ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে আবার খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে দেখা দিয়েছে গর্ত। সড়ক ও জনপদ বিভাগ যতই তৎপর হোক না কেন, মহাসড়কের এ অবস্থা পরিবর্তন হচ্ছে না কার্যত। এতে করে পণ্য ও মালামাল পরিবহন ব্যাহত হচ্ছে। যাত্রীরা নাজেহাল অবস্থার মধ্যে যাতায়াত করছেন।
ঈদের আগে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে মহাসড়কটি ঠিক রাখার চ্যালেঞ্জ দেন। ওই সময় বৃষ্টি না হওয়ায় মহাসড়কটি ঠিক থাকলেও গত কয়েক দিনের বৃষ্টিতে তা আবারও আগের অবস্থায় ফিরে যায়।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সম্প্রসারিত চার লেনের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলো একদিকে সংস্কার করলে অন্যদিকে নতুনভাবে খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থায় ইট দিয়ে গর্ত ভরাট করলেও তা টিকছে না। এদিকে মহাসড়কের সৃষ্ট গর্তের কারণে দূরপাল্লার গাড়িসহ সব ধরনের গাড়িকে ধীরে চলাচল করতে হচ্ছে। ফলে কোথাও কোথাও যানজট লেগে যাচ্ছে। ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের।
হাইওয়ে পুলিশ জানিয়েছে, এসব গর্তের ওপর চলতে গিয়ে গাড়ির এক্সেল ভেঙে যাচ্ছে। চাকা ফুটো হচ্ছে। গাড়ি নিষ্ক্রিয় হয়ে রাস্তায় দীর্ঘ সময় পড়ে থাকায় যানজট বেধে যাচ্ছে। পুলিশ যানজট নিরসন করতে হিমশিম খাচ্ছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, চট্টগ্রাম নগরের সিটি গেট থেকে বড়দারোগা হাট পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটারের মধ্যে ছলিমপুর, বাংলাবাজার, জলিল গেট, ভাটিয়ারী স্টেশন, কাশেম জুটমিল গেট, বারআউলিয়া, কুমিরা বাইপাস, ছোটকুমিরা, হাম্মাদিয়া মসজিদ, সীতাকুণ্ড, ফকিরহাট, ছোট দারোগাহাট ও বড় দারোগাহাটসহ অন্তত ৪০টি জায়গায় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া অন্তত ৩০ কিলোমিটার জায়গার ছালবাকল উঠে গেছে। এ ছাড়া মহাসড়কের সম্প্রসারিত নতুন অংশের কদমরসুল ও লালবাগ এলাকায় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
কাঁচা লোহার ব্লেডবাহী একটি লং ভেহিকেলের চালক মো. সবুজ সাংবাদিকদের জানান, মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের খানাখন্দক অংশে ভারী গাড়ি ঘণ্টায় পাঁচ কিলোমিটারের বেশি চালানো যায় না।
এ বিষয়ে কথা হয় কুমিল্লা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সার্জেন্ট জিল্লুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, তাঁর অধীন ২৬ কি.মি. সড়কের ২০ কিলোমিটারেরই ছালবাকল উঠে গেছে। এ অংশে গাড়ি নষ্ট হলে যানজট সৃষ্টি হচ্ছে, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাড়ির মালিক, পণ্যের মালিক।
সম্প্রসারিত চার লেন প্রকল্পের সীতাকুণ্ড অংশের ব্যবস্থাপক (পিএম) মাসুদ করিম মহাসড়কের বেহাল দশার জন্য বৃষ্টিকে দায়ী করেন। তিনি দাবি করে বলেন, অতিবৃষ্টির কারণে সংস্কার টিকছে না। খানাখন্দকে সওজ ও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পাঁচটি দল ইট দিয়ে গত তিন দিন যাবত্ সংস্কার করছে। তবে আগের সংস্কার এখনো টিকে আছে দাবি করে তিনি বলেন, যে অংশে সংস্কার করা হয়েছে তার পাশে তলে (সারফেস) পানি ঢুকে নতুন খানাখন্দক তৈরি হচ্ছে।