করেছি। মিডিয়া কিংবা ক্যারিয়ারের কথা ভেবে এসব করিনি। এদিকে বিয়ের পর এ নিয়ে মিডিয়ায় মুখ খোলা প্রসঙ্গে সীমানা খানিক স্পষ্ট করেই বলেন, এখন তো আর গোপন রাখার কিছু নেই। সবাই আমাদের দাম্পত্য জীবনের জন্য দোয়া করবেন। সত্যি বলতে আমাদের প্রেম-বিয়ে নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে নানারকম ঝামেলা চলছিল। এসব ঝামেলার কারণেই মাঝে টানা ছয় মাস আমি অভিনয় থেকে দূরে ছিলাম। পারভেজও গানে মন বসাতে পারছিল না। তবে বিয়ের পর আবারও অভিনয়ে নিয়মিত হয়েছি। পারভেজও গানে সরব হয়ে উঠেছে। উল্লেখ্য, সুফি ঘরানার কণ্ঠশিল্পী পারভেজ প্রথম আলোচনায় আসেন ‘হৃদয় মিক্স’ অ্যালবামের ‘যাবি যদি’ গানটি দিয়ে। এরপর তার একক ‘পথ’ দিয়েও দারুণ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। প্রশংসা কুড়ান জয় শাহরিয়ারের সঙ্গে ‘ব্রাদারহুড’ প্রজেক্টের গান দিয়েও। মজার তথ্য হলো, প্রেমিকা সীমানাকে নিয়ে সম্প্রতি একটি গানও করেছেন পারভেজ। ‘সুপ্রিয় সীমানা’ শীর্ষক এই বিশেষ গানটি গেল ঈদে প্রকাশ পেয়েছে ‘ধুলোর গান’ শীর্ষক মিশ্র অ্যালবামে। ২০০৬ সালে লাক্স চ্যানেল আই সুপার স্টার প্রতিযোগিতার সেরা দশের একজন রিশতা লাবণী সীমানা। প্রতিযোগিতা শেষে অভিনয়ে যাত্রা শুরু ‘দারুচিনি দ্বীপ’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে। এরপর চলচ্চিত্রে না পাওয়া গেলেও অর্ধশতাধিক ধারাবাহিক আর শতাধিক খণ্ডনাটকে অভিনয় করেছেন তিনি। সু-অভিনেত্রী হিসেবে প্রশংসা কুড়িয়েছেন ডজনখানেক গ্ল্যামারাস বিজ্ঞাপনচিত্রেও। মানবজমিন পরিবারের পক্ষ থেকে অভিনন্দন নবদম্পতি পারভেজ-সীমানাকে।